রায়পুুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে মৌলিক স্বাক্ষরতা অর্জনে সরকার বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিলেও মাঠ পর্যায়ে এর অনেকটাই রয়ে গেছে কাগজে-কলমে। উপানুষ্ঠানিক শিক্ষাব্যুরোর আওতায় পরিচালিত মৌলিক স্বাক্ষরতা প্রকল্প বাস্তবায়ন কালের মেয়াদ শেষ হলেও রায়পুরে এখনও শুরুই হয়নি এর কার্যক্রম। শুরুতেই প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব পাওয়া এনজিও গ্রামীণ উন্নয়ন সংস্থার (গ্রাউস) এর বিরুদ্ধে নান অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, উপানুষ্ঠানিক শিক্ষাব্যুরোর আওতায় দেশের ৬৪ জেলায় কার্যক্রমের অংশ হিসেবে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে রায়পুর উপজেলায় দায়িত্ব পান গ্রামীণ উন্নয়ন সংস্থা (গ্রাউস) নামে একটি বে-সরকারি সংগঠন। প্রকল্প বাস্তবায়নকাল ২০১৪ সালের জুন থেকে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত। নির্দেশনা রয়েছে জেলা উপানুষ্ঠানিক শিক্ষাব্যুরোর উপজেলা চেয়ারম্যানকে উপদেষ্টা ও নির্বাহী কর্মকর্তাকে সভাপতি করে ২১ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করবেন। সম্প্রতি কাগজে কলমে একটি কমিটি তৈরি করা হলেও কোনো মিটিং ছাড়াই চলছে গত ছয় মাস। এর মধ্যে প্রায় এক বছর আগে গ্রাউস শহরের নতুন বাজার এলাকায় একটি অফিস নিয়ে কার্যক্রম শুরু করে। এ সময় জনবল চেয়ে একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিলেও সেই থেকে এখন পর্যন্ত কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি এবং ওই থেকে রয়েছে অফিসটি বন্ধ।

রায়পুর উপজেলার চার-পাঁচজন ইউপি চেয়ারম্যান জানান, কাজ শুরু না হতেই যদি বাণিজ্য শুরু হয়, তাহলে প্রকল্প বাস্তবায়ন তো দূরের কথা সরকারের প্রকল্প কাগজে কলমে হবে বাস্তবে নয়। আমাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা ছাড়াই কমিটি করা হয়েছে। কমিটিতে নাম রয়েছে বলে শুনেছি। তবে এখন পর্যন্ত কোনো মিটিংয়ের খবর পাইনি আমরা।

রায়পুর শাখার গ্রামীণ উন্নয়ন সংস্থার (গ্রাউস) নির্বাহী পরিচালক রাশেদ আলম ভূঁইয়া বলেন, বিভিন্ন সমস্যার কারণে অফিসটি বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে কোনো কাজ থাকলে মাঝে-মধ্যে অফিস খোলা হয়। এছাড়াও এখনও প্রকল্পের পুরো কাজ শুরু হয়নি। তাই সব কার্যক্রম চালু করা যাচ্ছে না।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিল্পী রানী রায় বলেন, সাক্ষর-জ্ঞানহীন মানুষদের জন্য বিশেষ প্রকল্প প্রণয়ন ও সঠিকভাবে বাস্তবায়ন প্রয়োজন। কোনো কাজ শুরু হওয়ার আগে মিটিং করার প্রয়োজন। তারা কি করছে না করছে গত ছয় মাসেও আমাকে কিছুই জানায়নি। কোনো মিটিংও করেনি। পরে খোঁজ-খবর নিয়ে দেখি জেলা উপানুষ্ঠানিক শিক্ষাব্যুরোর সহকারী পরিচালক নোয়াখালীতে অবস্থান করায় কাজ না থাকায় তারা রায়পুরে আসছেন না।

এ ব্যাপারে জেলা উপানুষ্ঠানিক শিক্ষাব্যুরোর সহকারী পরিচালক বিদ্যুৎ সাহা জানান, প্রকল্পের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানো হয়েছে। আমরা অনেক কাজ এগিয়ে রেখেছি। কাজ না থাকায় কয়েক মাস মিটিং করা হয়নি। তবে দ্রুত মিটিং করা হবে। এছাড়াও এখানে কোনো অনিয়ম হয়নি বলে দাবি করেন তিনি।

(পিকেআর/এসপি/জুলাই ১৫, ২০১৮)