তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক : মহাকাশের ঠিকানায় পৌঁছে গেল বাংলাদেশ। শনিবার ভোররাত ২টা ১৪ মিনিটে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে উৎক্ষেপিত হয় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১। এর আধা ঘণ্টা পর এটি পৌঁছে যায় তার নিজস্ব কক্ষপথ জিওস্টেশনারি ট্রান্সফার অরবিটে।

উৎক্ষেপণের আধা ঘণ্টা পর বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর সিগন্যাল পেয়েছে বাংলাদেশ। স্যাটেলাইটির বাংলাদেশের গ্রাউন্ড স্টেশন গাজীপুর ও বেতবুনিয়ায় আর্থ স্টেশন থেকে প্রাথমিক সিগন্যাল গ্রহণ করেছে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বঙ্গবন্ধু-১ এর সিগন্যাল প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ফ্রান্সের মহাকাশ সংস্থা থ্যালেস অ্যালেনিয়া স্পেস নির্মিত ৩ দশমিক ৭০ টন ওজনের বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটটি সফলভাবে উৎক্ষিপ্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে মহাকাশ রাজত্বে অংশীদার হলো বাংলাদেশ। নিজস্ব স্যাটেলাইটের অধিকারী বিশ্বের ৫৭তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশের আত্মপ্রকাশ ঘটল।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট নিজ কক্ষপথে পরিচালিত হওয়ার পর বাংলাদেশে সম্প্রচার যোগাযোগে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। প্রত্যন্ত এলাকায় ইন্টারনেট সেবা বিস্তৃত করতে ভূমিকা রাখবে এটি।

এদিকে এই স্যাটেলাইট তৈরিতে খরচ হয়েছে ৩ হাজার ২৪৩ কোটি টাকা। সাত বছরে এই টাকার পুরো পুরোটাই উঠে আসবে বলে ধারণা করছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।

বিটিআরসির হিসাব অনুযায়ী, স্যাটেলাইট থেকে আয়ের ৭০ শতাংশ আসবে বিদেশ থেকে। বাকি মাত্র ৩০ শতাংশ আয় আসবে স্থানীয় পর্যায় থেকে।

বিটিআরসি বিদেশি আয় হিসেবে প্রতিবেশি দেশগুলোর চাহিদার কথা বললেও ভারত, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়াসহ আরও অনেক দেশের নিজস্ব স্যাটেলাইট রয়েছে। সেক্ষেত্রে এসব দেশের বাজারে প্রবেশ বিটিআরসির জন্য সহজ হবে না বলে মনে করেন তারা।একইভাবে স্থানীয় আয়ের মধ্যে ২৪টি স্যাটেলাইট টিভি থেকে বছরে আসবে অন্তত দেড় কোটি ডলার। এ পরিমান অর্থ প্রতি বছর হংকং ও সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে চলে যাচ্ছে।

নিজেদের স্যাটেলাইট চালু হলে এসব চ্যানেলের তখন বিদেশি স্যাটেলাইট ব্যবহার করতে হবে না। ফলে আয় উঠে আসতে বেশি সময় লাগবে না বলে মনে করে বিটিআরসি। বিটিআরসি বলছে, দুই বছরের মধ্যে সকল টেলিভিশন এখানে চলে আসবে। তাহলে টাকা তুলতে তাদের কোনো সমস্যা হবে না।

এ দিকে সব মিলে ৩ হাজার ২৪৩ কোটি টাকা ব্যয়েরে সংশোধিত ডিপিপি তৈরি করে বিটিআরসি পরিকল্পনা কমিশনে জমা দিয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৫৫৫ কোটি টাকা নিজেদের তহবিল থেকে এবং বাকি ১ হাজার ৬৮৮ কোটি টাকা বিদেশি সংস্থার কাছ থেকে ঋণ হিসাবে নেওয়া হবে।

(ওএস/এসপি/মে ১২, ২০১৮)