রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সোর্সের কথামত এক নিরীহ যুবককে মাদকসেবী বানিয়ে বাড়ি থেকে তুলে এনে নির্যাতনের পর ৩০ হাজার টাকা আদায় করার অভিযোগ উঠেছে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ থানার সহকারি উপপরিদর্শক রুবেল হোসেনের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার রাত সন্ধ্যায় সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার উজয়মারি গ্রামের বাড়ি থেকে ওই যুবককে তুলে আনা হয়।

কালিগঞ্জ উপজেলার উজয়মারি গ্রামের আমির আলী গাজীর ছেলে ইসমাইল হোসেন(২২) জানান, উপজেলার চরদহ গ্রামের খোকন মিস্ত্রীর ছেলে খালিদ হোসেন দীর্ঘদিন ধরে পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করছে। বর্তমানে খালিদের সঙ্গে কালিগঞ্জ থানার সহকারি উপপরিদর্শক রুবেল হোসেনের দহরম মহরম রয়েছে। এক সময় খালিদের সঙ্গে তার ও ছাত্রলীগ নেতা নাসিরউদ্দিনের মধুর সম্পর্ক ছিল। বর্তমানে তাদের অনিয়ম ও দূর্ণীতির কারণে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চান না তিনি।

খালিদের সঙ্গে চলতে না যাওয়ায় তারই পরামর্শে সহকারি উপপরিদর্শক রুবেল হোসেন তাকে মাদকসেবী বানিয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দিকে বাড়ি থেকে তুলে আনেন। তাকে থানায় না নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা অফিসের পাশে নিয়ে রুবেল হোসেন ও খালিদ তাকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে জখম করে। ৫০ হাজার টাকা না দিলে তাকে ক্রসফায়ারে দেওয়ারও হুমকি দেওয়া হয়। একপর্যায়ে তার বাবা ধার দেনা করে মঙ্গলবার দিবাগত রাত দু’ টোর দিকে ৩০ হাজার টাকা দিলে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।

ইসমাইল হোসেন জানান, বাড়িতে যেয়ে তিনি স্থানীয় ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা নেন। বিষয়টি জানতে পেরে সাবেক উপাজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমাণ্ডার আব্দুল হাকিমসহ কয়েকজন ক্ষুব্ধ হন। তাদের পরামর্শ অনুযায়ি বুধবার সকালে বাবা ও মাকে নিয়ে তিনি একটি ভ্যানে শুয়ে কালিগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা অফিসে আসেন। এ অনিয়ম ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে সংবাদ সস্মেলন করার ঘোষণা দিলে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাদেরকে ডেকে নিয়ে রুবেল হোসেনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ও খালিদসহ সংশ্লিষ্ঠদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে তারা একটি অভিযোগ লিখে থানায় জমা দিয়ে বাড়ি ফেরেন।

জানতে চাইলে কালিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাসান হাফিজুর রহমান বলেন, খালিদ হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা নেওয়া হবে। সহকারি উপপরিদর্শক রুবেল হোসেনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

(আরকে/এসপি/জুলাই ১১, ২০১৮)