মাদারীপুর প্রতিনিধি : ‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর এদেশে রাজাকারদের প্রধান্য দেয়া হয়েছিল। এদের প্রতিষ্ঠিত করেছিল জিয়াউর রহমান। তারপর থেকে রাজাকাররাই দেশে চাকুরী পেয়ে এসেছে। পরে তারা চেষ্টা করেছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে মানুষের হৃদয় থেকে মুছে ফেলতে। আর এদেশের মৌলবাদীরা এমন ভাবে বাঙালী সন্তানদের সম্মোহিত করেছিল যে, মানুষ মারলেই বেহেস্তে যাওয়া যাবে, এভাবেই তারা জঙ্গী সৃষ্টি করল। এগুলোই তাদের মাথায় ঢুকানো হলো। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ নিয়ে যারা ঘৃণা করল, বিরোধিতা করল, তারাই বলল এতোদিন পর কেন মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ মনে রাখতে হবে।’

শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজৈর উপজেলা সদরের রাজৈর-গোপালগঞ্জ কেজেএস মডেল ইনষ্টিটিউশন সরকারীকরণে বিশেষ অবদান রাখায় নৌপরিবহণমন্ত্রী শাজাহান খানকে দেয়া এক গণ-সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা বলেন।

মন্ত্রী ১৯৪৪ সালে ইউরোপের বিশ্বযুদ্ধের উদাহরণ টেনে বলেন, আজকেও ইউরোপে খুঁজে খুঁজে বের করে যুদ্ধাপরাদীর বিচার করা হচ্ছে। আর আমার দেশে যুদ্ধাপরাধীদের নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করেছেন জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়া। যুদ্ধাপরাধীদের নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করে দেশটি কোথায় নিয়ে গিয়েছিল। তখন কোন উন্নতি হয়নি, আমরা অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু হয়ে গিয়েছিলাম। দুর্নীতিতে ১ নম্বর চ্যাস্পিয়র হয়েছিলাম।

তিনি বলেন, আজ আর আমাদের দেশের পরিস্থিতি এমন নেই। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর আমরা যখন যুদ্ধারাধীদের বিচার শুরু করলাম, তখন ওরা আমাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াল। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আছে বলে আজকে বাংলাদেশে উন্নয়ন হচ্ছে, শেখ হাসিনা আছে বলেই দেশে অর্থনেতিক উন্নয়ন হচ্ছে, জঙ্গী-সন্ত্রাস মোকাবেলা করে আমরা দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছি।

২০১৫ সালে বিএনপি-জামায়াত আন্দোলনে নামে পরিবহণের চালক হেলপার, পুলিশ, শ্রমিক, ব্যাংক কর্মচারী, নারী-শিশুসহ অসংখ্য সাধারণ মানুষকে পেট্রোল মেরে আগুনে পুড়িয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। তার বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলন শুরু করলাম, আমাদের মিছিলের ওপর বোমাবাজি করা হলো, বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখানো হলো। আমরা নির্ভয়ে আন্দোলন করেছিলাম। বিএনপি-জামাত সে আন্দোলন ব্যাহত করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু পারেনি। খালেদা জিয়া বলেছিলেন বিজয় লাভ করে ঘরে ফিরবেন, কিন্তু, আমাদের লাগাতার আন্দোলনের মুখে খালেদা জিয়া পরাজিত সৈনিকের মতো খালি হাতে বাড়ি ফিরতে বাধ্য হয়েছিলেন।

নৌমন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, মানুষ পুড়িয়ে মারার জন্য খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বিএনপি নেতারা বলেন এটা রাজনৈতিক কারণে নাকি তাকে আটকানো হয়েছে। খুন যদি রাজনীতি হয়, এই খুনের রাজনীতি বাংলার মানুষ চায়না। আর যারা মানুষ খুন করবে তাদের বিরুদ্ধে আজ বাংলার জনগণ ঐক্যবদ্ধভাবে দাঁড়িয়েছে।

শাজাহান খান আরো বলেন, আমাদের আর বসে থাকার সুযোগ নেই। লড়াই একটা হবে আর তা হবে স্বাধীনতার পক্ষ ও বিপক্ষ শক্তির মধ্যে। আমাদের সেই লড়াইয়ে জিততে হবে। সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিতে হবে, বঙ্গবন্ধু যেমন সবাইকে ডাক দিয়ে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন, আজকে শেখ হাসিনা ঐক্যের ডাক দিচ্ছেন। আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করে দেশে উন্নয়নকে আরো এগিয়ে নিতে হবে।

বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি সাবেক যুগ্ম সচিব সুষেন রায়ের সভাপতিেেত্ব অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সরোয়ার হোসেন, রাজৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহানা নাসরিন, পৌর মেয়র শামীম মুন্সী প্রমুখ।


(এএসএ/এসপি/জুলাই ০৭, ২০১৮)