হবিগঞ্জ প্রতিনিধি : হবিগঞ্জে ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে সদর উপজেলার নিজামপুর ইউনিয়নে ঘর-বাড়ি, গাছপালা এবং বিদ্যুত লাইনের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শিলাবৃষ্টিতে নষ্ট হয়েছে কৃষকের পাকা ধান।

নিজামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাজ উদ্দিন আহমেদ জানান, সোমবার রাতে হঠাৎ করে প্রচন্ড ঝড় এবং শিলাবৃষ্টি শুরু হয়। এতে তার ইউনিয়নের সৈয়দপুর, মিঠাপুর, নিতাইয়ের চক, ফকিরাবাদ, মাহমুদপুর গ্রামে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ইউনিয়নের প্রায় ১৫০টি ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। মিঠাপুর গ্রামের মসজিদের চালা উড়ে গেছে। সৈয়দপুর বাজারে বিদ্যুতের খুটি ভেঙ্গে পড়ায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বিপর্যস্থ হয়েছে। কয়েকশ’ গাছপালা উপড়ে পড়েছে।

তিনি আরো জানান, শিলাবৃষ্টিতে নিজামপুর ইউনিয়নে প্রায় ১ হাজার বিঘা জমির পাকা ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

নিজামপুর ইউনিয়নে ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ক্ষয়ক্ষতির খবর জানতে পেরে হবিগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মর্জিনা বেগম এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহান জানান, স্থানীয়ভাবে যতটা ক্ষয়ক্ষতির দাবি করা হচ্ছে, বাস্তবে ততটা ক্ষতি হয়নি। প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরীর মাধ্যমে সরকারিভাবে সহযোগিতার চেষ্টা করা হবে।

হবিগঞ্জ সদর উপজেলার গোপায়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আক্তার হোসেন জানান, তার ইউনিয়নে ঝড় এবং শিলাবৃষ্টিতে আংশিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার দিনভর থেমে থেমে বৃষ্টি এবং শিলাবৃষ্টিতে জনজীবনে নেমে এসেছে দুর্ভোগ। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হবিগঞ্জ শহর ছিল বিদ্যুৎবিহীন। বৃষ্টিতে হবিগঞ্জ শহরের অধিকাংশ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। ফলে সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন। শহরের অনেক এলাকার লোকজন পানিবন্ধী অবস্থায় রয়েছেন।

স্থানীয়রা জানান, ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভাল না থাকায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন হবিগঞ্জ শহরের শ্যামলী, সিনেমাহল এলাকা, অনন্তপুর, ইনাতাবাদ, রাজনগর, শায়েস্তানগর, মুসলিম কোয়ার্টার, কলেজ কোয়ার্টার, স্টাফ কোয়ার্টার, মোহনপুরসহ পৌর এলাকার দুই-তৃতীয়াংশ আবাসিক এলাকার মানুষ।

পানিতে শহরের প্রধান সড়কের সার্কিট হাউজ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের অফিসও জলমগ্ন হয়ে পড়ে। জেলা প্রশাসকের বাসভবনও ছিল জলমগ্ন। এছাড়াও শহরের ঘাটিয়া বাজার, চৌধুরী বাজার, বগলা বাজার, নারিকেল হাটার রাস্তা খানা-খন্দ থাকায় বৃষ্টিতে সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। দুঃসহ কষ্টের ভিতর দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে জনসাধারণকে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল জানান, শহরের পুরাতন খোয়াই নদীসহ জলাশয় ভরাট এবং অপরিকল্পিত উন্নয়নের জন্য সামান্য বৃষ্টিতেই হবিগঞ্জ শহরে এই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।

(এমইউএ/এসপি/মে ০৯, ২০১৮)