জোটন চন্দ্র ঘোষ : পিতা মাতা ও শিক্ষকদেরকেই আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়তে হবে শিশুদের। একটি শিশু পরিবার থেকে শিখতে পারে আদব-কায়দা, শ্রদ্ধাবোধ, দায়িত্ববোধ, নীতি-নৈতিকতাবোধ প্রভৃতি মানবজীবনের মৌলিক আদর্শগুলো। 

শিশুদের সাধারণত প্রিয় বৈশিষ্ট্য হল মানুষকে অনুকরন ও অনুসরন করা। প্রথমে শিশুরা পরিবারের সদস্যদের এবং পরবর্তীত্বে প্রতিবেশীদের এবং প্রাথমিক শিক্ষা জীবনে শিক্ষকদের অনুসরন করেই জীবনের প্রথম দাপটি পাড়ি জমায়। যেমন একজন মানুষ একটি কাজ করতে পারলে তা অন্যকে দেখিয়ে দিলে সেও শিখে যায়। এ ভাবেই একজন শিশু অন্যজনকে দেখে দেখে শিখছে কৃষ্টিকালচার সহ সামাজিক বিভিন্ন আচার আচরণ।

পৃথিবীর আদিকাল থেকেই একজন আদর্শবান মানুষ তার শির্শ্যদের আদর্শ শিক্ষা দেন। একজন ধর্মগুরু ধর্মের শিক্ষা দিয়ে থাকেন। তেমনি একজন শিক্ষক শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিয়ে থাকেন। বর্তমানে বানিজ্যিক যুগে মানুষ উপার্জনের জন্য যা শিখতে হয় সেদিকেই বেশী মনোযোগী। ফলে মানবিক ও আত্মিক শুদ্ধি অর্জনে খুব বেশী মনুষকে দেখা যায় না। নৈতিকতা যেন জাদুঘরে তুলে রাখা হয়েছে। আজকাল হরহামেশা মানুষ অনৈতিক কাজে লিপ্ত হচ্ছে। বেশির ভাগ মানুষ এ বিষয়গুলোকে তেমন পাত্তাই দিচ্ছেন না। যার ফলে সকালের সফল পরিবারটি বিকেলে অনৈতিকতার ছোবলে ব্যর্থ পরিবারে রুপান্তরিত হচ্ছে।

একেবারেই মানুষ ধর্মীয় আদেশ নিষেধ কিংবা সামাজিক মূল্যবোধের কোন তোয়াক্কা করছেন না। এর প্রভাব পরছে শিশুদের উপর, আর যে ভাবে চলছে তাতে একটা সময় সন্নিকটে যখন অমানবিক সবকিছু দেখেও প্রতিবাদ করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলবে আজকের শিশুরাও। যেহেতু দেখেই মানুষ শিখে তাই শুরু করতে হবে শিশুদের দিয়ে, স্কুল লেভেল থেকেই শিশুদের নৈতিক শিক্ষা দিতে হবে।

ধর্ম বিষয়ক লেখাপড়া স্নাতক পর্যন্ত বাধ্যতামূলক করা যেতে পারে। ভাঙ্গনের হাত থেকে একান্নবর্তী পরিবারগুলোকে রক্ষা করতে হবে। শিশুদের সামাজিক কাজকর্মে সম্পৃক্ত করতে হবে যেন তাদের কোমল হৃদয়ে মানবিকতা লালিত ও স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়। প্রতিটি পরিবারকে শিশুদের প্রতি সঠিক ভাবে দায়িত্ব নিতে হবে। বিশেষ করে বাবা মাকে খেয়াল রাখতে হবে যেন সন্তানের ধর্মীয় শিক্ষাটা ছেলেবেলা থেকেই ঠিকঠাকমতো শুরু হয় এবং প্রতিদিনের প্রার্থনা যেন ঠিকমতো করে। শিশুদের সৃজনশীল শিক্ষায় ব্যাস্ত রাখতে হবে। পাশাপাশি খেলাধুলায় মনোনিবেশ করতে হবে। যেহেতু মানুষ একে অপরকে অনুকরন করে শিক্ষতে শুরু করে তাই শিশুদেরকে আদর্শবান মানষের সান্নিধ্য রাখতে হবে।

পারিবারিক অনুশাসন দিতে হবে যেন শিশুটি মানবিক গুনাবলি সম্পন্ন হয়। শিষ্টাচার শিখাতে হবে বাবা মাকেই। একটি শিশু যখন পরিশ্রমী হবে আর ধর্মীয়ভাবে জ্ঞানী হবে এবং শিষ্টাচার নিয়ে বেড়ে উঠবে সে শিশু বড় হয়ে একজন আদর্শ মানুষ হবে একথা অনুমেয়। প্রতিটি পরিবার শিশুদের বিশেষ যত্নে আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারলে আগামীর প্রজন্ম হবে সুন্দর আলোকিতময়।

(জেসিজি/এসপি/মে ২৬, ২০১৮)