শরীয়তপুর প্রতিনিধি : শরীয়তপুর সদর উপজেলায় খাদিজা বেগম (২১) নামে এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার সকালে উপজেলার আংগারিয়া ইউনিয়নের ভাসানচর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে ওই গৃহবধূর স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছে।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। পরে ময়নাতদন্ত করা হয়। ময়নাতদন্ত শেষে সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শেখ মোহাম্মদ মোস্তফা খোকন জানান, ওই গৃহবধূর গলায় ও মুখে কিছু দাগ রয়েছে। প্রাথমিকভাবে বুঝা যাচ্ছে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।

খাদিজার ভাই শাহীন কাজি ও স্থানীয়রা জানান, সদর উপজেলার চরচটাং গ্রামের গোলাম মাওলার মেয়ে খাদিজা বেগম (২১) এর সঙ্গে ভাসানচর গ্রামের সমেদ মৃধার ছেলে এবাদুল মৃধার সাথে ২০১৭ সালে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়েরপর থেকেই এবাদুল ও তার বাবা-মা যৌতুকের জন্য খাদিজাকে প্রতিনিয়ত মারধরসহ বিভিন্নভাবে নির্যাতন করত। খাদিজা নির্যাতনের ভয়ে তার বাবারবাড়ি থেকে দেড় বছরের মধ্যে দুই লাখ টাকার ফার্নিচারও কিনে দেয় এবাদুলের পরিবারকে। এখন আবার খাদিজার বাবারবাড়ি থেকে যৌতুক বাবদ নগদ টাকা আনতে বলে স্বামী ও তার পরিবার। বাবারবাড়ি থেকে টাকা আনতে অস্বীকার করলে এরই এক পর্যায়ে বুধবার ভোরে স্বামী এবাদুল, শ্বশুর সমেদ মৃধা ও শাশুড়ি রিজিয়া বেগম মিলে খাদিজা বেগমকে প্রথমে মারধর করে। পরে মুখের ভেতর কাঁথা ঢুকিয়ে দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

সকালে বাড়ির অন্য সদস্যরা এবাদুলের ঘরের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ দেখে খাদিজার খোঁজ করে। কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে পরে ঘরের ভেতরে প্রবেশ করে বিছানার উপর কাঁথা ও মশারি পেঁচানো খাদিজার মরদেহ দেখতে পায়। পরে পুলিশকে জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় পালং মডেল থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

পালং মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

(ওএস/এএস/মে ১৬, ২০১৮)