রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : যে বয়সে স্কুলের লেখাপড়া আর খেলাধুলা নিয়ে মত্ত থাকার কথা, রোগ যন্ত্রনায় সে বয়সে বিছানায় বন্দী মেধাবী ছাত্রী সাথী (১৩)। অর্থাভাবে চিকিৎসা করতে না পারায় মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে সে। আরোগ্য সম্ভব এমন একটি রোগ যন্ত্রনায় নিয়ে বেঁচে থাকা মেয়েটির নাম সুমাইয়া ইয়াছমিন সাদিক সাথী। সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার ফতেপুর গ্রামের শফিকুল ইসলামের এক মাত্র মেয়ে সে।

সাথীর বাবা শফিকুল ইসলাম জানান, তার জমজ দুই সন্তান। গত ছয় বছর আগে প্রথম সন্তানটি মারা যায়। দ্বিতীয় সন্তান সাথী স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেনীর মেধাবী ছাত্রী। গত দুই বছর আগে একদিন স্কুল থেকে ফেরার পর হঠাৎ অসুস্থ্য হয়ে পড়ে সাথী। তীব্র মাথা ব্যাথা ও জ্বরের চোটে শীর পুড়ে যাওয়ার মতো অবস্থা। এসময় স্থানীয় বাজার থেকে জ্বরের ওষুধ এনে সেবন করানো হয়। এতে সাথীর জ্বর ভলো হয়ে গেলেও শরীর ক্রমশ খারাপের দিকে যেতে থাকে। সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে তার চিকিৎসাও করা হয়। কিন্ত কোন কিছুতেই যেন কাজ হচ্ছিল না। এসময় সাথীর শরীর অবস হয়ে আসাসহ খিচুনী শুরু হয়। যন্ত্রনাদগ্ধ সাথী মাঝে মাঝে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।

একমাত্র মেয়ের অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় চিকিৎসদের পরামর্শে খুলনা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা করানো হয়। সেখানে উন্নতির সামন্যতম লক্ষন দেখা না দেয়ায় তাকে ভারতের একটি চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। এসব করতে টানা দুই বছরে ডাক্তার ফিস, হাসপাতালের বেড ভাড়া ওষুধ ও বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ব্যায় হয়ে যায় পাঁচ লক্ষাধিক টাকা। সাথীর দিন মজুর পিতা দুই কাঠার জমির উপর ভিটে বড়ি বিক্রি করে ও স্বজনদের নিকট থেকে সাহায্য গ্রহন করে। ভেবেছিলেন মেয়ে ভালো হয়ে গেলে দায় দেনা শোধ দেবেন। অর্থাভাবে এখন সাথীর চিকিৎসা তো দুরের কথা ওষুধও কেনাও বন্ধ হয়ে গেছে।

শফিকুল ইসলাম জানান, মেয়েটার দিকে তাকাতে পারিনা। সামান্য কিছু টাকার অভাবে মেয়েটার আমার মরনের দিকে চলে যাচ্ছে। সাথী ধনী ঘরের মেয়ে হলে ওর হয়তো এতো কষ্ট সইতে হতো না। তিনি সাথীর বর্তমান অবস্থা উল্লেখ করে বলেন, এখন মেয়েটির অবস্থা এতটাই খারাপ যে, ২৪ ঘন্টার মধ্যে তিন/চার ঘন্টা সে ঘুমাতে পারে। মাত্র এই সময়টুকুই সে ভালো থাকে। বাদ বাকী ২০-২১ ঘন্টা সে যন্ত্রনায় ছটফট করে। সাথী হাটা চলা করতে পারে না। কথাও বলতে পারে না। সর্বক্ষন তার খিচুনী হয়। খিচুনীর প্রচন্ডতায় লাফিয়ে লাফিয়ে ওঠে সে। ডাক্তাররা জনিয়েছে সাথীর মৃগী রোগ জাতীয় কিছু আছে। তার ব্রেন ও মাথায় শিরার সমস্যা আছে। নিয়মিত চিকিৎসায় এটা ভালো করা সম্ভব।

সাথীর জীবন বাঁচারে অসহায় পিতা শফিকুল ইসলাম দেশের সহৃদয় ও বিত্তবানদের সহায়তা কামনা করেছেন।

সাহায্য পাঠানোর ঠিকানা সঞ্চায়ী হিসাব নাম্বার ০১০০১৩১৮২১৮২৯, জনতা ব্যাংক, বাঁশতলা বাজার শাখা, কালিগঞ্জ, সাতক্ষীরা। মোবাইল নং-০১৭৮৮ ৩৮১৬৭৬। (ছবি আছে)।

(আরকে/এসপি/জুন ১০, ২০১৮)