মাগুরা প্রতিনিধি : মাগুরায় চলতি  মৌসূমে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হলেও বৈরী আবহাওয়ার কারণে শঙ্কিত জেলার কৃষকেরা। একদিকে দফায়-দফায় ঝড়-শিলা বৃষ্টির কারণে অনিষ্ট হতে চলেছে মাঠের পাকা বোরো ধান । অন্যদিকে শ্রমিক সংকটের কারনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে জেলার কৃষকেরা। বেশি টাকা দিয়েও মিলছে না শ্রমিক। ফলে মাঠের পাকা ধান ঘরে তোলা নিয়ে চরম দুঃসময় পার করছে জেলার বোর ধান চাষিরা।

কৃষি অধিদপ্তর সুত্রে জানাযায় চলতি মৌসুমে মাগুরায় ৪৪ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধানের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে মাগুরা সদরে ২৪ হাজার ৯০০ শত হেক্টর জমিতে, শ্রীপুর উপজেলায় ১৮০০ শত হেক্টর জমিতে, শালিখা উপজেলায় ১২ হাজার ৬ শত ৫০ হেক্টর জমিতে এবং মোহাম্মদপুর উপজেলায় ৪ হাজার ৮০০ শত হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধানের চাষ হয়েছে।এর মধ্যে ৩৫ শতাংশ জমির ধান কাটা হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে এ মাসের মধ্যে শতভাগ জমির ধান কাটা হবে।

সরজমিনে জেলার বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে দেখাগেছে অধিকাংশ ক্ষেতের ধান ঝড় শীলা বৃষ্টিতে ঝরে গেছে। বৈরী আবহাওয়ার কারনে চলছে দফায়-দফায় ঝড় শীলা বৃষ্টি। অন্যদিকে দেখা দিয়েছে শ্রমিক সংকট। একজন শ্রমিককে দিনে তিনবেলা খাবারসহ সাড়ে ৭শ থেকে ৮শ টাকা দিতে হচ্ছে। আবার কোথায়ও-কোথায়ও বাড়তি টাকা দিয়েও এখন শ্রমিক মিলছে না। তাছাড়া এভাবে চড়া দামে শ্রমিক দিয়ে ধান কাটালে লোকসানের আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।

মাগুরা সদর উপজেলার মঘি গ্রামের দুলাল বলেন,এ বছরে ৮ একর জমিতে বোর ধান চাষ করেছি ফলনও আশানুরুপ। কিন্তু বৈরী আবহাওয়া ও শ্রমিক সংকটের কারনে ধান ঘরে তোলানিয়ে আমরা শঙ্কিত।
শালিখার আড়পাড়া গ্রামের কৃতান্ত বিশ^াস জানান- এ মৌসুমে ১২ একর জমিতে ধান চাষ করেছি। কিন্তু শ্রমিক সংকটের কারনে ভোগান্তী পোহাতে হচ্ছে।

শালিখা উপজেলার কৃষি অফিসার শেখ বিপুল হোসেন জানান- উপজেলায় এ মৌসুমে ১২ হাজার ৬শ ৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রীড ২৩শ হেক্টর ও উফশী ১০ হাজার ৩শ ৫ হেক্টর। ফলন খুব ভালোই ছিলো।তবে আবহাওয়ার বৈরীতার কারনে কৃষকেরা বিপাকে পড়েছে।

মাগুরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক পার্থ প্রতিম সাহা বলেন, ‘জেলার ধান পাকার আগ থেকেই কৃষকদের মাঝে জেলার কৃষি উপ-সহকারীরা নানা পরামর্শ দিয়ে আসছে। জেলার প্রায় শতভাগ জমির ধান পেকে গেছে।বরাবরের মতো এ বছরও মাগুরা বোরো আবাদ ভালো হয়েছে। তবে ঝড় শীলা বৃষ্টিতে কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্থ। সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি মাসের মধ্যেই চাষীরা সব ধান ঘরে তুলতে পারবে বলে আশা করা যায়।

(ডিসি/এসপি/মে ০৭, ২০১৮)