পিরোজপুর প্রতিনিধি : পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়াম ও দুনীর্তির  অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগ উঠেছে, মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময় গভীর নলকুপ প্রদান, বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে নলকুপ দেয়ার আশ্বাস দিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন প্রকৌশলী আব্দুল খালেক হাওলাদার।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, গত ২০১২-১৩ অর্থ বছরে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের জন্য বরাদ্দকৃত ৭০টি গভীর নলকুপের অধিকাংশই অর্থের বিনিময় তার খুশিমত ব্যক্তিদের বরাদ্দ দেওয়া হয়। এছাড়াও এর সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের কাছ থেকে স্থাপিত নলকুপের প্লাটফর্ম তৈরি করে দেওয়ার কথা বলে প্রতি প্লাটফর্ম বাবদ তিন হাজার টাকা করে প্রায় সোয়া ২ লাখ টাকা নিয়ে নেয়। কিন্তু ওই প্লাটফর্মগুলো নির্মান না করে পুরো টাকাই আত্মসত করেছেন তিনি।
এছাড়া চলতি অর্থবছরের বরাদ্দকৃত গভীর নলকুপ স্থাপন ও পাকা পায়খানা নির্মাণেরও একই অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পিরোজপুর জেলা নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে দেয়া উপজেলার পাতিলাখালির নুরুল ইসলামের স্ত্রী সোহেলী বেগমের অভিযোগে জানা গেছে, ওই অফিসের চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী সোহরাব হোসেনের মাধ্যমে প্রকৌশলী আ. খালেক হাওলাদার ৫২ হাজার টাকার বিনিময় ১টি গভীর নলকুপ দেয়ার কথা বলে না দিয়েই টাকা আত্মসাত করেছেন।

এ ব্যাপারে ওই অফিসের কর্মচারী সোহরাব হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি স্যারের নির্দেশে ওই মহিলার কাছ থেকে টাকা এনে স্যারকে দিয়েছি মাত্র। এরপর আর কিছুই জানি না। এছাড়া উপজেলার মালিখালী ইউনিয়নের গোলারহাটের জান্নাতুল মাউথ মহিলা মাদরাসার নামে বরাদ্দকৃত গভীর নলকুপটিও মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে বরাদ্দ দেন উপজেলার উওর জয়পুর গ্রামের মৃত মেনাজ উদ্দিন মল্লিকের পুত্র আকরাম হোসেন মল্লিকের বাড়িতে।
এ ছাড়া জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে পিরোজপুর জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল ঠিকাদারবৃন্দের পক্ষে এস, আলম নামের এক ঠিকাদারের দেয়া অভিযোগে জানা গেছে, পিরোজপুর জেলার নির্বাহী প্রকৌশলীর সহায়তায় ওই আঃ খালেক হাওলাদার এমন সব অনিয়ম করছেন। ওই অভিযোগে আরো জানা গেছে, গত অর্থ বছরে জেলার মোট ৪৭৬টি পাকা পায়খানার জন্য বরাদ্দকৃত মোট ৩২ লাখ ২৫ হাজার ৬ শত টাকার কাজ স্থানীয় কোন ঠিকাদারকে না দিয়ে আইডিপি প্রকল্পের পিডি’র আত্মীয় বরিশালের কাটপট্টি রোডের মেসার্স সাইফুল ইসলাম নামের এক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে ওই কাজ দেন জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী। স্থানীয়দের দেয়া অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বরাদ্দকৃত মোট ৭৫টি পায়খানার কাজ সমাপ্ত না করেই মোটা অংকের উৎকোচ গ্রহন করে বিল পরিশোধ করে দেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে।

এসব অনিয়ামের ব্যাপারে স্থানীয়রা নাজিরপুর উপজেলা চেয়্যারমানসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই অফিসের একাধীক কর্মচারীরা ওই কর্মকর্তার এসব অভিযোগের বিষয়ে স্বীকার করে জানান, তিনি আমাদের মাধ্যেমে অনেকের কাছ থেকেই নলকুপ দেওয়ার কথা বলে টাকা এনে আত্মসৎ করেছেন। এসব অভিযোগের বিষয়ে কথা হলে অভিযুক্ত উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী আ. খালেক হাওলাদার এ সব অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, তার বিরুদ্ধে আনা এসব অভিযোগ মিথ্যা। তিনি সব সময়ই সঠিকভাবে কাজ করেন।
(এসএ/এএস/জুলাই ১৩, ২০১৪)