রূপক মুখার্জি, নড়াইল : নড়াইলের প্রায় সব সড়কই চলাচলের অনুপোযোগী। কোথাও প্রতিনিয়ত মেরামত চললেও কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে নিম্ন মানের কাজের অভিযোগ। সংস্কার সম্পন্ন হয়েছে এমন সড়কেও চলাচল দূরহ হয়ে পড়ে ছয় মাস না যেতেই। ক্ষণস্থায়ী এ মেরামত কাজ নিয়ে স্থানীয়দের ক্ষোভের শেষ নাই। 

একটি বাসকে সাইড দিতে গিয়ে ৪ যাত্রীসহ উল্টে গেল ইজিবাইক। পাশের রাস্তা কাটা, এলোমেলো ইট ছড়ানো। এরকম অহরহ দূর্ঘটনা আর ইজিবাইকের জ্যাম লেগে আছে। জেলা শহরের প্রধান সড়ক এটি, শেখ রাসেল সেতু থেকে হাতিরবাগান মোড় পর্যন্ত। এই সড়কের দুইপাশের কোথাও কাটা আবার কোথাও ইট ফেলে রাখা হয়েছে। এক লাইনের সংকীর্ন সড়কটি আরো ছোট হয়ে গেছে। ইটের সলিং দিয়ে রাস্তার দুইপাশ প্রসস্তকরন চলছে। একমাস ধরে চলছে এই যন্ত্রনা।

সম্প্রতি এই বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত জেলা উন্নয়ন সভায় জাতীয় দলের ক্যাপ্টেন মাশরাফির বাবা গোলাম মোর্তজা স্বপন নিজেই এই সড়কের ইটের সলিং এর কাজে নিম্নমানের ইট ব্যবহারের অভিযোগ তোলেন।

সভায় উপস্থিত সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.আবু হেনা মোস্তফা কামাল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, রাস্তা প্রস্তকরনে সবচেয়ে উন্নতমানের ইট ব্যবহার হচ্ছে,তবে সাময়িকভাবে এই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে,এটাকে সবাই সাধুবাদ জানাবে এটাই আশাকরি। অভিযোগ এই রাস্তায় কেবল খারাপ ইটই ব্যবহার হচ্ছে না, নীচে বালিও দেয়া হচ্ছে কোনরকম। এই রাস্তা এই বর্ষাও টিকবে না।

সড়ক বিভাগ জানায়,ভাটিয়াপাড়া-কালনা-লোহাগড়া-নড়াইল-যশোর জাতীয় মহাসড়কের আওতায় রূপগঞ্জ গোহাটখোলা থেকে সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার রাস্তার দুপাশে এক মিটার ইটের সলিং দ্বারা প্রসস্তকরনের কাজ করা হচ্ছে প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে।

দুদকের গণ শুনানীকে সড়ক বিভাগের বিরুদ্ধে দূর্নীতির অভিযোগ ছিলো সবচেয়ে বেশী। ইতিমধ্যে তৎকালীন নির্বাহী প্রকৌশলী তাপসী দাস এর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের ভিত্তিতে ঐ নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে দুদক অভিযোগগত্র (চার্জশীট) গঠন করেছে। স্থানীয়রা মনে করে সড়ক বিভাগের কর্মকর্তা ও ঠিকাদারের যৌথ উদ্যোগে সড়কে কোটি কোটি ব্যয় করা হলেও তা কোন কাজে আসে না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা বলেন, সড়ক বিভাগের কিছু হেভিওয়েট ঠিকাদার আছে যারা যত খারাপ কাজই করুক না কেন মোটা টাকার মাধ্যমে নানা কায়দায় আবার সেই সব ঠিকাদারই কাজ করে। ঠিকাদাররা সব কিছু ম্যানেজ করে টাকার বিনিময়ে।

