সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জের সয়দাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গত ৪ বছরের স্লিপের (স্কুল লেভেল ইমপ্রুভমেন্ট প্রোগ্রাম) টাকার সঠিক কোন হিসাব নেই স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে। সরেজমিনে বিষয়টি দেখতে গেলে স্কুলের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা পূর্ণিমা ঘোষ তা দেখাতে ব্যার্থ হন। আর স্কুলের জন্য বরাদ্দকৃত দুটো ল্যাপটপই ব্যবহার করছে সভাপতির পরিবারের সদস্যরা। তবে সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা জানান, স্লিপের টাকা বরাদ্দ হলেও উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে নির্ধারিত জিনিস নিয়েই সে টাকা পরিশোধ করতে হয়।

অভিযোগের বিষয়ে স্কুলের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক জানান, স্কুলের নিরাপত্তার অভাবের কারনে ল্যাপটপ দুটি তার বাসায় রাখা হয়েছে। আর সবে মাত্র নতুন প্রধান শিক্ষিকাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে এই স্কুলে তাকে খুব শীঘ্রই ল্যাপটপ দুটি বুঝিয়ে দেয়া হবে। স্লিপ প্রকল্পের আওতায় প্রতি বছর বরাদ্দকৃত ৪০ হাজার টাকা গত ৪বছরে কোন খাতে খরচ করা হয়েছে, তার কোন সঠিক জবাব তিনি দেননি। যদিও তিনি দাবী করেন এই টাকায় শিশুদের জন্য খেলনা সহ অন্যান্য সরঞ্জাম কেনা হয়েছে। কিন্তু সেই সরঞ্জাম দেখতে চাইলেও তিনি দেখাতে ব্যার্থ হন।

বিষয়টি নিয়ে এই স্কুলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা পূর্ণিমা ঘোষ বর্তমানে যিনি পাঁচ ঠাকুরী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে দায়িত্বরত আছেন। তিনি জানান, এই টাকা দিয়ে স্কুলের বৈদ্যুতিক কাজ সহ স্কুল নতুন করে রং করা হয়েছে। আর প্রতিবছর বরাদ্দের সময় উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকেই নানা সরঞ্জাম সরবরাহ করে টাকা উপজেলা শিক্ষা অফিসই নিয়ে নেয়। এ সময় তিনি শিক্ষকদের রুমের দেয়ালে থাকা প্যানা ব্যানার দেখিয়ে বলেন, এগুলো অফিস সরবরাহ করা হয়েছে। যার মুল্য স্লিপ ফান্ড থেকে পরিশোধ করতে হয়েছে।

উল্লেখ্য, ডেপুটেশন অবস্থায় কোন স্কুলের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব নেয়ার বিধান না থাকলেও বিগত ৮ বছর তিনি অবৈধভাবে এই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে ছিলেন। সে বিষয়ে তিনি বলেন তিনি যোগদান করার পর প্রধান শিক্ষক অবসরে যাবার কারনে আর শিক্ষক দায়িত্ব না নেয়ায় তিনি দায়িত্ব নিয়েছিলেন। তবে এভাবে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকার দায়িত্ব নেয়া অবৈধ কিনা তা তিনি জানেন না।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুস সালেক জানান, ডেপুটেশনে থাকা কোন শিক্ষক প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব নিতে পারেন না। তবে এখানে কেন এমনটি করা হয়েছিলো তা তিনি খতিয়ে দেখবেন।

আর স্লিপের টাকার বিষয়ে তিনি জানান, অফিস থেকে কোন একটা জিনিস কেনার জন্য প্রতিটি স্কুলকেই নির্দেশনা দেয়া হয়। তবে তা অফিস থেকে সরবারহ করা হয়না। আর স্কুল কর্তৃপক্ষ যদি শুধু প্যানা ব্যানার কিনেই তাদের টাকা শেষ করে ফেলেন, সে দায় তাদের। তবে উত্থাপিত অভিযোগ খতিয়ে দেখে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন তিনি।

(এমএসএম/এসপি/জুলাই ১১, ২০১৮)