লাইফস্টাইল ডেস্ক : খেজুর আমাদের দেশীয় ফল না হয়েও খুব পরিচিত একটি ফল। হাজার বছরের পুরনো এই ফলটি সারা বিশ্বে ৩০ প্রজাতির পাওয়া যায়। সাধারণত তিন ধরনের খেজুর বেশি পাওয়া যায়- নরম, হালকা শুকনো ও শুকনো।

খেজুর ভিটামিন, মিনারেল, শক্তি, চিনি, ফাইবার, ক্যালসিয়াম, লৌহ, ফসফরাস, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, জিংকের সমন্বয়ে অসাধারণ একটি নিয়ামত। রমজানের ইফতারে খেজুর ছাড়া কি ইফতার সম্পন্ন হয়? আসুন জেনে নেই কিছু না জানা কথা, যে কারণে খাবেন খেজুর।

কোলেস্টেরলের পরিমান কম: খেজুরে কোলেস্টেরল থাকে না। এছাড়া এতে ফ্যাটের পরিমাণ অতি নগন্য। তাই শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

প্রোটিন সম্বৃদ্ধ ফল:

খেজুর প্রোটিনের এক অনন্য উৎস। আমাদের শরীরকে ফিট রাখার সাথে সাথে মাংসপেশীকেও শক্ত করে। যারা ব্যায়ামাগারে যাতায়াত করেন, তারাও খাদ্য তালিকায় খেজুর রাখেন। কারণ এটি শরীরকে ইনস্ট্যান্ট শক্তি যোগায়।

ভিটামিন:

ভিটামিন বি১, বি২, বি৩, বি৫, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি-তে ভরপুর ফল খেজুর। এতে রয়েছে প্রাকৃতিক সুগার (গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজ)। পর্যাপ্ত পরিমাণে পটাশিয়াম থাকায় ডায়রিয়াতে খুব ভালো কাজ করে খেজুর।

হাড় গঠন:

সেলানিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, কপার, ম্যাঙ্গানিজ- এসব উপাদান হাড়ের গঠন মজবুত করে হাড়কে সুস্থ রাখে। অস্টিওপোরোসিস নামক জটিল রোগ থেকেও রক্ষা করে।

স্নায়ুতন্ত্র ও হার্ট:

‘স্ট্রোক’ পরিচিত একটি শব্দ, যা এক ধরনের আতঙ্ক। খেজুরে পটাশিয়াম থাকায় তা নার্ভাস প্রক্রিয়াকে ঠিক রাখে, কোলেস্টেরল লেভেল কমানোর পাশাপাশি তা স্ট্রোকের ঝুঁকিও কমিয়ে দেয়। রক্ত প্রবাহের নালীতে প্লাক বা ব্লকেজ হতে না দিয়ে হার্টের স্বাস্থ্য ঠিক রাখে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

লৌহ:

কথায় বলে, ‘দাত থাকতে দাতের মর্যাদা বোঝে না’। দাতের সার্বিক গঠনে লৌহ খুবই গুরুত্ববহ, যা খেজুরে রয়েছে। যারা আয়ন স্বল্পতায় ভুগছেন, তারাও নিয়মিত খেজুর খেতে পারেন। এটি রক্ত পরিষ্কার করতেও সহায়তা করে।

হজম:

খেজুর পানিতে ভিজিয়ে রাখার পর যদি নিয়মিত খাওয়া যায়, এটা হজম শক্তিকে ত্বরান্বিত করে। যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য আছে, তাদের জন্যে খেজুর খুবই উপকারী।

ত্বক ও চুল:

ভিটামিন সি ও ডি ত্বকের ইলাস্টিসিটির ওপর কাজ করে ত্বককে মসৃন, প্রাণবন্ত ও সতেজ রাখে। তা ছাড়া খেজুর খেলে এন্টি এজিংয়ের সুবিধা প্রাকৃতিকভাবেই পাওয়া যাবে। মেলানিন নামক উপাদানকে শরীরে সমন্বিত হতে বাধা দেয়। এ ছাড়া চুল পড়া কমিয়ে দেওয়ার সাথে সাথে নতুন চুল গজাতেও সাহায্য করে। মাথার স্কাল্পে রক্তের প্রবাহ ঠিক রাখে।

ঝিমানো, মাথা ঘোরা সমস্যা দূর করতে খেজুরের জুরি মেলা ভার। এমনকি নেশার ঘোর কাটাতেও সাহায্য করে। সবচেয়ে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে, যদি খেজুরের চামড়া একটু খুঁচিয়ে সারা রাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে দিয়ে সকালবেলা তা পান করা হয়।

ওজন সমস্যা:

খেজুর ও শসা একসাথে খেলে তা দেহের স্বাভাবিক ওজনের ভারসাম্য ঠিক রাখে। অতিরিক্ত খাবার গ্রহণেও নিরুৎসাহিত করে।

রান্নাঘরে খেজুর:

খেজুর রান্না করেও খাওয়া যায়। খাবারের ডেকোরেশনেও খেজুর হাজির। বিভিন্ন ফলের জুসের (আম, তরমুজ, বেল, আপেল, আনারস, মিল্কসেক) সাথে মিশিয়ে নেওয়া যায়।

সেক্স:

প্রাচীন ভারতীয়রা বলেন যে, খেজুর খেলে ছেলেদের যৌন ক্ষমতা বেড়ে যায়।

ক্যান্সার:

খেজুর কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে।

রাতকানা রোগ:

এটি হয় মূলত ভিটামিন-এ এর অভাবে যা খেজুরে রয়েছে। তাই এই ফল রাতকানা রোগের সম্ভাবনাকে অনেকাংশে কমিয়ে দেয়।

অর্শ রোগ:

গর্ভাবস্থায় খেজুর খেলে তা এই রোগ হওয়া থেকে রক্ষা করে।

তাজা খেজুর বাতাস বন্ধ কৌটাতে করে ফ্রিজে রেখে দিলে কমপক্ষে ৬ মাস সংরক্ষণ করা যাবে। শুকনো খেজুর একই পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করা যাবে। অবশ্য সময় ১ বছর পর্যন্ত।

ডিপ ফ্রিজে রেখে দিলে তা সংরক্ষণের সময় অনেক বাড়িয়ে দেয়।

(ওএস/এসপি/মে ০৮, ২০১৮)