রূপক মুখার্জি, নড়াইল : ২০১০ সালের পর থেকে নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তিকরণ বন্ধ থাকায় আন্দোলন করার জন্য সংশ্লিষ্ঠ শিক্ষকরা রাজপথে নেমেছিলেন। আন্দোলনের এক পর্যায়ে সরকারের পক্ষ থেকে তাঁদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। এমন অবস্থায় বর্তমান সরকারের শেষ বাজেটে নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির জন্য অর্থ বরাদ্দ থাকবে বলে ধারণা ও বিশ্বাস ছিল বঞ্চিত শিক্ষকদের। কিন্তু, দুঃখজনক হলেও নিরেট সত্যটি হলো, ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে এ সংক্রান্ত কোন ঘোষণা নেই। তা ছাড়া, অর্থমন্ত্রী এ বিষয়ে কোন কথাও বলেন নাই। সব কিছু মিলে, ঝুলে গেলো নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির কার্যক্রম।

একটি নির্ভরযোগ্য সুত্রে জানা গেছে, এমপিওভুক্তির জন্য গড়ে ওঠা শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ গত শুক্রবার ঢাকায় রূদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। বৈঠকে এমপিওভুক্তির জন্য ফের আন্দোলন-সংগ্রাম করার সিন্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
জানা গেছে, গত ৭ এপ্রিল জাতীয় সংসদে ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষা খাতে ৫৩ হাজার ৫৪ কোটি টাকার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বাজেটের প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী জানান, শিক্ষার মোট ৫৩ হাজার ৫৪ কোটি টাকার বাজেটের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা খাতে ২২ হাজার ৪৬৬ কোটি টাকা, শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগে ২৪ হাজার ৮৮৮ কোটি টাকা এবং কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগে ৫ হাজার ৭০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির ব্যাপারে অর্থমন্ত্রী কোন বক্তব্য না দেওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা।

প্রসঙ্গত, নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির কার্যক্রম দীর্ঘ ১০ বছর বন্ধ রয়েছে। এ কারনে নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা তাঁদের দাবি-দাওয়া আদায়ের জন্য দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছিলেন। আন্দোলনের “আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন কালে অনেক শিক্ষক অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে গণভবন প্রতিনিধি এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন উপ-সচিব এর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল আন্দোলনরত শিক্ষকদের দাবি পূরণের বিষয়ে আশ্বাস দেন এবং শিক্ষকরা ক্লাসে ফিরে যান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্বাসের পরও নতুন প্রস্তাবিত বাজেটে এমপিওভুক্তির বিষয়ে কোন বরাদ্দ না থাকায় বিষ্মিত ও হতাশ হয়ে পড়েছেন নন-এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা।

এ ব্যাপারে নড়াইলের লোহাগড়ার আমাদা আদর্শ কলেজের প্রভাষক মনিরুল ইসলাম, সমীর বিশ্বাস বলেন, প্রধানমন্ত্রী যখন কোন বিষয়ে আশ্বাস বা প্রতিশ্রুতি দেন, তখন সেই বিষয়টি সরকারের এখতিয়ারভুক্ত হয়। অথচ, এ বিষয়ে বাজেটে কোন ঘোষণা নেই। এ ঘটনায় আমরা বিস্মিত ও হতাশ। তবে আমরা চাই, বাজেট আলাপ-আলোচনায় “থোক বরাদ্দ” এর মাধ্যমে এমপিওভুক্তি নিশ্চিত করা হবে।

(আরএম/এসপি/জুন ০৯, ২০১৮)