মোঃ আব্দুল কাইয়ুম, মৌলভীবাজার : মনুসহ অন্যান্য নদের  প্রতিরক্ষাবাঁধ ভেঙ্গে সৃষ্ট বন্যায় সদর মৌলভীবাজার সদর উপজেলা সহ জেলার চার উপজেলায় বন্যার কারনে প্রায় ৩০টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম, আঞ্চলিক ও জাতীয় সড়কের অধিকাংশ রাস্তাঘাটের বেহাল দশা তৈরি হয়েছে। 

খানাখন্দ, কার্পেটিং উঠে গিয়ে রাস্তার মাটি বের হয়ে অনেক জায়গায় বড় বড় গর্ত তৈরি হয়ে যানচলাচলে মারাত্মক বিঘ অবস্থা তৈরি হয়েছে। এছাড়াও সা¤প্রতিক মৌলভীবাজার পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের বারইকোনা এলাকার পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া মনুনদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে সৃষ্ট বন্যার কারনে ব্যাপক জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে রাস্তা ঘাটের বেহাল দশা তৈরি হয়।

শহরের ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের জুগিডর এলাকায় বন্যার পানির তীব্র স্রোতে রাস্তার ডিভাইডার উঠে গিয়ে বড় বড় গর্ত তৈরি হলে তার চারপাশে পাথর দিয়ে ঘেরাও করে রাখা হয়েছে, যাতে সড়কে চলাচলকারী যানবাহনগুলি এই বড় বড় গর্তগুলি এড়িয়ে চলে। গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটিতে বন্যার পর থেকে প্রায় তিনদিন যাবত যানচলাচল বন্ধ থাকর পর পানি নেমে গেলে রাস্তা শুকালে আবার যানচলাল সাভাবিক হলে সিলেটের সাথে মৌলভীবাজারের সড়ক যোগাযোগ সাভাবিক হলেও যানচলাচল করছে ধীর গতিতে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে বিভিন্ন বাসা বাড়ি ছাড়াও রাস্তা ঘাটের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সৃষ্ট বন্যায়। পৌর শহরের বড়হাট, বারইকোনা, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক, জুগিডর, পাগুলিয়া, মোস্তফাপুর, ধরকাপন, সদর উপজেলার হিলালপুর সড়ক, খিদুর সড়ক, দিঘিরপার বাজার সড়ক, শাহবন্দর সড়ক সহ অধিকাংশ সড়কের একটু পর পর খাদ তৈরি সহ রাস্তার কার্পেটিং উঠে গিয়ে খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। ফলে এসব সড়ক দ্রুত সংস্কার না করলে যান চলাচলের জন্য অনুপযোগী হয়ে পড়বে ।

বন্যায় জেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শমসের নগর-চাতলাপুর শুল্ক স্টেশনের গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি।এ কারণে চাতলা শুল্ক স্টেশন দিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম গত ১০দিন যাবত বন্ধ রয়েছে।

রবিবার (২৪ জুন) দুপুরের দিকে সম্প্রতি সৃষ্ট বন্যার কারনে রাস্তাঘাটের বেহাল দশা নিয়ে কথা হয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি)র নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কামরুল ইসলাম এর সাথে। এসময় তিনি জানান, এপর্যন্ত বন্যার কারনে তাদের মোট ১ হাজার ৬শ’ কিলোমিটার পাকা সড়কের অন্তত ৪শ’ কিলোমিটার সড়ক সম্পূর্ণ ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এদিকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি)র উপ-সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল হাই বিশ্বাস জানান, বন্যায় ৪শ’ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে অন্তত একশ তেতালি­শ কিলোমিটার সড়ক সম্পূর্ণ ওয়াশ আউট হয়ে একদম ধ্বংশ হয়ে গেছে, এগুলোর কোন অস্তিত্বই নাই।

তিনি জানান, একশ তেতালি­শ কিলোমিটার সড়ক সম্পুর্ণ ধ্বংশ হয়ে যাওয়ায় এসব সড়ক সংস্কার বেশ ব্যায়বহুল, যা টাকার অংকে মোট ৩৩ কোটি টাকার মত হবে।

জেলা প্রশাসক সূত্রে জানা যায়, মনু ও ধলাই নদের ২৫টি স্থান এবং কুশিয়ারা নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে জেলার কমলগঞ্জ, রাজনগর, কুলাউড়া সহ জেলার ৩০টি ইউনিয়ন এবং মৌলভীবাজার পৌরসভার ৪টি ওয়ার্ডসহ সদরের ৩টি ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি ওয়ার্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

(একে/এসপি/জুন ২৪, ২০১৮)