মাহমুদুল হাসান সজীব, সুজানগর (পাবনা) : পাবনার সুজানগরে চিনাবাদামের বাম্পার ফলন ও হাট-বাজারে চিনাবাদামের দাম বেশি পওয়ায় চরাঞ্চলে কৃষক খুশি ও মুখে আনন্দের হাসি দেখা যায়। এসব এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় সুজানগর উপজেলার  ভায়না, সাতবাড়ীয়া, মানিকহাট, নাজিরগঞ্জ ও সাগরকান্দী ইউনিয়নে রয়েছে পদ্মার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চাল। 

এসব চরাঞ্চলের জমিতে ধান-পাট ও অন্য ফসল তেমন ভাল হয় না, এ কারণে কৃষকরা বেশিরভাগ সময় এ সকল জমিতে ধান-পাট আবাদ করে লোকসানে পড়েন। এ জন্য তারা লোকসান থেকে বাঁচতে এ বছর উপজেলা কৃষি বিভাগের পরার্মশে সকল ইউনিয়নের পদ্মার চরাঞ্চলের বেশিরভাগ জমিতে চিনাবাদম আবাদ করেছে।

উপজেলা কৃষি অফিসার ময়নুল হক সরকার জানান, এ বছর এ চারটি ইউনিয়নে ৬‘শ হেক্টর জমিতে চিনাবাদাম আবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এসময় আবহওয়া অনুকূলে থাকায় আবাদ হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫০ হেক্টর বেশি জমিতে। অর্থৎ মোট সাড়ে ৬‘শ হেক্টর জমিতে চিনাবাদম আবাদ করা হয়। অনুকূলে আবহওয়া আর সঠিক সময়ে সার বিষ দেওয়ায় সর্বত্র চিনাবাদামের ফলন ভালো হয়েছে।

এসব চরাঞ্চল থেকে অনেক কষ্টে নৌকা, ঘোড়ার ও গরুর গাড়িতে করে চিনাবাদাম কৃষকের বাড়ীতে আনতে হয়, এরপর চিনাবাদামের গাছ থেকে বাদাম সংগ্রহ করে রদ্রুতে শুকিয়ে বাজার জাত করতে হয়।

উপজেলার শ্যামসুন্দরপুর গ্রামের কৃষক জুয়েল মৃধা জানান, তিনি এ বছর ৫ বিঘা জমিতে ঢাকা-১ জাতের বাদাম আবাদ করেছেন, প্রতি বিঘা জমিতে ফলন হয়েছে প্রায় ১১/১২মণ যা, অন্য বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুন। তাছাড়া বর্তমানে হাট-বাজারে চিনাবাদমের দামও বেশ ভালো।

উপজেলার ভায়না গ্রামের কৃষক আব্দুর রউফ জানান, প্রতি বিঘা জমিতে চিনাবাদাম আবাদ করতে সার, বীজ ও শ্রমিকসহ উৎপাদন খরচ হয় প্রায় ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা, বর্তমান বাজার মূল্যে প্রতি বিঘা জমিতে উৎপাদিত চিনাবাদামের মূল্য প্রায় ২৫/২৬ হাজার টাকা যা, উৎপাদন খরচের চেয়ে প্রায় ১৮ হাজার টাকার বেশি। ফলে চিনাবাদাম চাষিরা বর্তমান এ বাজারে ভীষণ খুশি, এ কারণে কৃষানীরা মনের আনন্দে চিনাবাদাম গাছ থেকে চিনাবাদাম সংগ্রহ ও প্রক্রিয়া জাত করায় ব্যস্ত সময় পাড় করছেন।

(এমএইচএস/এসপি/জুলাই ০১, ২০১৮)