রঞ্জন কৃষ্ণ পন্ডিত, টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার গোহালিয়াবাড়ী ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষক এবং দেউপুর মাস্টার হ্যাচারির পরিচালক আনিসুর রহমান তুলা হত্যার এক সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও রহস্যের জট খুলেনি। হত্যার বিষয়ে নিহতের পরিবারও কিছু বলতে পারছে না। তারা পুলিশের তদন্তের উপর নির্ভর করছেন। ঘটনার পর পরই পরিবারের পক্ষ থেকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে নিহতের স্ত্রী মুছাম্মৎ শাহীনা বেগম।

শিক্ষক আনিসুর রহমান তুলার ভাই উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও জেলা পরিষদের সদস্য ইঞ্জিনিয়ার লিয়াকত আলী নিহতের ফোনের কললিস্ট অনুযায়ী জানান, গত ২৭ জুন বুধবার নিখোঁজ হওয়ার আগে রাত ৮ টা ৩৪ মিনিটে ছেলে সিহাব এর সাথে ফোনে কথা হয়। পরে ভোর ৪ টার দিকে তার প্রতিষ্ঠান মাস্টার হ্যাচারি থেকে শ্রমিকরা মাছ ধরে বিক্রির জন্য কোথায় নিয়ে যাবে জানার জন্য ফোন দিলে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ফোন বন্ধ পেয়ে টাঙ্গাইল শহরের বাসায় আছে কিনা তা জানার জন্য তার স্ত্রীর কাছে শ্রমিকরা ফোন দেয়। কিন্ত সেখানেও তিনি ছিলেন না। বাড়িতে ফোন দিয়ে শ্রমিকরা জানতে পারে তিনি বাড়িতেও নেই। হয়তো মাদ্রাসায় যেতে পারে ভেবে সেখানেও লোক পাঠায় কিন্তু সেখানেও তাকে পাওয়া যায়নি। এলাকায় গুজব রটে তুলা হুজুর ঢাকায় মারা গেছে।

গুজব অনুযায়ী বড় ভাইকে দিয়ে ঢাকা মেডিকেলে ২টি মর্গে খোঁজ নিয়েও তার কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরে অনেক খোঁজাখুজি করেও সন্ধান না পাওয়ায় ২৮ জুন বৃহস্পতিবার কালিহাতী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। পরে কালিহাতী থানার এস আই আব্দুল ওয়াহাব বিকেলে তদন্ত করতে ঘটনাস্থলে গেলে কিছুক্ষণের মধ্যেই নিজ বাড়ীর পাশে পুকুর ঘাটে তুলা হুজুরের জুতা পাওয়া যায়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে স্থানীয় যুবকরা ফুটবল খেলা শেষে পুকুরে গোসল করতে গেলে যুবকরা পুকুরে তার লাশ দেখতে পায়। স্বজনরা মাদ্রাসা শিক্ষক আনিসুর রহমান তুলার লাশটি সনাক্ত করেন। পুলিশ বিভিন্ন দফায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কয়েকজনকে আটক করলেও হত্যার মূল রহস্য এখনও উদ্ঘাটিত হয়নি।

এ বিষয়ে কালিহাতী থানা অফিসার ইনচার্জ মীর মোশারফ হোসেন জানান, হত্যার বিষয়ে আমরা দুই দফায় বিভিন্ন জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। ঘটনার ক্লু কিছুটা উদ্ঘাটিত হলেও তদন্তের স্বার্থে এ বিষয়ে কোন কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান তিনি। খুব দ্রুত এ মামলার রহস্য উদ্ঘাটিত হবে বলে তিনি দাবি করেন।

(আরকেপি/এসপি/জুলাই ০৩, ২০১৮)