জামালপুর প্রতিনিধি : জামালপুরের বকসীগঞ্জে রমজান মাসে ইফতার, তারাবি ও সেহেরীর সময় বিদুৎতের লোডশেডিংয়ে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে রোজাদাররা। প্রথম রোজা থেকেই ঘন ঘন লোডশেডিং হচ্ছে। দিনে রাতে ২০ থেকে ৩০ বার বিদুৎ যাওয়া আসা করে। অসনীয় তাপমাত্রা ও ভ্যাপসা গরমে দূর্ভোগে পড়েছে এখানকার মানুষজন। লোডশেডিং নিরসনে স্থানীয় পল্লী বিদুৎ নিচ্ছেনা কোনই পদক্ষেপ। এই নিয়ে ভুক্তভুগি সাধারন মানুষের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। 

পল্লী বিদুৎ বকসীগঞ্জ জোনাল অফিস সুত্র জানায়,বকশীগঞ্জ পল্লীবিদ্যুৎ জোনাল অফিসের আওতায় আবাসিক গ্রাহক রয়েছে প্রায় ৪৪ হাজার,বানিজ্যিক গ্রাহক রয়েছে ৬ হাজার,ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে ১০ টি ও ক্ষুদ্র শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৩৫০ টি। ঘনঘন লোডশেডিং,লো ভোল্টেজ ও প্রায় সময়ই বিদ্যুৎ না থাকায় আবাসিক গ্রাহকরা ভোগান্তির পাশাপাশি শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে ক্ষতির সম্মুখীন।

রমজানে বিদ্যুতের ভেলকিবাজি বেড়েছে কয়েকগুন। গত কয়েকদিন ধরে দিনে রাতে গড়ে প্রায় ৮/১০ ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকেনা। দিনের বেলায় গড়ে ৩/৪ ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকলেও প্রায় ২০/২৫ বার লোড শেডিং হয়। রাতের বেলায় বিদ্যুৎ সুবিধা পাওয়া যায় ২/৩ ঘন্টা। বিশেষ করে ইফতার,সেহরী ও তারাবি নামাজের সময় বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ থাকায় ভোগান্তির শেষ নেই রোজাদারদের। অপরদিকে ঘনঘন লোডশেডিং ও লো ভোল্টেজের কারনে বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ফ্রিজ,টিভি,ফ্যানসহ নানা ইলেকট্রিক জিনিসপত্র বিকল হচ্ছে।

পল্লীবিদ্যুৎ অফিস জানায়, বকশীগঞ্জে বিদ্যুৎ সরবরাহ হয় প্রতিবেশী শেরপুর জেলা থেকে। নয়টি উপকেন্দ্র পার হয়ে এ অঞ্চলে বিদ্যুৎ আসে। যে কোন একটি উপকেন্দ্রে কোন প্রকার ত্রুটি দেখা দিলে বকশীগঞ্জে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।

পৌর শহরের একাধিক ব্যবসায়ী জানান,ঈদের বাজারে মানুষের সমাগম বেশি। কিন্তু বিদ্যুত না থাকায় সারাদিন প্রচন্ড গরমে অস্থির থাকতে হয়। একবার চলে গেলে আসার কোন খবর থাকেনা। এমন অবস্থা চলতে থাকলে ঈদ বাজরে ব্যবসার ক্ষতির মুখে পড়বো আমরা।

শিক্ষার্থী রুজি, শিউলী, তমা, মাহবুব জানান, ঘনঘন লোডশেডিং এর কারনে ভ্যাপসা গরমে ঠিকমত পড়ালেখা করতে পারছিনা। এতে আমাদের পড়ালেখায় দারুন ক্ষতি হচ্ছে। আমরা নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের দাবী জানান ভুক্তভুগি শিক্ষার্থীরা।

পৌর শহরের বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন, দিনে অন্তত ২০/৩০ বার বিদ্যুৎ আসা যাওয়া করে। বিদ্যুত না থাকায় প্রচন্ড গরমে রোযাদারসহ শিশু ও বৃদ্ধদের দারুন কষ্ট হচ্ছে বলে জানান তিনি।

কোহিনুর এমদাদ এগ্রো প্রোডাক্টস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলহাজ্ব এমদাদুল হক এমদাদ বলেন,সামনে ঈদ। কিন্তু ঘনঘন বিদ্যুৎ আসা যাওয়ার কারনে কারখানায় উৎপাদন দারুনভাবে ব্যাহত হচ্ছে। কারখানার যন্ত্রপাতি পুড়ে নষ্ট হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বকশীগঞ্জ পল্লীবিদ্যুত সমিতির ডিজিএম মো.আখতারুজ্জামান বলেন, বকশীগঞ্জ জোনাল অফিসে বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ১৪ মেঘাওয়াট। কিন্তু সরবরাহ পাচ্ছি মাত্র ৬ মেঘাওয়াট। ফলে বিদ্যুৎ সরবরাহে সমস্যা হচ্ছে। আমাদের কিছু করার নেই।

(আরআর/এসপি/জুন ০৭, ২০১৮)