তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক : প্রযুক্তির দুনিয়ায় মানুষের যে বিষয়টি সবচেয়ে ঝুঁকির মুখে পড়েছে তা হলো গোপনীয়তা। একে রক্ষা করা সত্যিই কঠিন বিষয়। গুগল, বিং, ইয়াগু কিংবা অন্য সার্চ ইঞ্জিনগুলো ব্যবহারকারীর আইপি ঠিকানা এবং সার্চের বিষয়গুলো রেকর্ড করে রাখে। এসংক্রান্ত বিষয় গুগল তুলে ধরেছে তাদের ‘প্রাইভেসি অ্যান্ড টার্মস এফএকিউএস (ফিক্রোয়েন্টলি আস্কড কোশ্চেন্স)’-এ। কিন্তু এসব আমরা কয়জনই বা পড়ি।

অবস্থান প্রকাশ পায় এমন কিছু

বিশেষজ্ঞরা দেখেছেন, কারো সার্চের ইতিহাস বিশ্লেষণ করে তার জন্মভূমি, শহর, প্রতিবেশী, বয়স, লিঙ্গ বের করা কোনো ব্যাপার নয়। অথচ যিনি সার্চ করছেন তিনি হয়তো কিছু না ভেবেই তথ্য খুঁজে যাচ্ছেন। বছরখানেক আগে নিউ ইয়র্ক টাইমসের কলামিস্ট ডেভিড লিওনহার্ড ভৌগোলিক অবস্থানের সঙ্গে কিভাবে সার্চের নিয়ম বদলায় তা ব্যাখ্যা করেন। যারা সাধারণ সামাজিক নিরাপত্তা, বিশেষ ধরনের অস্ত্র কিংবা নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে বেশি সার্চ দেয়, তারা অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত দেশ বা অঞ্চলে বাস করে। এভাবে সার্চের কোনো একটি বিষয়ে একেবারে বাড়ির ঠিকানা দিয়ে দেবে গুগলকে।

স্বাস্থ্যগত বা ওষুধসংক্রান্ত

আপনার জীবনের স্পর্শকাতর তথ্যগুলোর একটি স্বাস্থ্যগত তথ্য। গুগলে যা সার্চ দেবেন সে তথ্যসহ আপনার আইপি অ্যাড্রেস কিংবা গুগল অ্যাকাউন্ট সংশ্লিষ্টি তথ্য রেকর্ড করার অধিকার সংরক্ষণ করে কম্পানি। ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভেনিয়ার অ্যানেনবার্গ স্কুল ফর কমিউনিকেশনের এক গবেষক টিম লিবার্ট জানান, স্বাস্থ্যবিষয়ক তথ্য যারা খোঁজে তাদের ৮০ শতাংশ তথ্য থার্ড-পার্টির কাছে চলে যায়। কেউ যদি এইচআইভি/এইডস নিয়ে সার্চ দেয়, তবে এর সঙ্গে তার অতীতের অন্যান্য সার্চের ইতিহাস বিশ্লেষণ করে সে যে এইডসের রোগী তা বের করে ফেলা হবে।

নিরাপত্তাহীনতা সংক্রান্ত

নিরাপত্তাহীনতার বিষয়ে জানাটা অনেক কম্পানির ব্যবসার নোংরা কৌশল হয়ে ওঠে। যেকোনো মানুষ নিরাপত্তাহীনতা থেকে মুক্তি চায়। আবার এগুলো এক ধরনের দুর্বলতা, যা অপরাধীদের কাছে সুযোগ হয়ে ওঠে। কাজেই আপনি যখন গুগলে নিজের দুর্বলতার জানান দিচ্ছেন, তখনই আপনি ঝুঁকির মুখেও পড়ছেন।

সন্দেহজনক কোনো জিনিস

বছর দুয়েক আগে একটি গল্প ইন্টারনেটে বেশ ছড়িয়ে পড়ে। গুগলে সন্দেহজনক জিনিস খোঁজার কারণে আমেরিকার একটি পরিবারকে আটক করা হয়। ওই পরিবারের সদস্যরা ‘ব্যাকপ্যাক’ আর ‘প্রেসার কুকার বম্ব’ লিখে বেশ কয়েকবার সার্চ দিয়েছিল। পরে গৃহকর্ত্রী বলেন, ‘আমার স্বামী ব্যাকপ্যাক খুঁজছিলেন। আমার দরকার ছিল প্রেসার কুকার। ওই সময়টি বোস্টন বম্বিং আলোচিত ঘটনা। তখন আমার অতি উৎসাহী ২০ বছরের সন্তান স্রেফ আগ্রহের বশে হয়তো ‘বম্ব’ লিখে সার্চ দিয়েছিল। এ ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে নিন।’

(ওএস/এসপি/জুন ২৮, ২০১৮)