বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটের চিতলমারীর উপজেলার কলাতলা ইউপি চেয়ারম্যান ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা শিকদার মতিয়ার রহমানের দুর্নীতি, অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে একজোট হয়ে মাঠে নেমেছেন ওই ইউনয়নের ইউপি সদস্যরা। 

সোমবার বিকাল উপজেলার চড়চিংগুরি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ইউপি সদস্যরা চেয়ারম্যান শিকদার মতিয়ার রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ এন সংবাদ সম্মেলন করে এলাকাবাসিদের নিয়ে মানববন্ধন করেছেন।

কলাতলা ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এই সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধনে উপস্থিত ৮জন ইউপি সদস্য মনিরুজ্জামান, আবু সাইদ, কামরুল ইসলাম, মো. শেখ সোহাগ, মো. এমদাদুল, আলম খান, সংরক্ষিত ইউপি সদস্য মাহফুজা বেগম ও শাহানা পারভীন ছাড়াও স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা , রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গসহ এলাকাবাসি অংশ নেয়।

সংবাদ সম্মেলনে সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য মাহফুজা বেগম জানান, কলাতলা ইউপি চেয়ারম্যান ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা শিকদার মতিয়ার রহমানের ক্ষমতার দাপট, অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে তারা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। চেয়ারম্যানের দুর্নীতির বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করতে গেলে তিনি চটে গিয়ে বলেন ‘আমি বিনা ভোটে নৌ মার্কার চেয়ারম্যান। কোন ইউপি সদস্যদের ঠ্যাঙ্গানোর সময় আমার নাই। বড় নেতার বারোটা বাজিয়েছি , আর তোরাতো চুনো পুটি।’

বর্তমানে ওই চেয়ারম্যানের অত্যাচারে পরিষদের প্রায় সকল সদস্য অতিষ্ঠ বলে দাবি করে তিনি আরও বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান পবিত্র ঈদ-উল ফিতর উপলক্ষে ইউনিয়নের গরীব ও দুস্থদের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি চাউল আত্মসাৎ করে পাটগাতী বাজারে বিক্রি করে দিয়েছেন। ত্রান ও দুর্যোগ ও মন্ত্রনালয় হতে দুঃস্থদের জন্য বরাদ্দকৃত জমি আছে ঘর নাই এমন ব্যক্তিদের জনপ্রতি একলাখ টাকা মূল্যের বসত ঘর দেওয়ার কথা বলে প্রত্যেক ইউপি সদস্যদের কাছ থেকে ৩০ হাজার থেকে ১ লাখ পর্যন্ত হাতিয়ে নিয়েছে। চেয়ারম্যান মহিলা ইউপি সদস্যদের সামনে অশ্র্যাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। কিন্তু তার ভয়ে ইউপি সদস্য ও সাধারণ মানুষেরা এই নিরব নির্যাতনের কথা কাউকে বলতে পারছেন না। ইউপি সদস্য শেখ সোহাগকে প্যানেল চেয়ারম্যান করার জন্য সকল ইউপি সদস্য সমর্থন করলেও গনতান্ত্রিক পদ্ধতি অনুসরন না করে ব্যক্তি ক্ষমতা ও দাপটের চেয়ারম্যান বিএনপির খাস লোক সিদ্দিক মোল্লাকে প্যানেল চেয়ারম্যান করেছেন।

এছাড়া তিনি বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধি, বিধবাভাতাসহ সকল প্রকার ভাতার জন্য ভাতার জন্য প্রকাশ্যে অর্থ গ্রহণ করেন। ইউনিয়ন পরিষদের নতুন কোন কাজ এলে উক্ত কাজ পাওয়ার জন্য ইউপি চেয়ারম্যানকে অগ্রিম ‘কমিশনের টাকা’ দিতে বাধ্য হন ইউপি সদস্যদের। যেসব ইউপি সদস্যার অগ্রিম টাকা না দেন তিনি তাদের কোন কাজ দেন না। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সকল ইউপি সদস্যরা চেয়ারম্যানের দুর্নীতিসহ সকল , অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহারের বিচার দাবি করেন।

কলাতলা ইউপি চেয়ারম্যান শিকদার মতিয়ার রহমান মুঠোফোনে জানান, সংবাদ সম্মেলনে তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগের কথা উল্লেখ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। স্থানীয় একটি মহল তার রাজনৈতিক সুনাম ক্ষুন্ন করার জন্য এ সকল অপপ্রচার চালাচ্ছে। এছাড়া ঈদের সময় চাল কম পড়ায় তিনি ১০ বস্তা চাল কিনে গরীবদের মাঝে বিতরণ করেছেন বলেও দাবী করেন।

(এসএকে/এসপি/জুন ২৫, ২০১৮)