রঞ্জন কৃষ্ণ পন্ডিত, টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলের মধুপুরে টানা বৃষ্টিতে মাঠে ও বাড়িতে কৃষকের ধান নষ্ট হচ্ছে। জনজীবনে নেমে এসেছে দুর্ভোগ, সেই সঙ্গে শাক-সবজি সহ অন্যান্য ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। টানা বর্ষণের কারণে কৃষকের মুখের হাসি ম্লান হয়ে গেছে।

শহরের নিচু জায়গা ও রাস্তায় পানি জমে গেছে। সর্ব সাধারণের চলাচলসহ বিশেষ করে স্কুলগামী শিক্ষার্থী ও দিনমজুরদের মারাত্মক অসুবিধা হচ্ছে। বৃষ্টির কারণে শহরে রিক্সা, অটোরিক্সা কমে গেছে।

অনেক স্থানে ক্ষেতের ফসল পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ভারী বৃষ্টির কারণে বোরো ধানের ফলন বিপর্যয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।

মৌসুমের শুরুতে আবহাওয়া অনুকূল থাকায় ফসলের অবস্থা খুব ভালো ছিল। আগাম চাষ করা ধান পেকে গেছে। চাষীরা এ ধান কাটতেও শুরু করেছে। বাকি ধানের ৯০ ভাগে শীষ বের হয়েছে। কিন্তু বৃহস্পতিবার থেকে অবিরাম বর্ষণের সঙ্গে দমকা হাওয়ায় ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। চাষীর মুখের হাসি কেড়ে নিয়েছে সর্বনাশা বৃষ্টি। বৃষ্টির সাথে দমকা হাওয়ায় মাঠের পর মাঠের ধান গাছ মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। এসব ধানের উপর পানি জমায় ব্যাপক ফলন বিপর্যয় ঘটার শঙ্কায় প্রান্তিক চাষীরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান জানান, এ বছর উপজেলায় ১১ হাজার ৯৪৩ হেক্টর জমিতে উফসী ও স্থানীয় জাতের আমন চাষ করা হয়েছে। তার মধ্যে পানিতে ডুবে থাকায় ৫% ক্ষতির আশঙ্কা আছে এবং ৪২ হেক্টর জমিতে কলা, পেঁপে, পান বরজ ও মৌসুমী সবজি চাষ করা হয়েছে তার মধ্যে ১০ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

উপজেলার কুড়াগাছা ইউনিয়নের হাওদা বিল এলাকার তিন ভাগের দুই ভাগই পানিতে ডুবে গেছে। কুড়ালিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামেও ভারী বৃষ্টির কারনে ফসল ঘরে তুলতে পারছেন না কৃষক। অপরদিকে যারা ধান কেটে বাড়িতে এনেছেন তারা পড়েছেন চরম বিপাকে। শুকাতে না পারায় ঘরেই নষ্ট হচ্ছে ধান। খড়েও ধরেছে পচন।

কদিমহাতীল গ্রামের লোকমান মন্ডল জানান, ধান সিদ্ধ করে শুকাতে পারছি না। গৃহিনী তাহমিনা আক্তার জানান, ৪/৫ দিন ধরে ধান কাটা হয়েছে, কিন্তু বৃষ্টির কারণে সিদ্ধ ধান শুকাতে পারছি না।

চাপড়ী বাজারের ধান ব্যবসায়ী মো.আব্দুল হাই তালুকদার জানান, বৃষ্টির কারণে ধান বেচা-কেনাও করতে পারছি না।

েআরকেপি/এসপি/মে ০৩, ২০১৮)