স্টাফ রিপোর্টার : ছাত্রলীগের ২৯তম জাতীয় সম্মেলনস্থল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সংগঠনটির দুটি পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি হলের নেতাকর্মী ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে এ ঘটনা ঘটেছে। এ সময় সম্মেলনের মঞ্চে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগ সভাপতি ফকির রাসেলের অনুসারীদের সঙ্গে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের একটি গ্রুপের কথা কাটাকাটি হয়। পরবর্তীতে বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও কয়েকটি হলের ছাত্রলীগের নেতারা যোগ দিলে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। এ সময় বাঁশ দিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতাকর্মীদের ধাওয়া ও মারধর করা হয়।

উপস্থিত নেতাকর্মীদের চারদিকে ছোটাছুটি করতে দেখা। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পশ্চিমপাশের প্রাচীর টপকে রাস্তায় বের হয়ে আসেন আতঙ্কিতরা।

শুক্রবার বিকেল ৪টা ১৫ মিনিটে সম্মেলনস্থলে উপস্থিত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।। এ সময় তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান সংগঠনের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ। পরে শেখ হাসিনাকে ব্যাজ পরিয়ে দেন সংগঠনের সহ-সভাপতি নুসরাত জাহান নুপুর ও নিশিতা ইকবাল নদী।

পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে দুদিনব্যাপী এ সম্মেলনের উদ্বোধন করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এ ছাড়া ‘স্মৃতির পাতায় ছাত্রলীগ-২০১৫ থেকে ২০১৮’ শীর্ষক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেছেন প্রধানমন্ত্রী।

এর আগে বিকেল ৪টায় জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। পরে ছাত্রলীগের সংগঠনিক সংগীত পরিবেশন করা হয়।

এ সম্মেলনে যোগ দিতে সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সম্মেলন স্থলে আসতে শুরু করে নেতাকর্মীরা। স্লোগানে স্লোগানে মুখর করে তুলে সম্মেলন স্থল ও আশপাশের এলাকা।

‘শেখ হাসিনার জন্য বাংলাদেশ ধন্য’, ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’, ‘তুমি কে, আমি কে - বাঙালি বাঙাল’, ‘সফল হোক, সফল হোক, সম্মেলন সফল হো’, ‘কে বলেরে মুজিব নেই, মুজিব সারা বাংলায়’, ‘পদ্মা-মেঘনা-যমুনা, তোমার আমার ঠিকানা’, প্রভৃতি স্লোগান দেন তারা।

এদিকে নিরাপত্তার জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের নির্ধারিত প্রবেশ পথ দিয়ে প্রবেশ করতে হচ্ছে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর কয়েকজন সদস্য জানিয়েছেন, শীর্ষ দুটি পদে সর্বশেষ সম্মেলনে সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হলেও এবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সিলেকশনের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্ধারিত হবে। দীর্ঘদিনের অদৃশ্য সিন্ডিকেট ভাঙতে আওয়ামী লীগ প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অন্তত দুই প্রজন্ম আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত এমন পরিবারের সন্তানদের এবং বিভিন্ন সময়ে মাঠের রাজনীতিতে সক্রিয় মেধাবী ছাত্রদের হাতে এবার ছাত্রলীগের নেতৃত্ব তুলে দেবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

তারা জানান, দলের প্রতি আনুগত্যশীল, কর্মীবান্ধব, সৎ, যোগ্যও মেধাবীদের হাতে ছাত্রলীগের পরবর্তী নেতৃত্ব তুলে দিতে কাজ করছে আওয়ামী লীগ। এ লক্ষ্যে পদ প্রত্যাশীদের পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ডও দেখা হচ্ছে। আমলে নেয়া হবে গোয়েন্দা সংস্থার অনুসন্ধানও।

ছাত্রলীগের বেশ কয়েকটি সূত্রে জানা গেছে, এই সম্মেলনের মাধ্যমে ছাত্রলীগের নতুন নেতৃত্ব নির্ধারিত হবে। এবার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের জন্য ৩২১ প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। এর আগে গত মাসের শেষের দিকে ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের সম্মেলন হয়। তবে এসব ইউনিটের এখন পর্যন্ত কমিটি ঘোষণা করা হয়নি। এই সম্মেলনের পর এক সঙ্গে কেন্দ্রীয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও মহানগরের কমিটি ঘোষণা করা হবে।

(ওএস/এসপি/মে ১১, ২০১৮)