উত্তম গোলদার, মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী) : পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নে সরকার ঘোষিত জাটকা আহরেণ বিরত থাকা জেলেদের জন্য বরাদ্ধকৃত ৪ মাসের ভিজিএফের চাল পায়নি ৩০০ জেলে। ১ নভেম্বর-থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত জাটকা আহরণ নিষিদ্ধ সময়ে জেলেদের পূর্নবাসনের জন্য ফেব্রুয়াির থেকে মে মাস পর্যন্ত ৪ মাসের ভিজিএফের চাল বিতরণ করা হয়ে থাকে। কিন্তু মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নে ৪ মাসেও ভিজিএফের চাল বিতরন না করায় ওই ইউনিয়নের জেলেরা মানবেতর জীবন-যাপন করছে। 

জাটকা শিকার থেকে বিরত থাকা কয়েকজন জেলে জানান,ফেব্রুয়ারী মাস থেকে তালিকাভুক্ত জেলেদের ভিজিএফের চাল দেয়ার কথা থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিরা তালিকা তৈরী করতে বিলম্ব করায় এখন পর্যন্ত চাল বিতরন করা হয়নি।

মির্জাগঞ্জ উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, জাটকা সংরক্ষন মৌসুম নভেম্বর থেকে জুন পর্যন্ত দেশের নদ-নদীতে জাটকা ধরা নিষিদ্ধ। এ সময়ে জাটকা ধরা থেকে বিরত থাকা প্রতিটি জেলে পরিবারকে পূর্নবাসনের লক্ষে ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত চার কিস্তিতে বিশেষ ভিজিএফের মাধ্যমে প্রতিমাসে ৪০ কেজি করে চাল দিচ্ছে সরকার। ফেব্রুয়ারি থেকে চার কিস্তিতে ওই চাল বিতরন করার কথা ছিলো। এজন্য উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নে ৯৫২ টি জেলে পরিবারকে তালিকাভুক্ত করা হয়। এরমধ্যে অন্য ৫টি ইউনিয়নে তালিকা জমা দিয়ে তাদের বরাদ্ধকৃত চাল জেলেদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু উপজেলার মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নে যথা সময়ে তালিকা প্রস্তুত করতে না পারায় ৩০০ জন জেলে এখনও চাল পায়নি।

জেলেদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, নদীতে জাটকা ধরা বন্ধ থাকায় ৭ মাস ধরে উপজেলার ১ হাজার ৮৮৯ জন জেলে কর্মহীন হয়ে পড়ে। অথচ ভিজিএফের জন্য তালিকাভুক্ত হয়েছে ৯৫২জন জেলে। বাকী জেলেরা সরকারের নিষেধাজ্ঞা মানলেও তারা কোন খাদ্যে সহায়তা পাচ্ছে না। চাল বরাদ্ধের অপ্রতুলতা নিয়ে জেলেদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে।

মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নের দক্ষিন মির্জাগঞ্জ গ্রামের জেলে মোঃ মোসলেম হাওলদার ও জব্বার হাওলাদার বলেন, সরকারি নিষেধাজ্ঞা মেনে নদীতে ঝাটকা ধরলাম না। অনেকে ভিজিএফের চাল পেলেও প্রকৃত জেলেরা চাল পায় না।

পায়রাকুঞ্জ গ্রামের জেলে আবদুল হাই মোল্লা, মর্তুজা হাওলাদার, রশিদ ভূইয়া বলেন, নভেম্বর থেকে জুন নদীতে জাটকা ধরা থেকে বিরত ছিলাম। এ সময়ে সরকার তালিকাভুক্ত প্রত্যেক জেলেকে ৪০ কেজি করে ৪ কিস্তিতে ১৬০ কেজি চাল বরাদ্ধ দিয়েছে। অথচ উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে জেলেরা চাল পেয়েছে। আমাদের মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নে মে মাস শেষের দিকে অথচ আমরা চাল পায়নি। এতে অনেক জেলে পরিবার ভিজিএফের চাল না পেয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে।

এ ব্যাপারে মির্জাগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট মোঃ মনিরুল ইসলাম লিটন সিকদার বলেন,মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নে জেলেদের সংখ্যা বেশী,কিন্তু বরাদ্ধ কম। তাই তালিকা তৈরী করতে বিলম্ব হওয়ায় চাল বিতরন করা হয়নি।

মির্জাগঞ্জ সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মনোজ কুমার সাহা জানান, ইউপি চেয়ারম্যানকে বারবার তাগিদ দেওয়া হলেও চেয়ারম্যান যথা সময়ে চাল বিতরন করেননি।

(ইউজি/এসপি/মে ২৮, ২০১৮)