দিনাজপুর প্রতিনিধি : দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর পার্শ্ববর্তী বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি শ্রমিক ও ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসীরা ১৯ দাবিতে নবম দিনের মতো গতকাল সোমবারও কয়লাখনির প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ-সমাবেশ অব্যাহত রেখেছেন। সংঘটিত ঘটনার তদন্তে জ্বালানী মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে গত রবিবার (২০ মে) তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।  

আন্দোলনের কারণে অবরুদ্ধ রয়েছেন খনিতে অবস্থানরত বিদেশি ৩০০ খনি বিশেষজ্ঞসহ কর্মকর্তা-কর্মচারিরা। পুলিশের সহায়তায় আবাসিকের পরিবারগুলোর নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য সংগ্রহ করতে হচ্ছে।

আন্দোলনরত শ্রমিকদের সংগঠন বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি শ্রমিক ও কর্মচারি ইউনিয়নের সভাপতি রবিউল ইসলাম রবি, সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান, ক্ষতিগ্রস্ত ২০গ্রামের সমন্বয় কমিটির আহবায়ক মশিউর রহমান বুলবুল ও মিজানুর রহমান মিজান বলেন, আন্দোলনকে নস্যাৎ করতে কর্তৃপক্ষ হামলা, মামলা চালিয়ে যাচ্ছেন। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কোন কিছুইতেই আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলনকারিরা বাড়ি ফিরবে না।

আজ সোমবার এর মধ্যে দাবি পূরণ করা না হলে আজ মঙ্গলবার (২২ মে) থেকে খনির সকল গেটে অবস্থান নিয়ে কোন কর্মকর্তা-কর্মচারিকে বের হতে দেওয়া হবে না এবং আন্দোলনের ধারাকে আরো তীব্রতর করা হবে। আন্দোলনকারীদের ওপর হামলাসহ মারপিট ঘটনায় বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি শ্রমিক ও কর্মচারি ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান বাদি হয়ে গত রবিবার (২০ মে) খনির মহাব্যবস্থাপক-জিএম (পিএন্ডপি) এবিএম কামরুজ্জামান ও মহাব্যবস্থাপক-জিএম (প্রশাসন) মো. আবুল কাশেম প্রধানীয়াসহ ১৪জনকে আসামী করে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী হাবিব উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, খনির সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে গত রবিবার (২০মে) ঢাকায় খনিজ ও জ্বালানী মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রী নাসরুল হামিদ, সচিব রাহমাতুল মনিম ও পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান আবুল মনসুর মোহাম্মদ ফয়েজ উল্লাহ বৈঠক করেছেন। বৈঠকে ঘটনার তদন্তে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিষয়গুলো নিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রীর সাথে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আলোচনা করা হয়েছে। ওই বৈঠকে আন্দোলনকারিদেরকে কাজে যোগ দিতে বলা হয়েছে। কাজে যোগ দিলে তদন্ত কমিটি তদন্ত কার্যক্রম শুরু করবেন। শ্রমিকদেরকে কাজে যোগ দেওয়া কথা বলার পরও কাজে যোগ না দিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। লোকসান এড়াতে চীনা প্রতিষ্ঠান নিজস্ব জনবল দিয়ে গতকাল সোমবার সকালের শিফট থেকে কয়লা উত্তোলন শুরু করেছে।

খনির কার্যক্রমকে অচলাবস্থায় ফেলে সরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করতেই একটি মহলের উস্কানীতে আন্দোলনকারিরা খনি কর্তৃপক্ষকে জিম্মি করে দাবি আদায়ের অপকৌশল চালাচ্ছে। আন্দোলনকারিদের হামলায় আহত হয়ে সহকারি ব্যবস্থাপক সাজেউর রহমান সাজুকে উন্নত চিকিৎসার জন্য গত রবিবার (২০ মে) ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আন্দোলনকারিরা নিজেদের অপকর্মকে আড়াল করতে কর্মকর্তাদের ওপর দায় চাপানোর অপচেষ্টাও চালাচ্ছে।

(এসিজি/এসপি/মে ২১, ২০১৮)