স্টাফ রিপোর্টার : বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মালিকানা দুই ব্যক্তির হাতে চলে গেছে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, 'ওটা আগে ঘুরুক, পৃথিবী পরিক্রমা করুক তারপর দেখা যাবে।’

এ সময় তিনি ‘স্যাটেলাইটের মালিকানা দুইজন লোকের হাতে চলে গেছে’ বলে মন্তব্য করলেও কারও নাম উল্লেখ করেননি।

তিনি বলেন, ‘চুক্তি হচ্ছে অনেক। এই চুক্তি করার অধিকার তাদের কে দিয়েছে? প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আপনার তো পার্লামেন্টই নাই। পার্লামেন্টই তো নির্বাচিত নয়। আপনি যে চুক্তিই করেন না কেন, সেই চুক্তি জনগণের নয়। আমি এ বিষয়ে খুব বেশি কিছু বলবো না। কারণ বিষয়টি ভালো করে দেখিনি। আগে দেখি কী চুক্তি হয়েছে?'

শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত এক প্রতিবাদ সভায় এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।

‘গণতন্ত্র ও আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা, বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা, নিঃশর্ত মুক্তি এবং ডা. শামীউল আলম সুহানের ওপর হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে এ প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে বিএনপিপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)।

সরকারকে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে তার সঙ্গে আলোচনার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আলোচনা করুন, দেশনেত্রীকে মুক্তি দিন, তার সঙ্গে কথা বলুন এবং নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করুন, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন।’

নির্বাচন কমিশনকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে রাষ্ট্রীয় গুন্ডাদের ঠেকানোর জন্য সেনাবাহিনী মোতায়েন করুন। যাতে করে মানুষ নির্ভয়ে নিরাপদে ভোট দিতে যেতে পারে এবং সঠিক রায়টা পাওয়া যায়। এই ব্যবস্থাগুলো করুন। তাহলে অবশ্যই এই দেশে গণতন্ত্রের সুবাতাস বইবে, মানুষ স্বস্তি ফিরে পাবে।'

তিনি বলেন, 'সরকার মিয়ানমারের সঙ্গে চুক্তি করেও এখন পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের কাউকে দেশে ফেরত পাঠাতে পারেনি। যেটা সবচেয়ে আমাদের বেশি দরকার সেই তিস্তা চুক্তি এখনও হয়নি। জনগণই হচ্ছে এ দেশের মালিক। সেই মালিকদের যে চাহিদা, আশা আকাঙ্ক্ষা তা পূরণের ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় দেশের মানুষ আপনাদের ক্ষমা করবে না।’

মালয়েশিয়ার কাছে থেকে শিক্ষা নেয়ার আছে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, 'তাদেরে কাছ থেকে আমাদের অনেক কিছু শিক্ষা নেয়ার আছে।’

উল্লেখ্য আনোয়ার ইব্রাহীম এক সময় ড. মাহাথির মোহাম্মাদের ডেপুটি প্রাইমিনিস্টার ছিলেন। তিনিই আনোয়ারকে দল থেকে বের করে জেলে দেন। সেই আনোয়ার ইব্রাহীমের দল, আজ সবচেয়ে বড় দলে পরিণত হয়েছে। দেশের এই সঙ্কটময় মুহূর্তে মাহাথির মোহাম্মাদকে তারাই নিয়ে এসেছে।, যখন দুর্নীতির মাধ্যমে দেশ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। বলেছে আপনিই এসে আমাদের নেতৃত্ব দিন। মাহাথির শেষ বয়সে এসে তা মেনে নিয়েছেন। একমত হয়ে নির্বাচন করেছেন, সর্বোচ্চ ভোটে জয়লাভ করেছেন। আর নির্বাচিত হয়েই দুটি কথা বলেছেন। এক আমি প্রতিহিংসার রাজনীতি করব না। দুই আনোয়ার ইব্রাহীমকে অতি দ্রুত মুক্তি দিয়ে তাকে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দেব। এছাড়া তিনি বলেছেন আনোয়ার ইব্রাহীমকে সাজা দেয়া ভুল ছিল। তাকে ১১ বছর সাজা দিয়েছিলেন মাহাথির।, এখনও তিনি জেলে আছেন। আজকে সেখান থেকে আমাদেরকে শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে।’

এ সময় তিনি আরও বলেন, 'জাতীয় ঐক্য ছাড়া আমাদের কোনো উপায় নেই। গোটা দেশের মানুষকে এক করে আমাদের এই ভয়াবহ দানবকে সরাতে কাজ করতে হবে।’ সেজন্য আমাদের জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করতে হবে। জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করার মধ্য দিয়েই এদের পরাজিত করতে হবে।'

ড্যাবের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এবং বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বাচ্চুর সঞ্চালনায় এবং বিএসএমএমইউ’র সাবেক প্রো-ভিসি অধ্যাপক ডা. আবদুল মান্নানের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফর উল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সিরাজ উদ্দিন আহমেদ, আব্দুল কুদ্দুস, গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, ঢাবি'র সাদা দলের আহ্বায়ক আক্তার হোসেন প্রমুখ।

(ওএস/এসপি/মে ১২, ২০১৮)