দিনাজপুর প্রতিনিধি : দীর্ঘ ২২দিনেও দাবি পূরণ না হওয়ায় গতকাল শনিবার সকাল থেকে দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর পার্শ্ববর্তী বড়পুকুরিয়া কয়লাখনিতে আন্দোলনরত শ্রমিক-কর্মচারিসহ গ্রামবাসীরা মাথায় কাফনের কাপড় বেঁধে আমৃত্যু অবরোধ কর্মসূচি শুরু করেছেন। তবে আন্দোলনকারিদেরকে আজ শনিবারের মধ্যে কাজে যোগ দিতে উপমহা পুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি) রংপুরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।

আন্দোলনকারিরা মাথায় কাফনের কাপড় বেঁধে কয়লাখনির প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে অবরোধ কর্মসূচি শুরু করায় খনি ক্যাম্পাসে অবস্থানরত কর্মকর্তা-কর্মচারিদেরকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে।

খনির সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ যেকোন ধরণের পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য খনির প্রধান ফটকসহ খনি এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিবার পরিজন নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন খনির আবাসিক এলাকায় বসবাসরত কর্মকর্তা ও কর্মচারিরা।

আন্দোলনরত শ্রমিক ও কর্মচারি ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান ও ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসীদের সমন্বয়ন কমিটির আহবায়ক মিজানুর রহমান মিজান বলেন, আন্দোলনকারিদের দাবি পূরণসহ খনি কর্তৃপক্ষের দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আমৃত্যু অবরোধ কর্মসূচি চলবে। এ সময় খনির কর্মকর্তা-কর্মচারিদেরকে যাতায়াত করতে দেওয়া হবে না। তবে খনি কাজে অবস্থানরত বিদেশী ৩০০খনি বিষেশজ্ঞকে অবরোধের আওতামুক্ত রাখা হয়েছে।

পুলিশের ডিআইজির পক্ষ থেকে কাজে যোগ দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে আন্দোলনরত কয়লাখনি শ্রমিক ও কর্মচারি ইউনিয়নের সভাপতি রবিউল ইসলাম রবির মুঠোফোনে ০১৭১৩ ৬৬২০৪২ নম্বরে একাধিকার ফোন করা হলে ফোনের রিং বাজলেও তিনি ফোনটি রিসিভ (গ্রহণ) করেনি।

খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী হাবিব উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, খনি গেটে কিছু শ্রমিক অবস্থান করছে। পুলিশের উপমহা পরিদর্শক (ডিআইজি) রংপুরের পক্ষ থেকে আন্দোলকারিদেরকে আজ শনিবার (গতকাল শনিবার ২ জুন) সন্ধ্যার মধ্যে কাজে যোগ দিতে বলা হয়েছে।

আন্দোলনকারিরা বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে স্থানীয় সাংসদ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মহোদয়ের কাছে গেছে। একটি মহলের উস্কানীতে খনির কার্যক্রমকে অচলাবস্থায় ফেলে সরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করতেই এই অযৌত্তিক আন্দোলন চলছে। আন্দোলনকারি শ্রমিকরা চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে কথা না বলে বিসিএমসিএল কর্তৃপক্ষকে জিম্মি করে দাবি আদায়ের অপকৌশল চালাচ্ছে। শ্রমিকরা কাজে যোগ না দিলেও চীনা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এক শিফট করে কয়লা উত্তোলন করছে।

উল্লেখ্য, খনির উদ্ভুদ পরিস্থিতির আলোকে জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রাণালয় থেকে উচ্চ পর্যায়ের ৩সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গত ২৬মে শনিবার খনিতে এসে উভয়পক্ষের সাথে কথা বলে আন্দোলনকারিদেরকে কাজে যোগদানের পরামর্শ দেন। কিন্তু আন্দোলনকারিরা কাজে যোগ না দিয়ে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন।

(এসিজি/এসপি/জুন ০২, ২০১৮)