আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি : বরগুনার আমতলী পৌরশহরে  বাস স্ট্যান্ড না থাকায় চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বাস যাত্রী, শ্রমিকসহ পথচারীদের। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়াতে ভোগান্তি সীমা ছাড়িয়েছে। বৃষ্টিতে ভিজে যাত্রীদের বাসে চড়তে হয় আবার বাস থেকে নামতে হয়। বাস রাখার নির্দিষ্ট কোন স্থান না থাকায় রাস্তার উপরই বাস গুলো রাখা হচ্ছে, ফলে যান চলাচলে মারাত্মক বিঘœ ঘটছে এবং ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের সীমাহীন কষ্ট হচ্ছে।  

পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা, তালতলীর টেংরাগীরি, গলাচিপা থানা ও বরগুনা জেলা সদরের জংশন হলো আমতলী। শুধু আমতলী থেকেই প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন রুটে দুই শতাধিক বাস চলাচল করে থাকে। কিন্তু আমতলী পৌরশহরের কোনো বাস টার্মিনাল না থাকায় বাসগুলো আমতলী হাসপাতাল সড়ক. চৌরাস্তা, বটতলা, একে স্কুল সড়কে বাস থামিয়ে যাত্রী ওঠানামা করায়। যার ফলে প্রতিনিয়ত তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। যাত্রী ও সাধারন জনগনের চলাচলে ব্যাপক সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে এবং রাস্তার উপরে বাস ঘুরাতে গিয়ে প্রায়শই দূর্ঘটনার শিকার হতে হয় জনসাধারনকে।

এ বিষয়ে বাস চালক জাফর মিয়া বলেন, আমতলীতে কোন বাস স্ট্যান্ড না থাকায় রাস্তায় বাস রাখতে হয়। তাই আমাদের অনেক কষ্ট হয়। এখান থেকে বাস ঘুরাতে অনেক সমস্যা হয়। পথচারী জামিল হাসান বলেন, বাস স্ট্যান্ড না থাকার কারনে রাস্তার উপর বাস রাখায় যে ভাবে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে মনে হয় যে আমরা ঢাকা শহরের গুলিস্তান এলাকায় আছি।

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি পৌরশহরের দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত। পৌরশহরের লোকজনকে হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে হলে বাধঘাট চৌরাস্তা ছাড়া যাওয়ার আর কোন বিকল্প রাস্তা নাই। একইভাবে হাসপাতাল থেকে কোন রোগীকে উন্নত এবং জরুরী চিকিৎসার জন্য পটুয়াখালী কিংবা বরিশাল নিতে হলেও বাধঘাট চৌরাস্তা দিয়েই যেতে হয়। রাস্তায় যানজটের কারনে রোগী পরিবহনেও মারাত্বক সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। সাপ্তাহিক বাজারের দিন বুধবার আমতলীর বাধঘাট চৌরাস্তা, বটতলা, হাসপাতাল সড়কে যানজটের কারনে পথচারীদের চলাচলা প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।

৮০-এর দশকে আমতলীর উপজেলা শহর এর সাথে রাজধানী ঢাকার সড়ক পথে বাস সার্ভিস চালু হয়। আর লোকাল বাস আমতলী, পটুয়াখালী, বরিশাল, বরগুনা ও কুয়াকাটায় যাতায়াত করত। ওই দশকের শেষের দিকে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অন্যসব অঞ্চলের সাথে সড়ক পথে যোগাযোগের উন্নয়ন ঘটে। বর্তমানে উত্তরবঙ্গ সহ চট্রগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বাগেরহাট, যশোর, বেনাপোল, বরিশালসহ রাজধানী ঢাকার সাথে যোগাযোগে দিবা-রাত্রী কয়েক শ’ যাত্রী ও পণ্যবাহী যান চলাচল করে। এ ধরনের একটি গুরুত্বপূর্ণ শহরে কোনো বাসস্ট্যাান্ড না থাকায় যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তবে বেশি সমস্যায় পড়তে হয় যে সব পরিবহন ঢাকা থেকে রাতের শেষভাগে আমতলী আসে। শহর-সংলগ্ন বাসিন্দা যাত্রীদের তেমন দুর্ভোগ না হলেও গ্রামীণ জনপদের যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বাস স্ট্যান্ড না থাকায় যাত্রীদের রাস্তার উপর দাড়িয়ে থাকতে হয়।

আমতলী পৌরসভার মেয়র মো. মতিয়ার রহমান জানিয়েছেন, বাস টার্মিনাল নির্মানের জন্য পৌরসভার পরিকল্পনা রয়েছে। দাতা সংস্থার মাধ্যমে আর্থিক দিকটা আমি ব্যবস্থা করতে পারি। কিন্তু টার্মিনালের জন্য প্রয়োজনীয় জমি পৌরসভার নেই। ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসনের কাছে জমি চেয়েছি। জমি পেলে পৌরসভাই বাস টার্মিনাল তৈরী করবে।

(এন/এসপি/জুন ১২, ২০১৮)