রানীশংকৈল (ঠাকুরগাও) প্রতিনিধি : ঠাকুরগায়ের রানীশংকৈল ডিগ্রী কলেজে গত ২৪ জুন প্রভাষক(রাষ্ট্র বিজ্ঞান) কর্তৃক ফরম পুরণে জালিয়াতির কারনে ডিগ্রী ২য় বর্ষের প্রায় অর্ধশতাধিক  শিক্ষার্থীর পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিলো। পরে এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণ করে দেয় কলেজ কর্তৃপক্ষ। 

ডিগ্রী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তাজুল ইসলাম বৃহস্পতিবার মুঠোফোনে বলেন, ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এবং অভিযুক্ত প্রভাষক লুৎফর রহমান লিটনকে ১৫ দিনের মধ্যে সন্তোষজসক জবাব চেয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। এ ছাড়াও জালিয়াতির স্বীকার শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণ করে দেওয়া হয়েছে।

জানা যায়, ডিগ্রী কলেজের রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের রানীশংকৈল শাখার হিসাব নম্বরে জমা হতো ফরম পুরণের নিধারিত টাকা। আর সে ব্যাংকের সিল ও ব্যাংক কর্মকর্তার স্বাক্ষর জাল করে ঐ প্রভাষক শিক্ষার্থীদের নিকট টাকা নিয়ে ডিমান্ট রিসিভ সরবরাহ করেন। ফরম পুরণ বাবদ কলেজ কর্তৃপক্ষ ফি নির্ধারণ করেছিলেন তিন হাজার সাতশত টাকা

গত ২৪ জুন জালিয়াতির বিষয়টি নিশ্চিত করেন ডিগ্রী কলেজের হিসাবরক্ষক । আর সেদিনেই ছিলো বোর্ড কর্তৃক দেওয়া ফরম পূরণের শেষ দিন। শিক্ষার্থীদের দেওয়া বক্তব্য অনুযায়ী এ ঘটনা ঘটিয়েছেন ঐ কলেজের রাষ্ট্র বিজ্ঞানের প্রভাষক লুৎফর রহমান লিটন। তার বাড়ী উপজেলার বন্দর(ডাবতলী) নামক এলাকায়। এদিকে অর্নাস কোর্সেরও ফরম পুরণের একাধিক শিক্ষার্থীর টাকা নিয়ে এমন প্রতারনা করা হয়েছে বলে জানা যায়।

ডিগ্রী কলেজের হিসাবরক্ষক মাইনুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের ফরম পুরণের ডিমান্ট লিষ্ট গত ২৪ জুন যে পরিমাণ সরবারহ করা হচ্ছে তার থেকে বেশি পরিমাণ ব্যাংক রিসিভ ডিমান্ট লিষ্ট আমাদের কাছে জমা আসছে এ দেখে আমার সন্দেহ হলে বিষয়টি আমি ব্যাংক কর্তৃক নিশ্চিত হতে গেলেই বেরিয়ে আসে এ জালিয়াতির ঘটনা।

জালিয়াতির শিকার শিক্ষার্থী মাসুদ রানা বলেন, আমাকে লিটন স্যার বলেছিলো তুমিসহ তোমার বন্ধুরা যারা ফরম পুরনের টাকা কম দিতে চাও তারা আমাকে টাকা দিয়েও আমি কম করে দিবো তাই আমি স্যারকে আমারটাসহ আটজনের তিন হাজার টাকা করে মোট চব্বিশ হাজার টাকা দিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি এ প্রতারনা করবে তা তো আমরা জানি না।

একইভাবে প্রতারণার শিকার কোহিনুর, সুমি,কুলসুম আবু হানিফ, হারুন আশরাফ আলী শিক্ষার্থী কেদে কেদে বলেন একটু কম টাকাই ফরম পূরণের জন্য লিটন স্যারের কথায় তিনাকে টাকা দিয়েছিলাম তিনি আমাদের সংশ্লিষ্ট ব্যাক কর্তৃক জমা হয়েছে মর্মে সিল স্বাক্ষরসহ ডিমাণ্ট ফরম আমাদের দিয়েছেন আমরা যথা নিয়মে কলেজে জমা দিতে গেলেই ধরা পড়ে এ জালিয়াতি। আমরা তো অন্য কাউকে টাকা দেয়নি নিজের কলেজের স্যারকে টাকা দিয়েছি তিনি যদি আমাদের সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করে জালিয়াতি করেন তাহলে আমরা আর কি শিখবো বা কি করবো কাকে বিশ্বাস করবো বলে মন্তব্য করেন।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত প্রভাষক লুৎফর রহমান লিটন বলেন,আমার বিরুদ্বে উঠা অভিযোগটি ভিত্তিহীন অহেতুক আমার উপরে দোষ চাপানো হচ্ছে।

রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের রানীশংকৈল শাখার ম্যানেজার রমজান আলী বলেন, বিষয়টির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

(কেএএস/এসপি/জুন ২৮, ২০১৮)