সড়ক বিভাগের অধীন দু’টি আন্তঃ জেলা মহাসড়ক ও আটটি জেলা সড়ক মিলিয়ে ১৭০ কিলোমিটার সড়ক রয়েছে। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে অধিকাংশ সড়কের উপরিভাগের কার্পেটিং উঠে গিয়ে খোয়া বেরিয়ে বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্তের। অন্যদিকে প্রতিবছরই সংস্কার হচ্ছে আবার সড়কও ঠিকাদারের যোগসাজসে নিম্ন মানের কাজের ফলে ছয়মাস না যেতেই পূর্বের অবস্থায় ফিরে এসেছে। এ ব্যাপারে জনমনে ব্যাপক ক্ষোভ থাকলেও প্রতিকার নেই।

পিচ-খোয়া উঠে ছোট-বড় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমে নাকাল অবস্থা, বড় বড় গর্ত পাশ কাটিয়ে হেলেদুলে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন। মাঝে মধ্যে আবার ইটের সলিং দিয়ে ভাংগা রাস্তা জোড়া লাগানোর চেষ্টা করা হয়েছে। এ অবস্থা নড়াইল-ফুলতলা সড়কের। নিত্য দিন চরম দুর্ভোগ নিয়ে এ সড়ক দিয়ে অসংখ্য যাত্রীবাহি বাস, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, পিকআপ ভ্যান, ইজিবাইক ও অটোরিকশাসহ নানা ধরণের যানবাহন চলাচল করে। নড়াইল থেকে বাণিজ্যিক শহর যশোরের নওয়াপাড়ায় যেতে ১৫ কিলোমিটার ও ফুলতলা হয়ে খুলনা যাতায়াতে প্রায় ২০ কিলোমিটার সাশ্রয় হয়।

সড়কের মির্জাপুর থেকে রুখালী পর্যন্ত দুই কিলোমিটার এবং চাকই থেকে শুভরাড়া পর্যন্ত তিন কিলোমিটার সড়ক মোটামুটি চলাচলযোগ্য। অন্য ২৩ কিলোমিটার সড়কে পিচ ও খোয়া উঠে ছোট-বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। যানবাহন চলছে হেলেদুলে ঝুঁকি নিয়ে। দুর্ঘটনা এড়াতে যানবাহন চালাতে হয় ধীর গতিতে। প্রায় একই অবস্থা সড়কের কলোড়া, বীড়গ্রাম, গোবরা, বরকুলা, আড়পাড়া, মির্জাপুর ও চাকই এলাকায়।

গোবরা বাসস্ট্যান্ডের সময় নিয়ন্ত্রক (স্টাটার) মইন মিনা বলেন, নড়াইল থেকে গোবরা পর্যন্ত সাত কিলোমিটার সড়কে বাস পার হতে ১০ মিনিট সময় লাগার কথা। সেখানে প্রায় ৪৫ মিনিট সময় লাগে। কখনো বাস, মালবোঝাই ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান গর্তে পড়ে গেলে যানবাহন আটকে দুর্ভোগের আর শেষ থাকে না।

জানা যায়, নড়াইল-গোবরা-ফুলতলা সড়কটির ২৬ কিলোমিটার নড়াইল সওজের অধীন। বাকি দুই কিলোমিটার অংশ খুলনা জেলার ফুলতলা উপজেলার মধ্যে। এই ২৮ কিলোমিটার সড়ক প্রায় ১০ বছর ধরে সংস্কার হয় না। চার-পাঁচ বছর ধরে ফাইল চালাচালি হচ্ছে। সড়ক বিভাগ থেকে জানানো হয়, সম্প্রতি সড়কটি সংস্কারের জন্য ১১৩ কোটি টাকার প্রকল্প তৈরি হয়েছে,এটি পাশ হলে এই রাস্তা একবারে নতুন হয়ে যাবে।

