দীপক চন্দ্র পাল, ধামরাই (ঢাকা) : ঢাকার ধামরাই উপজেলার সুয়াপুর ইউনিয়নের রৌহা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণীর (৭বছরের) ছাত্রী পূর্ণিমা আক্তারকে ধর্ষণের পর হত্যা করেছে দূর্বৃত্তরা।

আজ মঙ্গলবার সকালে সংবাদ পেয়ে ধামরাই থানার পুলিশ এলাকার এক বাঁশ ঝাড়ের ভেতর থেকে ওই শিশু ছাত্রীটির রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার করেছে। তার গোপন স্থানে রক্তক্ষরনের দৃশ্য ও গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছন।

এ ঘটনায় এলাকায় অভিভাবকদের মধ্যে আতংকের সৃষ্টি করেছে। আতংকিত অভিভাবকরা বলেছেন শিশুদের নিরাপত্তা কোথায়,বিশেষ করে নারী শিশুদের ক্ষেত্রে এমন ঘটনায় শিক্ষা জীবন নিয়েও চিন্তায় পড়েছেন এলাকার অভিভাবকরা।তারা বলছেন অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে,ধরা পড়ছে না অপরাধিরা। দ্রুত এঘটনায় অপরাধিদের সনাক্ত করে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবী করেছে এলাকাবাসি।

পুলিশ ও পারিবারিক সুত্রে জানা গেছে,শিশুটি বিদ্যালয় থেকে আসার পর দুপুরে খাবার খেয়ে খেলা করছিল। বাড়ি থেকে শিশুর মা ওই শিশুটিকে রৌহা গ্রামের সামসুল ইসলামের মেয়ে রৌহা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্রী পূর্ণিমা আক্তারকে সোমবার দুপুর ১টার দিকে ডিম ও ডাল কেনার জন্য বাড়ির পাশেই রৌহা বাজারে পাঠায়। দেলোয়ার হোসেনের মুদি দোকান থেকে ডিম ও ডাল কিনে সে আর বাড়ি ফেরেনি। এরপর পরিবারের লোকজন তাকে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুজির পরও না পেয়ে চিন্তি হয়ে পড়ে। শিশু নিখোজের ঘটনায় বিকেলেই মাইকিং করা হয়।

অতঃপর মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে বাড়ি থেকে ৩০০ গজ দুরে মোন্নাপের ঘরের পেছনের একটি বাঁশ ঝাড়ের ভেতরে স্থানীয় লোকজন পূর্ণিমার লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন।

আজ মঙ্গলবার ভোরের শিশু ছাত্রীটির নিথর মৃত বাড়ি থেকে ৩০০ গজ দুরে মোন্নাপের ঘরের পেছনের একটি বাঁশ ঝাড়ের নীচে অল্প পানি থাকা খাদে অর্ধেক পানিতে অর্ধেক ডাঙ্গায় পড়ে থাকতে দেখে লোকজন খবর দিলে পরিবারের লোকজনরা বাবা মা সনাক্ত করে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। মা বাবা ও পরিবারের আহাজাড়িতে এলাকার বাতাস ভাড়ি উঠে।সংবাদ শুনে এলাকার লোক জন এসে শিশুটির বাড়িতে ভীড় করে। চিন্তিত হয়ে পড়েন অন্যান্য অভিভাবকরা।

লোক মুখে এ সংবাদ ধামরাই থানা অবগত হয়ে সকাল দশটায় ঘটনাস্থলে পৌছে শিশুটির মৃত দেহ উদ্ধার করেন পুলিশের এসআই বাবুল শরিফ।

শিশুর মা ফাহিমার আহাজারিতে গোটা পরিবেশ স্তম্ভিত হয়ে পড়ে পড়েছে । তিনি জানান, তার মেয়ে সদাই নিয়ে আর বাড়ি ফিরেনি, যারা এ কাজ করেছে তিনি তাদের ফাঁসি দাবী করেন।

পূর্ণিমার বাবা সামসুল ইসলাম জানান, ভ্যান চালিয়ে এসে মেয়েকে ২০ টাকা দেন ডাল ও ২ টা ডিম আনার জন্য। মেয়েরে কাছে ৪ টাকা লি সে দিয়ে মায়ের জন্য লাল সুতা আনতে বলে ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়েন । তিনি বলেন সব খানে মাইকিং করা হয়। যেখানে লাশ পাওয়া গেছে, সেখানে সোমবার বিকেলেও খোঁজাখুজি করে পাওয়া যায়নি এবং তার কোন শত্রুও নেই বলে দাবী তার।

সুয়াপুর ইউপির ৪ ৫ ৬ নং ওয়ার্ডের মহিলা চৌকিদার রোবেয়া আক্তার বলেন সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশের সাথে করে লাশ ধামরাই থানায় নিয়ে আসেন বলে জানান। তিনি বলেন, খুব খারাপ কাজ হয়েছে। এর শাস্তি হওয়া প্রয়োজন।

স্থানীয় এলাকাবাসী ধারণা করে জানান, হয়তো দুর্বৃত্তরা শিশুটিকে ধর্ষণের পর গলাটিপে হত্যা করতে পারে।

উদ্ধাকারী পুলিশের এসআই বাবুল শরিফ বলেন লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। লাশের সোরত হাল রির্পোট শেষে ময়না তদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানে হচ্ছে। তিনি বলেন, শিশুটি রৌহা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণীর ছাত্রী। লাশ উদ্ধারের সময় গোপনাঙ্গ থেকে রক্ত ক্ষরন হচ্ছিল। তবে ময়না তদন্তের পর প্রকৃত বিষয় জানা যাবে বলেন। এঘটনায় একটি মামলার প্রস্ততি চলছে বলে জানান।

(ডিসিপি/এসপি/জুন ২৬, ২০১৮)