ফেনী প্রতিনিধি : ফেনীর ফুলগাজী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি একরামুল হক একরাম হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার অন্যতম আসামী নুর আহাম্মদ মিয়া জানিয়েছেন, গত ২০ মে বেলা ১১টার দিকে একরামের উপর হামলা চালানোর আগে এ ঘটনার অন্যতম প্রধান পরিকল্পনাকারী, আওয়ামীলীগ নেতা জাহিদ চৌধুরি ওরফে জিহাদ ও একাডেমী এলাকার একাধিক সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের দায়ে অভিযুক্ত, বিরিঞ্চির নিজতালুক এলাকার মো. হুমায়ূনসহ বেশ কয়েকজন কিলার একাডেমী এলাকায় মিয়ার দোকান ‘নিলয় ষ্টোরে’ এসে অপেক্ষা করে।

পরে ১১টার দিকে একরামের গাড়ি বিলাসী সিনেমা হল এলাকায় গেলে আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়।

শুক্রবার দুপুরে ফেনী মডেল থানা পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নুর আহাম্মদ মিয়া এ হত্যাকান্ড সংশ্লিষ্ট বেশকিছু তথ্য দিলেও এতে তাঁর নিজের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেননি। তাঁর বিরুদ্ধে এলাকায় মাদক বিক্রির অভিযোগও অস্বীকার করেন তিনি। ফেনী মডেল থানা সূত্র জানায়, পুলিশের কাছে মিয়া জানিয়েছেন, তিনি গত কয়েক বছর ধরে একাডেমী এলাকায় নিলয় ষ্টোর নামে দোকান খুলে ব্যাবসা পরিচালনা করছেন। সেখানে মাঝে মাঝে এলাকার অনেকেই আসত। ঘটনার দিন ২০ মে সকালেও হামলাকারীদের কয়েকজন সেখানে গিয়ে অবস্থান নেয়। এদের কয়েকজনকে তিনি চিনতে পারলেও সকলকে চিনতে পারেননি।

ফেনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুব মোরশেদ জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মিয়া বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত বেশ কয়েকজনের নামও বলেছে। এগুলো পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে। তিনি জানান, এ ঘটনায় জড়িত সকলকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।

তিন আসামীকে জেলে প্রেরণ

এদিকে শুক্রবার বিকেলে এ মামলায় তিন দিনের রিমান্ডে থাকা আসামী মো. মাসুদ, আব্দুল কাইয়ূম ও বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গ্রেপ্তার হওয়া নুর আহাম্মদ মিয়াকে জেলে পাঠানো হয়েছে। ফেনী কোর্ট পুলিশের উপ পরিদর্শক আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, শুক্রবার বিকেলে এদের তিন জনকে আদালতে নেয়া হলে জেষ্ঠ্য বিচার বিভাগীয় হাকিম মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন তাঁদের জেলে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তিনি জানান, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, ফেনী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ ছুটিতে থাকায় শুক্রবার নুর আহাম্মদ মিয়ার রিমান্ড শুনানী হয়নি। এর আগে বৃহস্পতিবার তদন্ত কর্মকর্তা এ প্রতিনিধিকে জানান, তিন দিনের রিমান্ডে মো. মাসুদ ও কাইয়ূম তেমন কোন তথ্য দেননি। তাই তাঁদের অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আরো পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন জানানো হবে। একই সঙ্গে নুর আহাম্মদ মিয়াকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন জানানো হবে বলে জানান তদন্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ।

প্রসঙ্গত, উপজেলা চেয়ারম্যান একরামকে গত ২০ মে একাডেমী এলাকায় গুলী করে, কুপিয়ে ও গাড়িতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। এ মামলায় গ্রেপ্তার ৩০ জন আসামীর সকলে বর্তমানে ফেনী কারাগারে রয়েছে।

(এডিিএটিআর/জুলাই ১১, ২০১৪)