যন্ত্রনার আরেক নাম নড়াইল-কালিয়া সড়ক। এই সড়কের আউড়িয়া থেকে পুরুলিয়া মোড পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার রাস্তার কোথাও খানাখন্দ আবার কোথাও ইট বের হয়ে গেছে। সরু এই সড়কের দুই পার্শে কোন জায়গা না থাকায় রাস্তা ভেঙ্গে মরন ফাদে পরিনত হয়েছে। দুটো বাস পারাপার হতে আধাঘন্টা সময় লেগে যায়। এই সড়কের পুরুলিয়া মোড় থেকে রঘুনাথপুর, যাদবপুর এর রাস্তায় হেটে চলাই দায়। রাস্তায় সামান্য পিচ থাকায় তা উঠে কোথাও রাস্তা ইটের আবার কোথাও গর্ত।

আটলিয়া গ্রামের সাংবাদিক ওমর ফারুক তুষার জানান, এই রাস্তাটি শুরু থেকেই ঝুকিপূর্ন, দায়সারাভাবে কাজ হয়, একবছরের বৃষ্টিতে আবার রাস্তা আগের চেয়ে বেশি ভয়ংকর হয়ে যায়। জেলার অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ন নড়াইল-মাগুরা সড়ক। ৪৭ কিলোমিটার সড়কের মাত্র ১৬ কিলোমিটার নড়াইল সওজ এর আওতায়। তিন বছর আগে এই রাস্তাটি নতুন ভাবে তৈরী হলেও তা দেখে বোঝার উপায় নেই। এমনিতেই আকাবাকা এই রাস্তা তার উপর প্রতি ১০ হাত পরপর ছাল-চামড়া উঠে বেহাল দশার কারনে দুর্ঘটনা নিত্যসময়ের।

কাগজীপাড়া গ্রামের ইজিবাইক চালক আসলাম খান জানান, রাস্তা হলো ঠিকাদারদের বাপের সম্পত্তি, যেমন খুশি করবে আবার দুদিন পরে তার চামড়া উঠে যাবে, নতুন রাস্তা একবছর পরেই ঝরঝরা হয়ে গেছে।

২০ কিলোমিটার দীর্ঘ লোহাগড়া-লাহুড়িয়া সড়কের দুর্ভোগ শুরু লোহাগড়া বাজার থেকে। জয়পুর মোড়ে সড়কটি উভয় পাশে পিচ ও খোয়া উঠে দেবে গেছে। নারানদিয়া-কেষ্টপুরের মধ্যে বেহাল দশা, মানিকগঞ্জ ও বাতাসি বাজার এলাকায় অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। এখানে বড় বড় খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই কাদাপানিতে একাকার হয়ে যায়। মাকড়াইল ও তেতুলবাড়িয়া এলাকায় তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন মাগুরা, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ জেলার অসংখ্য মানুষ চলাচল করে।

উপজেলা পরিষদ থেকে বকজুড়ি খেয়াঘাট পর্যন্ত সাত কিলোমিটার রাস্তার সিডি বাজার থেকে বকজুড়ি খেয়াঘাট পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার সড়কটির সম্পূর্ণ অংশের পিচ ও খোয়া উঠে ছোট-বড় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সিডি বাজার এলাকায় ধসে পড়েছে সড়কটি। প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে ছোট বড় যানবাহন।

জয়পুর ইউপি চেয়ারম্যান আকতার হোসেন জানান, পাঁচ কিলোমিটার পথ চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় ব্যাবসায়ী সহ অনেকই ২০ কিলোমিটার ঘুরে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী হয়ে আলফাডাঙ্গা ও বোয়ালমারীতে পন্য পরিবহনসহ যাতায়াত করেন।

নসিমন চালক আবু বকর জানান, সড়কের বেহাল অবস্থার কারনে যানবাহন চলাচল করতে খুবই সমস্যা হচ্ছে। জীবনের ঝুকি নিয়ে তাদের গাড়ি চালাতে হয়। একটু বৃষ্টি হলেই পানি জমে কাদা হয়ে যায়, ৩/৪ দিন সড়কে চলাচল করা যায়না। যেখানে ৩০ মিঃ পথ বর্তমানে সেখানে ৩ ঘন্টা সময় লাগে।

