চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : চট্টগ্রামে সাংবাদিক কন্যা রাইফার মৃত্যুর ঘটনায় ভুল চিকিৎসার অভিযোগে বেসরকারি ম্যাক্স হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ১১টি ত্রুটি খুঁজে পেয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহ) ডা. কাজী জাহাঙ্গীর হোসেনের বেসরকারি হাসপাতালটিকে দেওয়া নোটিশে তিনটি বিভাগে বিধি মোতাবেক লাইসেন্স নবায়ন না করা, কতর্ব্যরত চিকিৎসক ও নার্সদের নিয়োগপত্র না থাকাসহ বিভিন্ন ত্রুটি উল্লেখ করা হয়।

গত রবিবার হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে ঢাকায় ফিরে ডা. জাহাঙ্গীর হোসেন বুধবার ম্যাক্স হাসপাতালকে ত্রুটিবিষয়ক নোটিস দিয়ে বিস্তারিত তথ্য ১৫ দিনের মধ্যে পাঠানোর নির্দেশ দেন। অন্যথায় হাসপাতালের কার্যক্রমসহ লাইসেন্স বাতিল করা হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়। ডা. জাহাঙ্গীর হোসেন নোটিশ পাঠানোর কথা স্বীকার করেছেন।

নোটিশের অনুলিপিতে দেখা যায়, তিনি হাসপাতাল, প্যাথলজি ও ব্লাড ব্যাংক- তিনটি বিভাগে ১১টি ত্রুটির কথা উল্লেখ করেছেন। ম্যাক্সের অনুকূলে লাইসেন্স নবায়নের জন্য নতুন নবায়ন ফরমে আবেদন করা হয়নি, তাদের ১৫০ শয্যার হাসপাতাল থাকলেও তাদের কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সদের কোন নিয়োগপত্র তারা পাননি।

এছাড়া বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, ক্লিনার ও অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই। একই সাথে ম্যাক্সের প্যাথলজি বিভাগের অনুকূলেও নতুন নবায়ন ফরমে আবেদন হয়নি যা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিধি মোতাবেক নয়।

প্যাথলজির রিপোর্ট প্রদানকারী চিকিৎসক, প্যাথলজিস্ট ও মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টের কোন তথ্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে পাওয়া যায়নি বলে নোটিসে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া হাসপাতালে কোনো ব্লাড ব্যাংক নেই বলেও উল্লেখ আছে।

তাছাড়া সম্প্রতি ‘রাইফাকে হত্যা করা হয়েছে’ অভিযোগ তুলে চট্টগ্রামের সাংবাদিক সংগঠনগুলো আন্দোলন এবং দায়ীদের বিচার দাবি করে আসছে। দাবির মুখে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

রবিবার রাতে কমিটির প্রধান জাহাঙ্গীর হোসেন ম্যাক্স হাসপাতাল পরিদর্শন করে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, এই হাসপাতালের লাইসেন্সের ত্রুটি আছে এবং অচিরেই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি নাজিমুদ্দিন শ্যামল বলেন, বেসরকারি ম্যাক্স হাসাপাতালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সাথে প্রতিষ্ঠানটির এমডি ডা. লিয়াকতের হাসপাতাল নিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতি তদন্তে দুদককে এগিয়ে আসতে হবে।

(জেজে/এসপি/জুলাই ০৫, ২০১৮)