সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) : নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ক্ষুরা রোগে কৃষকের শতাধিক গরু আক্রান্ত হয়েছে। আক্রান্ত এসব গরু নিয়ে চিকিৎসার জন্য কৃষকরা বিপাকে পরেছেন।

উপজেলা প্রাণী সম্পদ কার্যালয় থেকে বিভিন্ন গ্রামের দূরত্ব ৮-১০ কিলোমিটার থাকায় আক্রান্ত গরু নিয়ে কৃষকরা প্রাণী সম্পদ কার্যালয়ে চিকিৎসার জন্য যেতে পারছেন না। ফলে স্থানীয় ওষুধ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নিজ উদ্যোগে ওষুধ কিনে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন কৃষকরা।

উপজেলার চিরাং ইউনিয়নের বাট্টা, মোজাফরপুর ইউনিয়নের চারিতলা এবং পাইকুড়া ইউনিয়নের চিটুয়া নওপাড়া গ্রামেই আক্রান্ত গরুর সংখ্যা বেশি। এছাড়া বড়তলা, গোপালাশ্রম, মোজাফরপুর, মামুদপুর, তেতুলিয়া, মহরিয়া, নয়াপাড়া, গ্রামেও ক্ষুরা রোগে গরু আক্রান্ত হচ্ছে। গোপালাশ্রম গ্রামের কৃষক নূরুন্নবি খান (এবলাস মিয়া) জানান, ক্ষুরা রোগে আক্রান্ত গরুর রোগ নিরাময়ে সরকারি ভাবে চাহিদা মোতাবেক ভ্যাকসিন পাওয়া যায় না। তাছাড়া অফিসের লোকজনকে চিকিৎসার জন্য গ্রামে আনতে হলে কৃষকের হাত থেকে বিভিন্ন খরচ বহন করতে হয়।

পাইকুড়া ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নওপাড়া গ্রামের নূরুল ইসলাম জানান, ক্ষুরা রোগে তার নিজেরই একটি আক্রান্ত হয়েছে। আক্রান্ত গরুর চিকিৎসা তিনি ব্যক্তিগত ভাবেই করে যাচ্ছেন। চিটুয়া গ্রামের কৃষক মানিক মিয়া বলেন, গত বছর অনেক গরুর ক্ষুরা রোগ হয়েছিল, এবছরও কিছু কিছু গরুর ক্ষুরা রোগ দেখা দিয়েছে। রোগ সারাতে কৃষকরা নিজেদের উদ্যোগেই ওষুধের দোকান থেকে ওষুধ কিনে চিকিৎসা করাচ্ছেন। সরকারি পশু হাসপাতাল দূরে থাকায় সেখানে গরু নিয়ে চিকিৎসার জন্য কৃষকরাও যায় না অফিস থেকেও লোকজন খুব একটা আসে না।

ক্ষুরা রোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা খোর্শিদ দেলোয়ার বলেন, উপজেলার ৩/৪ টি গ্রামে গরুর ক্ষুরা রোগ দেখা দিয়েছিল। আমরা খবর পেয়ে এ রোগ বিষয়ে কৃষকদের সচেতন হতে পরামর্শ দিয়েছি। তাছাড়া অফিসে যারা ভ্যাকসিনের জন্য এসেছেন বরাদ্দকৃত যে পরিমান ভ্যাকসিন আছে, সেই পরিমান ভ্যাকসিন কৃষকদের দেয়া হয়েছে।

জনবল সংকটের কথা উল্লেখ করে প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা বলেন, এমনিতেই একটি পৌরসভা সহ ১৩টি ইউনিয়নে মাত্র ৪ জন বি.এফ.এ (মাঠ কর্মী) আছেন। এর মধ্যে ৩টি পদই দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে। ভেটেরেনারী সার্জনের একটি পদ, ইউ.এল.এ একটি এবং সি.সি.টি (অফিস সহকারী) একটি পদ সহ মোট ৬ টি পদ দীর্ঘদিন ধরে শূণ্য থাকায় জনগনের চাহিদামত সেবা দিতে আমাদেরকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

(এসবি/এসপি/জুলাই ০৯, ২০১৮)