লোহাগড়া-লাহুড়িয়া সড়কের শিয়রবর থেকে মাকড়াইল পর্যন্ত সাড়ে তিন কিলোমিটার সড়ক ১ কোটি ২৩ লাখ টাকা ব্যায়ে কার্পেটিং এর কাজ শুরু করে ফরিদপুরের ভাঙ্গার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সড়কের কাজে নিম্নমানের খোয়া ব্যবহার করায় বিক্ষোভ করে স্থানীয় জনগণ। প্রতিবাদের মুখে সেই কাজ বন্ধ করতে বাধ্য হয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর(এলজিইডি)।

লাহুড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান দাউদ হেসেন বলেন,ঠিকাদারের খামখেয়ালীতে নিম্নমানের খোয়া দিয়ে রাস্তার কাজ শুরু হয়। উপজেলা প্রকৌশলীর সঙ্গে ঠিকাদারের সখ্যতার জন্যই নিম্নমানের খোয়া ব্যবহার হচ্ছিল। এলাকাবাসীর সঙ্গে প্রতিবাদ করতে আমিও যোগ দিয়েছিলাম। স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতায় জেলার ২২৯৫ কিঃ মিঃ সড়কের মধ্যে ১৬৪৯ কিঃ মিঃ সড়কই কাঁচা,যা বর্ষায় চলাচলের অনুপযোগী থাকে।

কাগজে কলমে ৫২১ কিঃ মিঃ সড়ক পাকা হলেও বেশির ভাগ সড়কের বিভিন্ন স্থানে স্থানে পিচ-খোয়া উঠে গেছে। দীর্ঘদিন যাবৎ সংস্কার না হওয়ায় ছোট-বড় অসংখ্য খানাখন্দ সৃষ্টি হয়ে ৭৫ শতাংশ সড়ক চলাচলের অনুপযোগি। লোহাগড়া’র ৮২৯টি সড়কের মধ্যে সরাসরি উপজেলার সাথে সংযোগ রয়েছে ২৮টি, ইউনিয়ন সড়ক রয়েছে ২৯টি এবং অধিক গুরুত্বপূর্ন গ্রাম সড়ক রয়েছে ১৬৪ টি, কম গুরুত্বপূর্ণ সড়ক আছে ৬০৮টি। নড়াইল সদরের ৩২৯টি সড়কের মোট দৈর্ঘ্য ৯০৪ কিঃ মিঃ, যার মধ্যে পাকা হয়েছে ১৭২ কিঃ মিঃ। লোহাগড়া উপজেলায় মোট ২৭৯টি সড়কের দৈর্ঘ্য ৮১৬ কিঃ মিঃ, পাকা হয়েছে ১৯২ কিঃ মিঃ। কালিয়া উপজেলায় মোট ২২১টি সড়কের দৈর্ঘ্য ৫৭৩ কিঃ মিঃ, যার মধ্যে পাকা হয়েছে মাত্র ১৫৬ কিঃ মিঃ সড়ক। সড়কের বেহাল দশা প্রসঙ্গে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আবু ছায়েদ জানান, আমি এখানে অল্পদিন এসেছি, বিভিন্ন সড়ক মেরামতের জন্য অর্থ বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। অর্থ পেলে সড়ক সংস্কার করা হবে।

১৫ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের লোহাগড়া পৌরসভার সবগুলো রাস্তা ই চলাচলের অনুপযোগী। গত ১০ বছরে লোহাগড়া পৌরসভার কোন রাস্তাঘাটের কাজ হয়নি। শীতকালে ও রাস্তায় পানি জমে থাকে। লোহাগড়া পৌরসভার কলেজ রোড, খেয়াঘাট থেকে লক্ষ্মীপাশা শ্মশান ঘাট, বাজার রোড, জামরুলতলা থেকে জয়পুর গোফাডাঙ্গা এরকম শহরের ভিতরের ২২টি সড়কের সবগুলোর অবস্থাই করুন। পিচ উঠে গেছে অনেক আগেই এখন কোথাও খোয়ার লাল ধুলো আবার কোথাও ৩ থেকে ৪ ফুট গর্তে ভরা। পৌর এলাকার সর্দারপাড়া থেকে মোচড়া সড়কের অর্ধেক ভেঙ্গে ৩ ফুটের খাদ তৈরী হয়েছে, প্রতিনিয়ত কালনাঘাটগামী ট্রাক, কাভার্ডভ্যান উল্টে দূর্ঘটনার শিকার হলেও কর্তৃপক্ষ নির্বিকার।

