ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার মান্দারবাড়ীয়া ইউনিয়নে অবস্থিত মহেশখোলা গ্রামটি। এই গ্রামের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের চলাচল ও পুড়াপাড়া বাজারের সাথে দ্রুত যোগাযোগর জন্য একটি রাস্তা তৈরী করা হয়। সেখানে নির্মিত হয় ৫০ লাখ টাকা ব্যায়ে একটি ব্রীজ। মান্দারবাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শফিদুুল ইসলাম বিভিন্ন সময় রাস্তাঘাট নির্মানসহ সামাজিক সুরাক্ষা প্রকল্পের টাকা দিয়ে মৎস্যজীবীদের সহায়তা করেন। কিন্তু কাঠগড়া বাওড় ম্যানেজার মুজিবর রহমানের সাথে মৎস্যজীবীদের বিরোধের কারনে মহেশখোলা গ্রামবাসির কপাল পুড়েছে। 

বাওড় ম্যানেজারের ইন্ধনে রাস্তা কেটে রাতারাতি পুকুর খনন করেছেন রকিব উদ্দীন নামে এক ব্যক্তি। কাঠগড়া বাওড় মৎস্যজীবী সমবায় সমিরি সভাপতি আনন্দ কুমার অভিযোগ করেন, মৎস্যজীবিদের মাছ আহরণকৃত মোট অর্থে ৪০% টাকা দেওয়ার নিয়ম থাকলেও ম্যানেজার মুজিবর রহমান ৩০% টাকা প্রদান করে বাকী ১০% টাকা নিজে আতামসাত করেন। এ ব্যাপারে মৎস্যজীবিরা মহাপরিচালক বরাবর আবেদন করায় ম্যানেজার মুজিবর রহমান মৎস্যজীবিদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। তিনি মহেশখোলা গ্রামের মৎস্যজীবিদের শায়েস্তা করার জন্য শ্যামনগর গ্রামের রমজান আলীর ছেলে রকিব উদ্দিনকে দিয়ে ৮নং পুকুরের উত্তর পূর্ব পাশে সরকারী রাস্তার ওপর পুকুর খননে সহায়তা করেছেন। অথচ প্রতিদিন ওই রাস্তা দিয়ে মহেশখোলা গ্রামের মানুষ পুড়াপাড়া বাজারে যাতায়াত করে থাকেন। মৎস্যজীবী নেতা শিব নাথ অভিযোগ করেন, বাওড় ম্যানেজার মুজিবর রহমান কাটগড়া বাওড়ের সরকারী অর্থ ও সম্পদ তছরুপ করছেন। কাটগড়া বাওড়ে ১৪৭ হেক্টর জমি থাকলেও তার সহায়তায় বাওড়ের বিভিন্ন দিকের প্রায় ৭/৮ হেক্টর জমি বেদখল হয়ে গেছে।

বাওড় ম্যানেজার মজিবর দখলদারদের বাওড়ের জমি দখল করতে সহায়তা করেন। সরেজমিন দেখা গেছে, রকিব উদ্দিন মান্দারবাড়ীয়া গ্রামের ওলিয়ার রহমানের নিকট থেকে ১৬ শতক জমি কিনেছেন। জমি কেনার পর রকিব উদ্দিন পুকুর খননের আগে যতবার সার্ভেয়ার দিয়ে জমি পরিমাপ করেছেন ততবার ৮নং পুকুরের উত্তর পাশের জমি পেয়েছেন। কিন্তু বাওড় ম্যানেজার মুজিবর রহমানের সাথে রাতারাতি চুক্তি করে রকিব উদ্দিন ৮নং পুকুরের উত্তর পূর্ব দিকের কিছু অংশ নিয়ে সরকারী রাস্তার ওপর পুকুর খনন করেছেন। সারারাত পুকুর কেটে যাতায়াতের একমাত্র রাস্তাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

মান্দারবাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শফিদুুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, এ ভাবে সরকারী জায়গায় পুকুর কাটা ঠিক হয়নি। তিনি তদন্ত করে সরকারী জায়গা উদ্ধারের দাবী জানান। রাস্তার উপর পুকুর খননকারী মুজিবর রহমান এ নিয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে তিনি বলেছেন মৎস্যজীবীরা আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন।

মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম জানান, তিনি এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়ে সার্ভেয়ারকে তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে বলেছেন। রিপোর্ট পেলে ব্যবস্থা নেব।

এ ব্যাপারে বাওড় ম্যানেজার মুজিবর রহমান জানান, সরকারী জমি দেখে বেড়ানোর আমার এতো লোকবল নেই। রাস্তা কেটে পুকুর করার বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে সেটা বাওড়ের জায়গা নাকি মুজিবরের জায়গা তা আমার জানা নেই।

(জেআরটি/এসপি/জুলাই ০৭, ২০১৮)