মাদারীপুর প্রতিনিধি : ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের মাদারীপুর অংশের সংস্কার কাজ চলছে ধীরগতিতে। ঈদের আগে কাজ শেষ হবে না বলে দাবি পরিবহণ শ্রমিকদের। এতে করে ঘরমুখো যাত্রীরা দুর্ভোগ পোহাতে হবে বলে যাত্রীরা অভিযোগ করেছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, দীর্ঘদিন স্থায়ীভাবে মেরামত না হওয়ায় ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের মাদারীপুর অংশের ২৫ কিলোমিটার খানাখন্দ আর গর্তে ভরা। সড়কটি অনেক স্থানের কার্পেটিং উচু-নিচু হয়ে এবরো-থেবরো হয়ে ছিল। গত দুই মাস আগে মহাসড়কের ভুরঘাটা থেকে মস্তফাপুর পর্যন্ত কার্পেটিং করা শেষ হয়ে গেলেও বর্তমানে ঈদকে সামনে রেখে মস্তফাপুর থেকে টেকেরহাট পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার সড়ক ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে কার্পেটিং করার কাজ চলছে।

মাদারীপুর সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলা মোড় থেকে বরিশালের সমীন্তের মাদারীপুরের ভুরঘাটা বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত ৪৭ কিলোমিটার সড়ক মাদারীপুর সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর অধীনে রয়েছে।

মহাসড়কটির এই ৪৭ কিলোমিটারের বিভিন্ন অংশ বছর দু’য়েক ধরে ভাঙ্গা চোরা ও খানাখন্দে ভরপুর ছিল। এতে দক্ষিণাঞ্চলের সড়ক পথের যাত্রীরা চরম দুর্ভোগ নিয়ে যাতায়াত করতেন। কিন্তু গত দুই মাস আগে ভুরঘাটা থেকে মস্তফাপুর পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার পথ কার্পেটিং করা শেষ হলেও বাকী অংশের কাজ চলছিল খুবই ধীর গতিতে।

তবে ঈদকে সামনে রেখে কাজের গতি আগের চেয়ে কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। ঈদকে সামনে রেখে মস্তফাপুর থেকে টেকেরহাট পর্যন্ত ১৫ কিলেমিটার সড়ক ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে কার্পেটিংয়ের কাজ করানো হচ্ছে। যার প্রতি কিলোমিটারের ব্যয় ধরা হয়েছে এক কোটি টাকা। এবং টেকেরহাট থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত কোথাও কোথাও কার্পেটিং আর কোথাও কোথাও খানাখন্দ সংস্কার করা হয়েছে।

এই রুট দিয়ে নিয়মিত মালবাহী ট্রাক চালক মজিবর রহমান বলেন, আমি নিয়মিত ফরিদপুর-বরিশাল এই মহাসড়ক দিয়ে যাতায়াত করি। গত দুই মাস ধরেই মাদারীপুরের অংশের রাস্তার কাজ খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে। ঈদের আগে কাজ শেষ হবে বলে মনে হয় না। কিন্তু রাস্তা আগের চেয়ে এখন ভাল হলেও কাজের মান বেশি ভাল হয়নি। এই রাস্তা আগামী দুই বছরও টিকবে না। বড় বড় ট্রাকের চাপে রাস্তার বিভিন্ন স্থানের কার্পেটিং সরে গেছে।’

একই ধরণের কথা বললেন কয়েকটি যাত্রীবাহী পরিবহণের চালক ও হেলপাররা।

মাদারীপুর থেকে ফরিদপুরগামী শুভযাত্রা পরিবহণের চালক কবির মোল্লা বলেন, ‘প্রতিদিন এই রুটে চলাচল করি। রাস্তায় গর্ত আর ভাঙ্গা থাকায় গাড়ি সঠিক নিয়ন্ত্রণে চালানো কষ্টকর। এতে নির্ধারিত স্থানে সময় মত পৌছানো সম্ভব হয়না। এক ঘন্টার রাস্তা শেষ করতে সময় লাগে দেড় ঘন্টা।’

মাদারীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নুরুল নবী তরফদার বলেন, ‘আমরা ঈদের আগে এই সড়কের কাজ প্রায়ই শেষ করে ফেলার চেষ্টা করব। তবে বৃষ্টি হলে আমাদেরই বা কি করার। তাই এখন পুরোদমে কাজ চলছে। সড়কের কোথাও এখন গর্ত নেই। ইটের খোয়া আর পাথর দিয়ে গর্ত ভরাট করা হয়েছে। এখন সড়কে ওভার লেনের কাজ চলছে। আশা করছি ঈদের আগে কাজ শেষ হয়ে যাবে। ঈদ যাত্রীদের এই সড়কে কোন প্রকার দুর্ভোগ হবে না।’

(এএসএ/এসপি/জুন ০৩, ২০১৮)