পৌরসভার বাসিন্দা জাসদের জেলা সভাপতি এড.সালাম খান বলেন,বিগত নির্বাচনে পৌরসভার রাস্তাই ছিলো মূল ইস্যু,সেই প্রতিশ্রুতি দিয়েই নতুন মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন,কিন্তু দেড় বছর পার হলেও কোন একটি রাস্তার কাজ হয়নি, বরং আগে যা ছিলো তার থেকে খারাপ হয়েছে। বর্ষার শুরুতেই প্রত্যেকটি রাস্তায় পানি জমে আছে,বাকি সময়ে কি দশা হবে আল্লাহ জানে।

লোহাগড়া পৌর মেয়র মো.আশরাফুল আলম বলেন, বিগত মেয়রের সময়ে ১০ বছরে কোন প্রকল্প জমা না থাকায় আমার পক্ষে গত এক বছরে নতুন প্রকল্প দেয়া সম্ভব হয়নি,তবে আগামী অর্থবছরে আমরা নতুন প্রকল্প বরাদ্দ পেলে রাস্তাঘাটের ব্যপক উন্নয়ন করা সম্ভব হবে।

জেলার ফসলের ভান্ডার বিল ইছামতি ঘিরে থাকা নলদী-লাহুড়িয়া সড়কটি গত ৬ মাস ধরে সংস্কারের জন্য কেটে রাখা হয়েছে। রাস্তা নয়, এযেন যুদ্ধের জন্য তৈরী করা হয়েছে বাংকার। ৫ কিলোমিটার জুড়ে মাটিকারটার যন্ত্র দিয়ে কেটে ৩/৪ ফুট গভীর খাদ তৈরী করা হয়েছে। এই বিল থেকে এবছর রবি মৌসুম এর ফসল এবং বোরো ধান কেটে ঘরে আনার ব্যাপারে আশংকায় এলাকার ১০ গ্রামের কয়েক হাজার কৃষক। কোন ভ্যানগাড়ি কিম্বা গরুর গাড়ি কেন এই রাস্তায় কোান মানুষ ও হাটতে পারছে না।

লাহুড়িয়া ইউপি মেম্বর নাসির শেখ জানান, কাচা রাস্তা হলেও এই রাস্তা দিয়ে ধান,রবিশষ্য ঘরে তুলে বাজারে নেয়া যেত, কিন্ত সড়কটি উন্নয়নের নামে ৩ ফুট খুড়ে রেখেছে ঠিকাদার। এলাকার ছেলে-মেয়েদের স্কুল কলেজে যাওয়া বন্ধ, বর্ষা শুরু হয়েছে, রাস্তা একবারেই চলার অনুপযোগী, কৃষকের ফসল মাঠেই পচবে। কাজের এই অবস্থার জন্য ঠিকাদারকে দায়ী না করে এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আবু ছায়েদ উল্টো সাফাই গাইলেন- ৫ কিলোমিটার সড়ক এর কাজ শুরু হয়েছে ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে। ১৮ মাস মেয়াদী এই কাজ শেষ হবে ১৯ সালের এপ্রিল মাসে। উন্নয়ন কাজের জন্য একটু সমস্যাতো হতেই পারে তবে কাজ যথা সময়ে শেষ হবে”। কাজের ধীরগতির ব্যাপারে নানা অযুহাতের কথা শোনালেন কাজের ঠিকাদার ফরিদপুরের লিপু এন্টারপ্রাইজের মোশাররফ হোসেন।


(আরএম/এসপি/মে ২১, ২০১৮)