লাইফস্টাইল ডেস্ক : দাঁত দিয়ে নখ কাটার অভ্যাস আমাদের অনেকেরই আছে। উত্তেজনার মাত্রা যখনই ছাড়ায়, তখনই হাত নিজে থেকেই যেন উঠে আসে মুখের কাছে।

দাঁত দিয়ে নখ কাটার এই আপাত নিরীহ অভ্যাসটি কিন্তু মারাত্মক বিপদ ডেকে আনতে পারে।

ইংল্যান্ডের সাউথপোর্ট শহরের বাসিন্দা, ২৮ বছর বয়সী লুক হ্যানোম্যানেরও অভ্যাসটি ছিল। আর এই অভ্যাসই তাকে মারাত্মক বিপদে ফেলেছিল। কপালজোরে অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন লুক।

লুক জানান, দাঁত দিয়ে নখ কাটতে গিয়ে ভুলবশত ত্বকের কিছুটা অংশ কেটে ফেলেন তিনি। বিষয়টিকে তেমন আমল দেননি তিনি। কিন্তু ঘটনার পরের দিন থেকেই একটা জ্বর জ্বর ভাব, কাঁপুনি, দুর্বলতা অনুভব করেন তিনি। কিন্তু এই বিষয়গুলোকেও তেমন গুরুত্ব না দিয়ে নিয়মিত অফিস যাতায়াত করতে থাকেন তিনি।

কিন্তু সমস্যা হলো ঘটনার তিন দিন পর। রাতে নির্দিষ্ট সময় ঘুমাতে গেলেও পরের দিন ঘুম ভাঙল দুপুর ২টায়। এত দীর্ঘ সময় এর আগে কখনোই ঘুমাননি লুক। এবার চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতেই চোখ কপালে উঠল তার।

চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে জানান, আর একদিনও দেরি করলে তাকে বাঁচানোই যেত না। এরপর হাসপাতালে চার দিন চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে ওঠেন লুক।

কী হয়েছিল লুক হ্যানোম্যানের? চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, দাঁত দিয়ে নখ কাটার সময় ত্বকের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে সেপসিস হয়ে গিয়েছিল।

কী এই সেপসিস? চিকিৎসকদের মতে, যে কোনো ছোটখাটো সংক্রমণ (ইনফেকশন) থেকেই সেপসিস হতে পারে। সাধারণত আমাদের শরীরে কোনো ইনফেকশন হলে তা এক জায়গায় সীমাবদ্ধ থাকে এবং সারা শরীরে তা ছড়িয়ে পড়া থেকে তাকে আটকায় আমাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা। কিন্তু সংক্রমণের মাত্রা তীব্র হলে তা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। ফলে সারা শরীরে প্রদাহ সৃষ্টি হয়। এটিই হলো সেপসিস। এটি মোটেই উপেক্ষা করার মতো বিষয় নয়। সেপসিস এবং সেপটিক শকের কারণে প্রতি বছর সারা বিশ্বে অন্তত ৬০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়।

এবার দেখে নিন সেপসিসের মূল উপসর্গগুলো কী কী...
১। প্রচণ্ড দুর্বল ভাব
২। কথা জড়িয়ে আসা
৩। শ্বাস কষ্ট হওয়া
৪। প্রবল কাঁপুনি বা পেশিতে ব্যথা
৫। সারা দিনে একবারও মূত্রত্যাগ না হওয়া
৬। ত্বক বিবর্ণ হয়ে যাওয়া

হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার পর লুক হ্যানোম্যান এখন অনেকটাই সতর্ক। দাঁত দিয়ে নখ কাটার অভ্যাস অনেকটাই কাটিয়ে উঠেছেন। আপনাদের যাদের এই অভ্যাস রয়েছে, তারাও একটু সতর্ক হলেই সামলে নিতে পারবেন।

(ওএস/এসপি/ জুন ৩০, ২০১৮)