সঞ্জিব দাস, গলাচিপা (পটুয়াখালী) : গত চার দিনে গলাচিপায় শাহ জামাল (৩৫) নামের এক খামারীর প্রায় ৮৫০টি হাঁস মারা গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে গলাচিপা সদর ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামে। ক্ষতিগ্রস্থ শাহজামাল অভিযোগ করে বলেন, প্রাণিসম্পদ অফিস গিয়ে কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে ক্ষতিগ্রস্থ শাহজামাল অফিসে আদৌ কোনো যোগাযোগ করেনি এবং নিজেদের মনগড়া ভ্যাকসিন পুশ করেছে বলে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জানান। 

জানা যায়, লামনা গ্রামের হালিম গাজীর ছেলে মোঃ শাহজামাল ব্র্যাক চিকনিকান্দি শাখা থেকে ২লাখ টাকাসহ আরও ঋণ নিয়ে কালিকাপুর গ্রামে হাঁসের খামার গড়ে তোলে। তার খামারে ১হাজার ৫০টি হাঁসের বাচ্চা ছিল। সেখান থেকে ঠান্ডা জনিত কারণে ৭দিনের ২শতটি বাচ্চা মারা যায়। বাকী প্রায় ৮৫০টি হাঁস ২মাস বয়সী সবই ছিল বিক্রয়যোগ্য এবং প্রায় ৯০টি হাঁস ২৩০টাকা গড়ে বিক্রি করা হয়েছে। এরই মধ্যে ডাক প্লেগ নামের এক ধরনের রোগ দেখা দেয়। যার কারণে বৃহস্পতিবার থেকে রবিবার পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে খামারে বাকি হাঁসগুলো মারা যায়। বিক্রিত হাঁস গুলো মারা যাওয়ার কারণে ক্রেতাকে টাকা ফেরত দিতে হয়েছে খামারির। মৃত হাঁসগুলোকে মাটির নিচে পুতে ফেলা হয়েছে বলে খামারি শাহজামাল জানান।

এ রোগের লক্ষণ হলো হাঁস চাল ধোয়া পানির মতো সাদা রঙের ঘোলাটে অথবা সবুল ও নীল রঙের পায়খানা কওে থাকে। এছাড়া মাঝে মাঝে চোখ দিয়ে পানি ঝরতে দেখা যায়। এ রোগে আক্রান্ত হলে হাঁসের মারা যাওয়া সম্ভাবনা শতকরা ৮০-৯০ভাগ। এর ভ্যাকসিনের মাধ্যমে এ রোগকে প্রতিরোধ করা যায়। এছাড়া এ রোগে আক্রান্ত হলে পটাশিয়াম পরম্যাঙ্গানেট দিয়ে বারবার হাঁসের ঘর ধুয়ে দিতে হবে। ১লিটার পানিতে ২গ্রাম কসুমিক্স আধঘন্টা পরপর ৫-৬ দিন খাওয়াতে হবে। এছাড়া ইলেক্ট্রোলাইট বা ডেক্সট্রোলাইট ৫-১০গ্রাম মিশিয়ে হাসকে খাওয়াতে হবে।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তিকে দুইটি মরা হাঁসসহ খবর দিয়ে অফিসে আনা হয়েছে। ভ্যাকসিনের নিয়মাবলী না মেনে ইচ্ছামত হাঁসের শরীরে পুশ করা হয়েছে। যার কারণে হাঁসগুলো মারা গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে সরকারী সহযোগিতা দেয়া হবে বলে তিনি জানান।

(এসডি/এসপি/জুলাই ০২, ২০১৮)