স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর : সৌর বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত এখন উত্তরের জনপদ চিরিরবন্দর। ‘‘প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগ ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ’’ এরই ধারাবাহিকতায় দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার ৪০ কিলোমিটার পাকা রাস্তা এখন সৌর বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হয়েছে। মানুষ যখন বিদ্যুতের লোডশেডিং-বিড়ম্বনায় অতিষ্ঠ তখন চিরিরবন্দর প্রত্যন্ত গ্রামীণ জনপদ সৌরবিদ্যুতের নিরবিচ্ছিন্ন আলোয় আলোকিত। প্রত্যন্ত  গ্রামের পরিবারগুলোর বিদ্যুতের চাহিদা মেটাচ্ছে সৌরবিদ্যুত। 

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানা গেছে, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের আওতায় ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের টিআর কাবিটা প্রকল্পের অধীন উপজেলার রানীরবন্দর হতে আমতলী ও বিভিন্ন পাকা রাস্তাসহ ৪০ কিলোমিটার কাচাপাকা রাস্তার ধার, বিভিন্ন মোড় ও রাস্তা সংলগ্ন হাট বাজারে সৌর বিদ্যুতের ১২০টি স্ট্রীট লাইট স্থাপন করা হয়েছে।

সুফলভোগী ও সমাজ সচেতন চিরিরবন্দর মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি মোঃ আজিম উদ্দীন সরকার গোলাপ বলেন, সৌর বিদ্যুৎ স্থাপন করায় সাধারণ মানুষের জীবনমানে উন্নয়নের গতি বৃদ্ধি পেয়েছে। বিদ্যুতের বিকল্প শক্তি হিসেবে বর্তমান সরকার মসজিদ, মন্দির ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সৌর বিদ্যুৎ প্যানেল স্থাপন করায় বিদ্যুতের উপর হতে চাপ ও বিদ্যুতের লোড শেডিং কমে গেছে।

চিরিরবন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ হারেসুল ইসলাম জানান, সোলার প্যানেল স্থাপনের ফলে রাস্তার বিভিন্ন মোড়ে মাদকসেবী ও চোরাকারবারীদের আনাগোনা অনেকাংশে কমে গেছে। তাছাড়া রাতে টহলরত পুলিশ স্বাচ্ছন্দে তাদের দায়িত্ব পালন করছে।

উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ আহসানুল হক মুকুল বলেন, সোলার প্যানেল স্থাপন করায় রাতে পথচারী নির্বিঘ্নে চলাচল করছে। তিনি আরও বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলীকে যদি এ আসন হতে পূণরায় নির্বাচিত করা হয় তাহলে তারই হাত ধরে বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকার দিনাজপুর-৪ (চিরিরবন্দর-খানসামা) আসনের এই দুই উপজেলাকে মডেল উপজেলায় রুপান্তরিত করবেন।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মোঃ মনোয়ারুল ইসলাম জানান, টিআর কাবিটা ছাড়াও ২০১৭-১৮ অর্থ বছর দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের আওতায় দুই কিস্তিতে ২ কোটি ৫১ লাখ ৭৩ হাজার টাকা ব্যয়ে মন্ত্রণালয়ের মনোনীত ইডকোল পিও কর্তৃক গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচীর অধীন ১২টি ইউনিয়নের প্রতিটি বাজার, হাসপাতাল, গুরুত্বপূর্ণ স্থান, বিভিন্ন রাস্তার মোড়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মন্দিরসহ বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সামনে মোট ৬’শটি সোলার স্ট্রীট লাইট স্থাপন করা হয়েছে। বিদ্যুতের উপর হতে চাপ কমাতে চলতি অর্থ বছরে উপজেলার আরও ৬’শটি পয়েন্টে সোলার স্ট্রীট লাইট স্থাপনের জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে। যা বাস্তবায়নের জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: গোলাম রব্বানী জানান, উপজেলার ১২ টি ইউনিয়নের যেখানে মানুষের চলাচল রয়েছে এ রকম বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন স্থানে প্রায় কয়েক শতাধিক পয়েন্টে স্টিলের বিশেষ ধরনের সোলার পোলে সৌর বিদ্যুতের এ সড়ক বাতি বসানো হয়েছে। বর্তমানে প্রকল্পটি আরো বর্ধিত করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

(এসএএস/এসপি/জুলাই ১৩, ২০১৮)