স্টাফ রিপোর্টার : গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন তিন মাসের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। সিটি কর্পোরেশনের অন্তর্ভুক্ত শিমুলিয়া এলাকার এক ব্যক্তির রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি জাফর আহমেদ সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

রবিবার আদালতের ওই আদেশের পর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, ‘নির্বাচন স্থগিতের বিষয়ে যৌক্তিক কারণ থাকতে পারে। আইন অনুযায়ীই আদেশ হয়েছে।’

‘আদেশের কপি পাওয়ার পর আপিলের বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নেব’ বলেও জানান রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা।

তিনি আরও বলেন, ‘২০১৩ সালে সাভারের ছয়টি মৌজাকে (শিমুলিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ বড়বাড়ী, ডোমনা, শিবরামপুর, পশ্চিম পানিশাইল, পানিশাইল ও ডোমনাগ) গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের অধীনে অন্তর্ভুক্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এরপর বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। কিন্তু তা নিষ্পত্তি না হওয়ায় পুনরায় রিট দায়ের করা হলে আদালত গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন তিন মাসের জন্য স্থগিতের আদেশ দেন।’

প্রসঙ্গত, গাজীপুর সিটির সীমানা নিয়ে ঢাকার সাভার উপজেলার শিমুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান এ বি এম আজাহারুল ইসলাম সুরুজ এ রিট আবেদন করেন।
রোববার ওই রিট আবেদনের শুনানি শেষে হাইকোর্টের বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি জাফর আহমেদ সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ তিন মাসের জন্য নির্বাচন স্থগিতের আদেশ দেন।

এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেছুর রহমান বলেন, শিমুলিয়ার ছয়টি মৌজাকে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনে অন্তর্ভুক্তির বিষয় নিয়ে এক ব্যক্তি রিট আবেদন করেন। ওই রিটে নির্বাচন স্থগিতেরও আবেদন করা হয়।

একই সঙ্গে আদালত ঢাকা জেলার অন্তর্গত মৌজাকে গাজীপুর জেলায় অন্তর্ভুক্ত করা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, নির্বাচন কমিশনারসহ নয়জনকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আগামী ১৫ মে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া কথা ছিল। নির্বাচন উপলক্ষে সেখানে প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত ছিলেন প্রার্থীরা। ওই আদেশের পর বিএনপি তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় অভিযোগ করে, নির্বাচন স্থগিতে আওয়ামী লীগের চিন্তার প্রতিফলন।

বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর বলেন, ‘এটা সরকারি দলের চিন্তা-ভাবনার প্রতিফলন। বাংলাদেশের মানুষ যখনই ভোট দিতে যাবে, তখনই নির্বাচন বন্ধ। যখনই তাদের মনে হচ্ছে নির্বাচনের গতিবিধি তাদের পক্ষে নাই তখনই ভোট ডাকাতি করতে হবে। নইলে ভোট বন্ধ করে দিতে হবে। এই দুইটা থেকে একটা।’

এক প্রশ্নের জবাবে সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, ‘দলীয়ভাবে কী করার আছে, ইলেকশন বন্ধ করে দিলে বিএনপিরই বা কী? তাদের গণতন্ত্রের প্রতি যে মনোভাব, গণতন্ত্র ও জনগণের ওপর আস্থার যে অভাব, গণতন্ত্র ও নির্বাচনের প্রতি তাদের যে মনোভাব তা প্রকাশ পাচ্ছে জনগণের কাছে।’

৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড নিয়ে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন গঠিত। এখানে ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৬৪ হাজার ৪২৫ জন।

গত ৪ মার্চ সিটি কর্পোরেশনের সীমানা নিয়ে গেজেট জারি করা হয়। সেখানে শিমুলিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ বড়বাড়ী, ডোমনা, শিবরামপুর, পশ্চিম পানিশাইল, দক্ষিণ পানিশাইল ও ডোমনাগকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

(ওএস/এসপি/মে ০৬, ২০১৮)