গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : নৌরুটের যাত্রীবাহী এমভি শাথিল-১ লঞ্চডুবির চার বছর । ২০১৪ সালের এইদিন নৌ-দুর্ঘটনায় ১৬জন যাত্রীর প্রাণহানি ঘটেছিল। এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে দুর্যোগ মৌসুমে এই রুটে বড় নৌযানে যাত্রী পরিবহণের সুপারিশ করা হয়। কিন্তু আজ পর্যন্ত এই সুপারিশ বাস্তবায়ন না হওয়ায় পটুয়াখালীর উপকূলের বিভিন্ন নৌরুটে ঝুঁকি নিয়ে ছোট নৌযানে যাত্রী পরিবহণ করা হয়। 

সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ২৭ জানুয়ারি এমভি শাথিল-১ লঞ্চটি প্রথম দুর্ঘটনায় পড়ে । এরপর লঞ্চটির রুট পারমিট বাতিল করে দেওয়া হয়। কিন্তু কাগজ কলমে শাথিলের নাম পরিবর্তন করে শাতিল লিখে ৪৫ দিনের অনুমতি নিয়ে পটুয়াখালী-রাঙ্গাবালী রুটে ফের ওই বছরের ১৩ এপ্রিল চলাচল শুরু করে।

চলাচলের ২০ দিনের মাথায় অর্থাৎ ২০১৪ সালের ৩ মে রাঙ্গাবালী থেকে পটুয়াখালীর উদ্দেশ্যে যাওয়ার পথে দ্বিতীয় বারের মত গলাচিপার কলাগাছিয়া নদীতে লঞ্চটি আবারও ডুবে যায়। এতে ১৬ জন যাত্রীর প্রাণহানি ঘটেছিল। লঞ্চডুবির পরদিন ৪ মে জেলা প্রশাসক তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন।

তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, চালকের অবহেলা ও স্বেচ্ছাচারিতায় লঞ্চটি ডুবে যায়। এছাড়া পটুয়াখালীর গলাচিপা ও রাঙ্গাবালী উপজেলার বিভিন্ন রুটে ঝড়ের মৌসুমে ছোট আকারের লঞ্চ চলাচলে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। পাশাপাশি ঝড়ের মৌসুমে বড় আকারের লঞ্চ, সি-ট্রাক অথবা ওই ধরণের নিরাপদ নৌযান প্রচলনের সুপারিশ করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়, উপকূলের বিভিন্ন নৌরুটে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে খেয়া ট্রলার ও ছোট লঞ্চে যাত্রী পরিবহণ করা হচ্ছে। রাঙ্গাবালী-লালমোহন, গলাচিপা-রাঙ্গাবালী, গলাচিপা-চরমোন্তাজ, গলাচিপা-মৌডুবী, উলানিয়া-চরমোন্তাজ, গলাচিপা-নিজকাটা, গলাচাপিা-চালিতাবুনিয়া, গাইয়াপাড়া-কলাপাড়াসহ প্রায় ১০টি রুটে নৌযান চলাচল করছে। এসব রুটে ঝড়ের মৌসুমে ৬৫ ফুটের কম দীর্ঘ নৌযান চলাচলের ওপর অভ্যন্তরীণ কর্তৃপরে নিষেধজ্ঞা রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুর্যোগ মৌসুমে চলাচলকারী ওইসব নৌযান অধিকাংশ সার্টিফিকেটবিহীন। বেশির ভাগ নৌযানে রয়েছে যান্ত্রিক ত্রুটি। এছাড়া নদীপথে যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য লাইফ বয়া, ফায়ার বাকেট, অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র, বালুভর্তি বাক্স, সার্চলাইট ও বালতি এবং হস্তচালিত পানির পাম্পের ব্যবস্থা রাখা অপরিহার্য। প্রাকৃতিক দুর্যোগকালীন শত শত যাত্রী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌপথ পাড়ি দিতে হচ্ছে। ফলে আপদকালীন আবহাওয়ার মধ্যে নৌযান বিপদের মুখোমুখী পড়তে হয়।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মো: আলিমউল্লাহ জানান, দুর্যোগ মৌসুমে এই উপজেলার নদ-নদী উত্তাল থাকে। তাই এই মৌসুমে বড় নৌযানে যাতে যাত্রী পরিবহণ করা প্রয়োজন।

(এমকেআর/এসপি/মে ০৬, ২০১৮)