রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : প্রবল জোয়ারের তোড়ে সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার বিছট গ্রামেরখোলপেটুয়া নদীর সরদার বাড়ি নামকস্থানে ১০০ ফুট ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বৃহষ্পতিবার দুপুরে এ ভাঙন দেখা দেওয়ায় জোয়োরের পানি উঠে তিন গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে তলিয়ে গেছে শতাধিক ছোট বড় মাছের ঘের। পানি বন্দী হয়ে পড়েছে দু’ শতাধিক পরিবার। রাতের জোয়ারের আগে বাঁধ মেরামত না করা গেলে আরো ১০ গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

জেলা পরিষদের আশাশুনি এলাকার সদস্য মোঃ আব্দুল হাকিম ও মাদ্রাসা শিক্ষক আব্দুর রশীদ জানান, আগে থেকেই বাঁধটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। বিষয়টি পাউবো কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার জানানোর পরও তারা তেমন গুরুত্ব দেয়নি। বেশ কিছুদিন আগে বাঁধটি সংষ্কারের জন্য একজন ঠিকাদার নিয়োগ করা হলেও মূল ঠিকাদার এখানে কাজ করতে আসেনি। একাধিক হাত বদল হয়ে তৃতীয় একজন বাঁধ সংষ্কারের কাজ করতে আসলেও তেমন গুরুত্ব দেননি ওই ব্যক্তি। কাজ ফেলে তিনি কয়েকদিন আগে এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ঠিকাদার যথাসময়ে কাজ শুরু করলে আজ এই অবস্থার সৃষ্টি হতো না। অমাবস্যার কারণে নদীতে জোয়ার বৃদ্ধি পাওয়ায় বৃহষ্পতিবার দুপুরের প্রবল জোয়ারের চাপে হঠাৎ করেই পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ এর ৭(২) নং পোল্ডারের আওতায় বিছট সরদার পাড়ায় বাঁধটি নদী গর্ভে ধ্বসে পড়ে। প্রায় ১০০ ফুট এলাকা দিয়ে নদীর পানি প্রবল বেগে লোকালয়ে ঢুকছে।

ইতিমধ্যে বিছট, বল্লভপুর ও আনুলিয়া গ্রাম পানিতে ডুবে গেছে। তলিয়ে গেছে শতাধিক মৎস্য ঘের। পানি বন্দী হয়ে পড়েছে দু’ শতাধিক পরিবার। গবাদি পশু, হাঁস মুরগি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন পানিবন্দি মানুষ। তিনি আরো জানান, বেড়িবাঁধটি দ্রুত সংস্কার করা না গেলে রাতের জোয়ারে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়বে। প্লাবিত হবে আনুলিয়া ইউনিয়নের নয়াখালি, বাসুদেবপুর, কাকবসিয়াসহ কমপক্ষে ১০টি গ্রাম।

আনুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শেখ আলমগীর আলম জানান, বৃহষ্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ভাঙন দেখা দিলেও বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন কর্মকর্তার সন্ধান মেলেনি। বাধ্য হয়ে তারা ভাটা শুরুর পর থেকে গ্রামবাসিদের নিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে বাঁশ ও বালির বস্তা দিয়ে বাঁধ সংস্কারের কাজ শুরু করেছেন।

এ ব্যাপারে আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাফফারা তাসনীন জানান, সংশ্লিদের দ্রুত রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে। বাধ সংস্কারে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সাতক্ষীরা -২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী অপূর্ব কুমার ভৌমিক জানান খবর পেয়ে সেকশান অফিসার মশিউল আবেদীনকে গ্রামবাসিকে নিয়ে ভাঙনকবলিত এলাকা সংস্কারে রিং বাধ দেওয়ার কাজ শুরু করতে বলা হয়েছে। জোয়ারের জন্য একটু সমস্যা হচ্ছে। আশা করি দ্রুত কাজ শেষ হয়ে যাবে।

(আরকে/এসপি/জুন ১৪, ২০১৮)