সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) : নেত্রকোনা কেন্দুয়া উপজেলার মাসকা ইউনিয়নের জয়কা সাতাশি উচ্চ বিদ্যালয়ের আহবায়ক কমিটির সভাপতি হতে মাসকার সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও ছাত্রলীগ নেতা আব্দুস ছালাম বাঙ্গালীর নেতৃত্বে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তপন চন্দ্র সরকারের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।

ঘটনাটি ঘটে শনিবার পরিক্ষা চলাকালীন সময়ে বেলা অনুমান ১২ টা ৫ মিনিটের দিকে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পরলে পুলিশ তা নিয়ন্ত্রনে আনে।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তপন চন্দ্র সরকার জানান, আহবায়ক কমিটির সভাপতি পদের জন্য স্থানীয় এম.পি ইফতিকার উদ্দিন তালুকদার পিন্টু গত মাসের ২৪ জুন আব্দুস ছালাম বাঙ্গালীর জন্য বিদ্যালয় পরিদর্শক বরাবর একটি ডিও লেটার দেন। এর অনুলিপি তাকেও দেয়া হয়।

অপর দিকে উপজেলা আওয়ামীলীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক শহিদুল হক ফকির বাচ্চুর সভাপতি হবার জন্য গত মাসের ১ জুন স্বাক্ষরিত আরেকটি ডিও লেটার বিদ্যালয় পরিদর্শক বরাবর, জমা দেন। এটির অনুলিপিও তার নিকট শহিদুল হক ফকির বাচ্চু জমা দেন ২৬ জুন।

এ নিয়ে দু পক্ষ থেকেই তার উপর চাপ বাড়তে থাকে। প্রধান শিক্ষক জানান শনিবার আব্দুস ছালাম বাঙ্গালী দুপুর অনুমান ১২ টা ৫ মিনিটের দিকে ১৪/১৫ জন লোক নিয়ে বিদ্যালয়ে যান। প্রধান শিক্ষক আব্দুস ছালাম বাঙ্গালী সহ সকলকে বারান্দায় বসতে বলেন কিন্তু ছালাম বাঙ্গালী তার জামার কলারে ধরে ভেতরে নিয়ে দরজা বন্ধ করে তাকে একটি সাদা ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দিতে বলে।

সাদা ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দিতে রাজী না হলে ছালাম বাঙ্গালী ও অন্যান্য লোকজন তাকে মারপিট শুরু করে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর আদায় করে নেয়। এ ব্যাপারে আব্দুস সালাম বাঙ্গালীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিদ্যালয়ে গিয়ে ডিও ল্যাটারের বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানালে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাদের কোন সন্তোষজনক জবাব না দিয়ে চলে যেতে চান। এসময় তাকে তার হাত ধরে কক্ষে নিয়ে বসানো হয়েছে, কোন মারপিট করা হয় নি। এমনকি ষ্ট্যাম্পে কোন স্বাক্ষরও নেয়া হয়নি।

এদিকে নেত্রকোনা-৩ আসনের এম.পি ইফতিকার উদ্দিন তালুকদার পিন্টুর সঙ্গে শনিবার সন্ধ্যা ৭টা ৫৬ মিনিটে মুঠো ফোনে জয়কা সাতাশি উচ্চ বিদ্যালয়ে একটি সভাপতি পদের জন্য দুটি ডিও লেটার দিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি এর সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ডিও লেটার দুটিই দিয়েছি। তবে যেটি সর্বশেষ দিয়েছি সেটিই কার্যকর করার জন্য প্রধান শিক্ষককে বলা হয়েছে। কিন্তু প্রধান শিক্ষক তার নিরপেক্ষতা হারিয়ে পক্ষপাতিত্ব করছেন বলে আমার মনে হয়। যা তার করা উচিত নয়। বিদ্যালয়ের উন্নয়নের স্বার্থেই আব্দুস ছালাম বাঙ্গালীকে সভাপতি করার জন্য সর্বশেষ ডিও লেটার দেয়া হয়েছে।

(এসবি/এসপি/জুলাই ০৭, ২০১৮)