স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-রাজউককে লুটপাটের খনি আখ্যা দিয়েছেন একজন সংসদ সদস্য। বলেছেন, প্রভাবশালী আর সরকারদলীয় লোক না হলে ঘুষ ছাড়া রাজউক থেকে বাড়ি তৈরির অনুমতি মেলে না।

সরকারি সংস্থাটির আরেক নাম দুর্ভোগ বলেও মন্তব্য করেন সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ। বিরোধী দলের এই সদস্য বলেছেন, ‘ঘুষ দিতে পারলে ১৫ দিনে প্ল্যান (নকশা) পাস হবে। আর না দিতে পারলে এটা নেই সেটা নেই বলে ১০ বছর লাগবে।’

শনিবার রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে ‘জাতীয় অর্থনীতিতে আবাসন খাত’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তব্য রাখছিলেন জাতীয় পার্টির নেতা। আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে আবাসন খাতের বিষয়ে নানা দাবি তুলে ধরতে এই আলোচনার আয়োজন করা হয়।

রাজধানীতে আবাসিক বা বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণে রাজউকের অনুমোদন বাধ্যতামূলক। আর ভবনের নকশা আগেই পাস করিয়ে নিতে হয়। আর এই অনুমোদনপত্র দিতে সংস্থাটির কর্মীদেরকে ‘খুশি’ করতে হয় বলে অভিযোগ পুরনো।

ঘুষ আদায়ে রাজউক কর্মীরা কী কী কৌশল নেয়, তা তুলে ধরেন কাজী ফিরোজ রশীদ। বলেন, ‘ঘুষ না দিলে রাজউক বলবে পরিবেশ ছাড়পত্র লাগবে, স্যুয়ারেজ, ওয়াসার লাইনের কথা বলে সময়ক্ষেপণ করবে।’

রাজউকে ঘুষ ছাড়াও নির্মাণ কাজে আরও বাড়তি খরচ আছে বলে জানান এই সংসদ সদস্য। বলেন, ‘প্লান পাস হলে এরপর আবার এলাকার মাস্তানকে চাঁদা দিতে হবে। তা না হলে বাড়ি বানাতে দেবে না।’

‘আবার দেখা যাবে রড সিমেন্ট কিনতেও হবে তাদের দেখানো প্রতিষ্ঠান থেকে। এতে ইটের মান খারাপ হলেও বলার কিছু থাকবে না।’

‘তবে প্রভাবশালী ও সরকার দলীয় লোক হলে আলাদা’-যোগ করেন ফিরোজ রশিদ।

‘এই হলো উন্নয়নের অবস্থা। সব জায়গায় অবাধ লুটপাট আর রাজউক হলো লুটপাটের খনি।’

আগামী বাজেটে অপ্রদর্শিত আয় আবাসন খাতে বিনিয়োগের সুযোগ দেয়ারও পরামর্শ দেন সংসদ সদস্য। বলেন, ‘এটা না হলে এ টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাবে।’

‘অনেকে প্লট কিনেছে, কিন্তু রেজিস্ট্রেশন ফি বেশি হওয়ার কারণে রেজিস্ট্রেশন করছেন না।’

রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-রিহ্যাব এবং সেন্টার ফর কমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক-সিসিএন যৌথভাবে এই গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিল বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।

(ওএস/এসপি/জুন ০২, ২০১৮)