খুলনা প্রতিনিধি : খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেছেন, বাড়িতে ডিবি, বাইরে পুলিশ। চলছে গণগ্রেফতার। কর্মীরা বাড়িতে ঘুমাতে পারছে না। আত্মগোপনে থেকে গণসংযোগ করতে হচ্ছে। ভোটার স্লিপ বিতরণ করতে দিচ্ছে না পুলিশ। অফিস থেকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। শুক্রবার বিকেল থেকে রাত ৩টা পর্যন্ত আরও ২১ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার এড়াতে ধানের শীষের পোলিং এজেন্টদের লুকিয়ে রাখতে হচ্ছে।

শনিবার সকালে নগরীর মিয়াপাড়ায় নিজ বাসভবনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, একটি অর্থবহ, অংশগ্রহণমূলক ও ভীতিহীন নির্বাচন দিতে কেসিসি নির্বাচনে সেনাবাহিনী নিয়োগের জোর দাবি জানাচ্ছি। সেনাবাহিনী ছাড়া কোনোভাবেই ‘আওয়ামী’ পুলিশ দিয়ে অবাধ, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। নির্বাচন কমিশন সরকারকে খুশি করতে চায়। এ কারণে বারবার সেনাবাহিনী নিয়োগের দাবি জানানো হলেও তারা এড়িয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, খুলনার পুলিশ জঘন্য ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। প্রচারণার শুরুর দিকে শুধুমাত্র কর্মীদের গ্রেফতার করা হলেও এখন নেতাদের গ্রেফতার করা শুরু করেছে। এ পর্যন্ত দেড়শ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সর্বশেষ গত রাত ৩টা পর্যন্ত আরও ২১জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার মধ্যে সাতক্ষীরার তিনজন এবং ২১নং ওয়ার্ডের একজনের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। পুলিশের কাছে তাদের সন্ধান দাবি করছি। শত ঝড়-ঝাপটার মধ্যেও নেতাকর্মী ও ভোটারদের মনোবল একটুও কমেনি বলেও উল্লেখ করেন মঞ্জু।

তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, এত ভয় কিসের? সরকারি দলের প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক নাকি উন্নয়নের জোয়ারে নৌকা ভাসাবেন? তাহলে আমাদের উপর কেন এত হানা? খুলনার জনগণ সাড়ে ৯ বছরের আওয়ামী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ১৫ মে রায় দেবেন- এ বার্তা পেয়েই পুলিশকে ব্যবহার করে তারা ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করছে।

কেসিসি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেকের উদ্দেশে নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, এই শহরে সন্ত্রাসের মেয়র হয়ে আপনার সম্মান বাড়বে না। এভাবে গণগ্রেফতার, অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়ে যদি জিতেও যান তবে নগরবাসীর সামনে মুখ দেখাতে পারবেন না। অবিলম্বে পুলিশকে গণগ্রেফতার বন্ধ করতে বলুন। তিনি তালুকদার আব্দুল খালেককে সন্ত্রাসের পথ পরিহার করে ভোটের রাজনীতিতে ফিরে আসার আহ্বান জানান।

প্রেস ব্রিফিংয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, জামায়াতের মহানগর শাখার সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট শাহ আলম, নগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফকরুল আলম, অ্যাডভোকেট বজলার রহমান, নগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফকরুল আলম, খেলাফত মজলিসের মাওলানা নাসির উদ্দিন, মুসলিম লীগের অ্যাডভোকেট আক্তার জাহান রুকু, বিজেপির নগর সাধারণ সম্পাদক সিরাজউদ্দিন সেন্টু, শফিকুল আলম তুহিন, জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোল্লা মশিউর রহমান নান্নু, শামসুজ্জামান চঞ্চল, শরিফুল ইসলাম বাবুসহ দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

(ওএস/এসপি/মে ১২, ২০১৮)