স্টাফ রিপোর্টার : দেশ রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানিয়ে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, দেশ বাঁচাতে মানুষ বাঁচাতে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আহ্বানে সাড়া দিয়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের প্রস্তুতি নিন। ইনশাআল্লাহ আমাদের ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামে কাটবে আঁধার, ফুটবে আলো। প্রতিষ্ঠিত হবে কাঙ্খিত গণতন্ত্র ও সুশাসন।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে জনগণ নেই। সেদিন আর বেশি দূরে নয়, যেদিন এই অবৈধ হাসিনা সরকারের পতন ঘটবে। আপনারা সোচ্চার থাকুন।

দলের তৃণমূল নেতাদের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।

তারেক রহমান দলের প্রতিটি জেলা, উপজেলা, থানা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের সভাপতি, সিনিয়র সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, প্রথম যুগ্মসাধারণ সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক, বিএনপি থেকে নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি এবং শেখ হাসিনা সরকার বিরোধী আন্দোলনে হতাহতদের পরিবারে কাছে একটি করে ঈদকার্ড এবং চিঠি পাঠিয়েছেন। আর তাতে দারুণ উজ্জ্বিবীন ও প্রাণসঞ্চার ঘটেছে সর্ব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে। দেশের বিভিন্ন স্থানে চিঠি পাঠানো এখনো অব্যাহত আছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

সরকারের দুঃশাসনের কথা উল্লেখ করে চিঠিতে তারেক রহমান লিখেছেন, ঘন অমানিশায় বাংলাদেশের গণতন্ত্র, সুশাসন নেই, নেই সামাজিক ন্যায়বিচার। জানমালের নিরাপত্তা নেই। শেখ হাসিনার শাসনামলে দেশজুড়ে চলছে খুনি কাপালিকদের উল্লাস। লুটেরা দুর্নীতিবাজ সন্ত্রাসীদের রাজত্বে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কতিপয় সদস্য এখন মানুষ খুন করছে টাকার বিনিময়ে।

বিএনপির সিনিয়র ভাইসচেয়ারম্যান লিখেছেন, পবিত্র ঈদের দিনটিতেও পরিবারের সঙ্গে আমার মতো আপনাদের অনেকেই ঠিকমত আনন্দ উপভোগ করতে পারবেন কি না সেটি নিয়েও অনেকেই উদ্বিগ্ন। গণতন্ত্রের শত্রু মিথ্যাবাদী শেখ হাসিনা গোটা বাংলাদেশকে পরিণত করেছেন কয়েদখানায়।

মাতৃভূমি বাংলাদেশ এখন অসহায় মন্তব্য করে তারেক রহমান লিখেছেন, খুনি-লুটেরা, সন্ত্রাসী, সোনা চোরাকারবারী আর বিদেশে অর্থপাচারকারীদের নেতা শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে নিয়ে গেছে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। দেশের টাকা লুট করে সুইস ব্যাংকসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাচার করছে শেখ হাসিনা ও তার বাহিনী।

তিনি লিখেছেন, শুধুমাত্র সুইস ব্যাংকের হিসাব মতেই আওয়ামী লীগ নেতামন্ত্রীরা ২০০৯ সাল থেকে এই পর্যন্ত প্রতি বছর তিন হাজার কোটি টাকা করে সুইজারল্যান্ডে পাচার করেছেন। শুধু তাই নয় ইউরোপ আমেরিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে শতশত বিলাসবহুল বাড়ি, ব্যবসা-বাণিজ্য গড়ে তোলা হয়েছে। অবস্থা এতটাই ভয়ঙ্কর, খোদ শেখ হাসিনা বাহিনীর সদস্যরা পর্যন্ত তাদের পাতানো সংসদে বলতে বাধ্য হয়েছেন, পাচারের টাকায় কানাডায় গড়ে উঠেছে বেগমপাড়া।

গণতন্ত্রহীন বাংলাদেশ দুর্বিষহ অন্ধকারে নিমজ্জিত উল্লেখ করে তারেক রহমান লিখেছেন, শকুনীর হিংস্র থাবায় রক্তাক্ত প্রিয় মাতৃভূমি। ইনশাআল্লাহ, আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ‘দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও’ আন্দোলনের মাধ্যমে অচিরেই কেটে যাবে অন্ধকার, ফুটবে আলো, প্রতিষ্ঠিত হবে কাঙ্খিত গণতন্ত্র ও সুশাসন।

গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নির্যাতিত পরিবারকে দেয়া চিঠিতে তারেক রহমান লিখেছেন, শেখ হাসিনার দুঃশাসনে কেউ ভালো নেই। আপনারা হারিয়েছেন বাবা-মা ভাইবোন কিংবা আত্মীয়স্বজন বন্ধুবান্ধব। হারিয়েছেন ঘরবাড়ি। নষ্ট হয়েছে আপনাদের অর্থসম্পদ। আপনাদের এই নির্মম যাতনার কথা আমি বুঝি। কারণ শেখ হাসিনার প্রতিহিংসায় আমিও হারিয়েছি আমার পিতা বাংলাদেশের প্রথম প্রেসিডেন্ট ও স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ জিয়াউর রহমানের দীর্ঘদিনের স্মৃতিবিজড়িত বসতবাড়ি, জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে চলছে ধারাবাহিক অপপ্রচার।

বিএনপির সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের ঈদ শুভেচ্ছা জানিয়ে সবুজ জমিনের ওপর শুভ্র মিনার অঙ্কিত ঈদকার্ডে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান লিখেছেন, আপনার ও আপনার পরিবারের প্রতি রইল পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা ও শুভকামনা এবং আপনার মাধ্যমে ঈদ শুভেচ্ছা রইল আপনার এলাকার প্রতিটি মানুষের প্রতি। ঈদ মোবারক।

(ওএস/এটিআর/জুলাই ১২, ২০১৪)