মিলন কর্মকার রাজু, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) : পটুয়াখালীর কলাপাড়ার কলাপাড়ার কুয়াকাটা দারুসুন্নাত সালেহীয়া দ্বীনিয়া মাদ্রাসায় প্রধান শিক্ষক মাওলানা মো. রফিকুল ইসলামের উপর হামলা এবং মাদ্রাসা তালাবদ্ধ করে রাখার ঘটনায় বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছে এলাকাবাসী। রোববার (৩ জুন) সকাল ১০টায় কুয়াকাটা খানকায়ে সংলগ্ন মাঠে হামলাকারী জমিয়তে হিযবুল্লাহ মহিপুর থানার সভাপতি আফজাল হাওলাদারের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে মাদ্রাসার ছাত্র, অভিভাবকসহ এলাকাবাসী।

অভিযোগে জানা যায়, গত ২৪ মে (বৃহস্পতিবার) কুয়াকাটা দারুসুন্নাত সালেহীয়া দ্বীনিয়া মাদ্রাসায় প্রধান শিক্ষক মাওলানা মো. রফিকুল ইসলামের কাছে চাঁদা দাবি করে জমিয়তে হিযবুল্লাহ মহিপুর থানার সভাপতি আফজাল হাওলাদার। এ চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তাকে বেধড়ক মারধর করা হয়। চেয়ার দিয়ে আঘাত করে শরীরের বিভিন্ন অংশ জখম করে। এ সময় মাদ্রাসায় থাকা ছাত্ররা আতংকিত হয়ে পড়ে। বিক্ষুদ্ধ আফজাল হোসেন শিক্ষককে মেরেই ক্ষান্ত হয়নি। ওই মাদ্রাসায় অধ্যায়নরত রফিকুল ইসলামের দুই সন্তানসহ মাদ্রাসার ছাত্রদের বের করে দিয়ে মাদ্রাসা তালাবদ্ধ করে চলে যায়। এ কারনে গত ১০ দিন মাদ্রাসা তালাবদ্ধ থাকায় স্থানীয় মসজিদে দুই সন্তানসহ আশ্রয় নেয় শিক্ষক রফিকুল ইসলাম।

স্থানীয়দের অভিযোগ জমিয়তে হিযবুল্লাহ মহিপুর থানার সভাপতি আফজাল হাওলাদারের একক কর্তৃত্ব চলছে গোটা মাদ্রাসায়। তাকে মাদ্রাসা থেকে বিভিন্ন প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে অভিভাবক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের চাঁদা দিতে হয়। বিভিন্ন অনুষ্ঠানের নাম করে ভুয়া রশিদ ছাপিয়ে চাঁদা অদায় করে। এ চাঁদা দিতে না চাওয়ায় এ মাদ্রাসা তালাবদ্ধ করার ঘটনায় বিক্ষুদ্ধ গোটা এলাকার মানুষ।

মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভে অংশ নেয়া শাজাহান বিশ্বাস, মো. দুলাল কাজীসহ একাধিক ছাত্র ও শিক্ষকদের অভিযোগ, একজন শিক্ষকের উপর হামলায় গোটা শিক্ষক সমাজ বিক্ষুদ্ধ। রমজানের মধ্যে একজন রোজাদার শিক্ষককে যে পিটিয়েছে সে মানুষরুপী অমানুষ। তার শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চলবে।

জমিয়তে হিযবুল্লাহ মহিপুর থানার সভাপতি আফজাল হাওলাদার জানান, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তিনি মাদ্রাসা তালাবদ্ধ করে রেখেছেন। শিক্ষকের উপর কোন হামলা করেন নি। এটা তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বলে জানান। তবে আগামী বৃহস্পতিবার মহিপুর থানায় এ বিষয়টি সমাধানে সালিশ বৈঠক হবে বলে জানান।

জমিয়তে হিযবুল্লাহ পটুয়াখালী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হাজী আঃ গফ্ফার মৃধা জানান, তিনি এ ঘটনা শুনছেন। স্থানীয় ভাবে আগামী ২১ রমজান দুই পক্ষের উপস্থিতিতে বিষয়টি সমাধানে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

কলাপাড়ার মহিপুর থানার ওসি মো. মিজানুর রহমান জানান, মাদ্রাসার শিক্ষকদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়ায় থানায় স্থানীয় জমিয়তে হিযবুল্লাহর কয়েকজন প্রতিনিধি এসে দেখা করে এ বিষয়টি জানিয়েছেন। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হলে মহিপুর পুলিশ তাদের সহায়তা করবে বলে জানান।

(এমকেআর/এসপি/জুন ০৩, ২০১৮)