শেখ আহসানুল করিম, বাগেরহাট : বাগেরহাটের রামপালে যমুনা এলপিজি গ্যাসবাহী ট্যাঙ্ক লড়ি রাস্তার পাশে উল্টে পড়ার পর ওই ট্যাঙ্ক লড়ির ট্যাঙ্কারে ফাটল ধরে তা থেকে গ্যাস আশেপাশে ছড়িয়ে পড়ছে।

শুক্রবার রাত তিনটার দিকে খুলনা মোংলা মহাসড়কের বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার সোনাতুনিয়া বাসষ্ট্যান্ড এলাকায় সাড়ে ১৭ মেট্রিক টন এলপিজি গ্যাস বোঝাই ট্যাঙ্ক লড়িটি দূর্ঘটনায় পড়ে। ভোর থেকেই দূর্ঘটনাস্থল সোনাতুনিয়া বাসষ্ট্যান্ড এলাকার সকল দোকানপাঠ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ছড়িয়ে পড়া এলপিজি গ্যাসে যাতে ওই এলাকায় বড় কোন দূর্ঘটনা ঘটতে না পারে সেজন্য মাইকিং করে জনসাধারনকে এলাকা ছেড়ে যেতে ও আগুন না জ্বালাতে বলা হচ্ছে।

বাগেরহাট ও খুলনার ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট দূর্ঘটনা রোধে কাজ করছে। বিকার ৫টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত উল্টে যাওয়া গ্যাসবাহী ট্যাঙ্কারটির উদ্ধার কাজ শুরু করতে পারেনি সংশ্লিষ্টরা। দুর্ঘটনায় লড়ির চালক আব্দুল করিম ও তার সহকারি শহীদুল্লাহ আহত হয়েছেন। তাদের খুলনায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

ফায়ার সার্ভিসের খুলনা কার্যালয়ের উপ পরিচালক মো. আবুল হোসেন বলেন, দূর্ঘটনার পর ট্যাঙ্কার ফেটে গ্যাস বেরোচ্ছে। এই গ্যাস আশেপাশে ছড়াচ্ছে। আমাদের চারটি ইউনিট কাজ করছে। এজন্য আমরা সতর্ক রয়েছি। দূর্ঘটনাস্থল সোনাতুনিয়া বাসষ্ট্যান্ড এলাকার সকল দোকানপাঠ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

ছড়িয়ে পড়া এলপিজি গ্যাসে যাতে ওই এলাকায় বড় কোন দূর্ঘটনা ঘটতে না পারে সেজন্য মাইকিং করে জনসাধারনকে এলাকা ছেড়ে যেতে ও আগুন না জ¦ালাতে বলা হচ্চে। ট্যাঙ্ক লড়িটি উদ্ধারের সময় তা ফেটে গ্যাস ছড়িয়ে পড়ার আশংকা রয়েছে। সেজন্য আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। ওই ট্যাঙ্কারটি উদ্ধারের সময় যাতে কেউ সেখানে না আসে সেজন্য আমরা সতর্ক রযেছি।

যমুনা গ্যাস প্লান্টের ব্যবস্থাপক আমিরুল ইসলাম বলেন, মোংলা প্লান্ট থেকে এই গ্যাসবাহী লড়িটি বগুড়া প্লান্টে যাচ্ছিল। ছড়িয়ে পড়া এই গ্যাসে মানবদেহের কোন ক্ষতি হবেনা। তবে আশপাশের এলাকায় মানুষদের কোন ধরনের আগুন না জ¦ালানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। উদ্ধারকারি যানের অভাবে লড়িটি উদ্ধার কাজে বিলম্ব হচ্ছে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

স্থানীয়রা বলছেন, সকাল থেকে আমরা আতংকিত অবস্থায় রয়েছি। কেউ আগুন জ¦ালাতে বা রান্না করতে পারছেনা। পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস থেকে মাইকিং করার পর এলাকা ছেড়ে সবাই দূরে অবস্থান করছে। রোজার সময়ে রান্না ও খাওয়ার নিয়ে আমরা দুশ্চিন্তায় রয়েছি।

বাগেরহাট জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আরিফুজ্জামান বলেন, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও প্রশাসনের লোকজন দূর্ঘটনা এড়াতে সতর্ক রয়েছে। গ্যাসের লড়িটি তোলার সময় আশেপাশের সবাইকে সরে যেতে আবারও মাইকিং করা হবে।

রামপাল থানার ওসি লুৎফর রহমান বলেন, শুক্রবার রাত তিনটার দিকে মোংলায় অবস্থিত যমুনা গ্যাস প্লান্ট থেকে ১৪ চাকার একটি ট্যাঙ্ক লড়ি সাড়ে ১৭ মেট্রিক টন এলপিজি গ্যাস নিয়ে বগুড়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। পথিমধ্যে রামপাল উপজেলার সোনাতুনিয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পৌছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে উল্টে যায়। কিভাবে ওই লড়িটি উল্টে গেছে তা জানা যায়নি। উদ্ধারকারী যান পৌছালে তা উদ্ধার করা যাবে। দুর্ঘটনা এড়িয়ে কিভাবে তা কিভাবে উদ্ধার করা যায় সেই চেষ্টাই করা হচ্ছে।

(এসএকে/এসপি/জুন ০২, ২০১৮)