কাপাসিয়া (গাজীপুর) প্রতিনিধি : দুই পুত্রের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন আশিতিপর বৃদ্ধ পিতা। আমেরিকা প্রবাসী দুই পুত্রের নির্যাতনের শিকার হয়ে গতকাল  শুক্রবার সকালে কাপাসিয়া প্রেস ক্লাবে জনাকির্ণ সংবাদ সম্মেলনে কান্নাজড়িত কন্ঠে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পিতা- সাহাবুদ্দিন। বয়োবৃদ্ধ সাহাবুদ্দিনের গ্রামের বাড়ি গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার বারিষাব ইউনিয়নের লোহাদী গ্রামে। তিনি অবসরপ্রাপ্ত জেলা সমবায় কর্মকর্তা।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমি সারা জীবন চাকুরী করে যা আয়-রোজগার করেছি, তা দিয়ে ৩ পুত্র এবং ২ কন্যাকে উচ্চ শিক্ষিত করেছি। ১৯৮৯ ইং সালে জমিজমা বন্ধক দিয়ে বড় ছেলে মাহমুদ মঞ্জু’কে প্রথমে আমেরিকা পাঠাই। পরবর্তীতে দ্বিতীয় ছেলে মাহমুদ জাহাঙ্গীরকেও আমেরিকা পাঠাই।

১৯৯৬ সালে অবসরে যাবার পর স্ত্রীসহ আমেরিকা চলে যাই। সেখানে ছেলেদের কাছে কিছু দিন থাকার পর তারা বিভিন্ন কৌশলে আমার ঢাকার বাড়ি এবং গ্রামের জায়গা-জমি লিখে নেয়ার পায়তারা করতে থাকে। নিরোপায় হয়ে আমেরিকাতেই অন্যত্র বসবাস করি এবং এক পর্যায়ে ২০১৪ সালে স্ত্রীসহ বাংলাদেশে চলে আসি। আমার ছোট ছেলে মোঃ মামুন সিরাজুল আলম এবং তার স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে উত্তরার বাসায় শান্তিতে বসবাস করছিলাম।

আমেরিকা প্রবাসী দুই ছেলে ও তাদের স্ত্রীরা মাঝে মাঝে বাংলাদেশে এসে আমাদের কিছু আত্মীয়-স্বজন ও আমাদেরকে প্রাণ নাশের হুমকী দিচ্ছে। উত্তরার ৯ নং সেক্টরের বাড়িটি ৪ তলার প্ল্যান অনুমোদিত। অভিযুক্ত দুই ছেলে পিতাকে ফুসলিয়ে বাড়ির কাগজপত্র নিয়ে গিয়ে গোপনে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে ৬ তলার অনুমোদন করেছে। এক পর্যায়ে তাদের পিতাকে ডাক্তার দেখানোর কথা বলে নিয়ে গিয়ে গত ২৪/৮/২০১৫ইং তারিখে কৌশলে উত্তরার বাড়ির দুই তালা এবং গ্রামের বাড়ির কিছু জমি লিখে নিয়ে গেছে বলে পিতা অভিযোগ করেছেন।

দুই ছেলের শশুড় বাড়ির দুই আত্মীয় খালেদ আব্দুল্লাহ জনি ও জানে আলম কনক প্রভাব খাটিয়ে তাদের সকল অপকর্মের সহযোগিতা করছে। তারা বিভিন্ন সময়ে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী নিয়ে উত্তরার বাড়ি এবং লোহাদীর গ্রামের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। দুই ছেলে ও তাদের স্ত্রীদের কুপরামর্শে সন্ত্রাসীরা পিতা সাহাবুদ্দিন ও ছোট ছেলে মোঃ মামুন সিরাজুল আলমকে নানা ভাবে ভয় ভীতি ও প্রান নাশের হুমকীসহ পুলিশি হয়রানী করছে।

বিভিন্ন ঘটনার প্রেক্ষিতে কাপাসিয়া থানা, উত্তরা পশ্চিম থানা, ঢাকা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট এবং ঢাকা জজকোর্টে সাধারণ ডায়রী ও দলিল বাতিলের মামলা দায়ের করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে সাহাবুদ্দিনের সাথে ছোট ছেলে মোঃ মামুন সিরাজুল আলম ও এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। তিনি প্রশাসনের কাছে ন্যয় বিচার পাওয়ার সহযোগিতা কামনা করেন।

(এসকেডি/এসপি/জুলাই ০৬, ২০১৮)