শেখ আহসানুল করিম, বাগেরহাট : দক্ষিণ কোরিয়ায় কর্মদক্ষতার স্বীকৃতি পেলো বাগেরহাট শহরের মিঠা পুকুর এলাকার বাসিন্দা জিতেন্দ্রনাথ বিশ্বাসের ছেলে বিজন বিশ্বাস। ইপিএস কর্মী হিসেবে দক্ষিণ কোরিয়ায় যাওয়া বিজন বিশ্বাস মৃতপ্রায় তার কোম্পানীতে কৃতিত্বের সাথে কাজ করার মাধ্যমে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিনত করতে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখায় দক্ষিণ কোরিয়ার জেলা শহর ওমসং গুন কর্তৃপক্ষ এ বিশেষ সম্মাননা প্রদান করেন। 

চলতি মাসে এক আনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিজন বিশ্বাসসহ অন্যান্য সম্মাননা প্রাপ্তদের হাতে সনদ তুলে দেন ওমসং গুন জেলার গভর্ণর লি পিল ইয়োং। ইপিএস কর্মী হিসেবে দক্ষিণ কোরিয়ায় আসা বিজন বিশ্বাস কোরিয়ার ছুংছং প্রদেশের ওমসং গুনের এয়ার পিংক নামের কোম্পানীতে কাজ করতেন।

কোম্পানীটি বিভিন্ন ধরণের নির্মাণ সামগ্রী তৈরী করে থাকে। কঠোর পরিশ্রম, নিরলস প্রচেষ্টায়, মৃতপ্রায় কোম্পানিকে সচল কোম্পানিতে ফিরিয়ে আনতে বিজনের রয়েছে ব্যাপক ভূমিকা ও অসামান্য অবদান। তারই কর্ম দক্ষতা ও পরিশ্রমের চূড়ান্ত নমুনা রেখে নিজের ও দেশের জন্য নিয়ে এলেন বিরল সম্মান।

দক্ষিণ কোরিয়ার ওমসং গুন কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি বিভিন্ন কোম্পানী ভিজিট করে দুইজন কোরিয়ান এবং বিজন বিশ্বাসকে কঠোর পরিশ্রমী কর্মী হিসেবে নিশ্চিত করে। ওমসং গুন জেলা কর্তৃপক্ষ মালিকের সহায়তায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখে বিজনকে পুরুস্কৃত করে। এই এওয়ার্ড প্রদানের ক্ষেত্রে টেকনিক্যাল কাজ, প্রডাকশন কোয়ালিটি দেখা হয়। ওমসং গুন কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি বাংলাদেশ দূতাবাসও তার কাজের স্বীকৃতি দিয়েছে। দূতাবাসের পক্ষ থেকে দক্ষিণ কোরিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম বিজনের এই অর্জনে ভূয়সী প্রশংসা করে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিজন দাসের কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ তাকে সার্টিফিকেট প্রদান করেছেন।

বিজন বিশ্বাসের পিতা জিতেন্দনাথবিশ্বাস ও ভাই স্বপনবিশ্বাস জানান, ২০০৬ সালে ওয়ার্ক পারমিট কন্ট্রাক্ট নিয়ে প্রথমে কোরিয়া যায় বিজন ওরফে বিপ্লব। পরে তিনি দেশে ফিরে আসেন। পুনরায় ২০১৪ সালে ইপিএস প্রোগ্রামে আবারও কোরিয়া যান বিজন বিশ্বাস।

বাগেরহাট পৌরসভার মিঠা পুকুর এলাকার বাসিন্দা বিজন পরিবারের ৫ ভাই ২ বোনের মধ্যে ষষ্ঠতম। ছোটকাল থেকে ক্রীড়া পাগল বিজন সুনাম কুড়িছেন খেলাধুলায়ও। ১৯৯৯ সালে সে জাতীয় সাঁতার প্রতিযোগিতায় রৌপ্য পদক অর্জন করেন।

বিজনবিশ্বাস মুঠোফোনে বলেন, আমার কোম্পানীর কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশে একটি কারখানা করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আমারও ইচ্ছা আছে কোরিয়ার অভিজ্ঞতাকে দেশের কাজে লাগানোর। নিজ দেশে কারখানা করতে পারলে দেশে অনেক মানুষের কর্মসংস্থানেরও সুযোগ হবে। কোম্পানীর মালিক আমাকে বিশেষ ভাবে স্নেহ করেন। এখন আমার অধীনে পুরো একটি ডিপার্টমেন্ট চলে। আমাদের কোম্পানীতে অনেক বিদেশী থাকলেও বাংলাদেশী ছিলো না। ইতিমধ্যে মালিক বাংলাদেশী নিয়োগ দেওয়া ব্যাপারে আগ্রহী হয়েছেন এবং বাংলাদেশী ইপিএস কর্মীকে নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন।

বিজন বিশ্বাস আরো বলেন ‘আমরা দায়িত্বের সাথে কাজ করলে দেশের সুনাম বৃদ্ধি পাবে এবং সেই সাথে কোরিয়াতে বাংলাদেশী কর্মীদের চাহিদাও বৃদ্ধি পাবে।

(এসএকে/এসপি/জুন ২৯, ২০১৮)