বাগেরহাট প্রতিনিধি : প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধ ও বোর্ডের প্রশ্নে পরীক্ষা দেয়ার অভ্যাস করতে যশোর বোর্ডের নিজস্ব প্রশ্নে (অনলাইন প্রশ্ন ব্যাংক) মাধ্যমিক স্তরের বিদ্যালয়ের সকল পরীক্ষা গ্রহন শরু হয়েছে। তবে এ পদ্ধতিকে শিক্ষকরা সাধুবাদ জানালেও, বিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত প্রযুক্তিগত সুযোগ সুবিধা না থাকায় বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে। অনলাইন থেকে প্রশ্নে ডাউনলোড ও ফটোকপি করতে বিলম্ব হওয়ায় নির্দিষ্ট সময়ে পরীক্ষা শুরু না হওয়ারও কথা জানালেন বিভিন্ন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা।

শনিবার সকালে বাগেরহাট সদর উপজেলার বিএসসি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় নির্দিষ্ট সময় পরীক্ষা শুরু হয়নি। সময়সূচি অনুযায়ী সকাল দশটায় পরীক্ষা শুরু হওয়ার থাকলেও শুরু হয়েছে সকাল দশটা ৪৫ মিনিটে।

এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক ঝিমি মন্ডল বলেন, বিদ্যুৎ না থাকায় যশোর বোর্ডের অনলাইন প্রশ্ন ব্যাংক থেকে প্রশ্ন ডাউনলোড করতে বিলম্ব হয়েছে। এছাড়া বিদ্যালয়ের নিজস্ব ফটোকপি মেশিন না থাকায় এ সমস্যা হয়েছে। প্রায় সাড়ে ৩‘শ প্রশ্ন ফটোকপি করতে অনেক সময় লাগে। সকল প্রকার প্রশাসনিক সক্ষমতা থাকলে আমরা সঠিক সময়ে পরীক্ষা নিতে পারব পাশাপাশি শিক্ষার গুনগত মান বৃদ্ধিপাবে।

শহরের শালতলা মোড়স্থ আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এসে দেখা যায় ১০ টা ৫৫ মিনিটে তাদের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা শুরু হয়েছে। এ বিদ্যালয়েও ১০ টায় পরীক্ষা নেয়ার কথা ছিল।

এ প্রসঙ্গে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হরিচাঁদ বিশ্বাস জানান, বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী সকাল ৮টা, সাড়ে ৮টা ও ৯টা থেকে প্রশ্ন ডাউনলোড শুরু করে সকল প্রশ্ন ডাউনলোড করতে প্রায় সাড়ে ৯টা বেজে গেছে। বাইরে ফটোকপির দোকান গুলো দেড়িতে খোলার কারণে প্রায় ৪‘শ কপি প্রশ্ন কপি করতে এ বিলম্ব হয়েছে। তবে বিদ্যালয়ের নিজস্ব সকল প্রকার ব্যবস্থাপনা থাকলে এধরণের বিলম্ব হত না।

মিতু দাস, আজম শেখ নামে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, বাড়ি থেকে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে বিদ্যালয়ে এসে নির্দিষ্ট সময়ে পরীক্ষা দিতে পারছি না। মানসিক ভাবে চিন্তিত থাকার ফলে আমাদের প্রস্তুতি অনুযায়ী ভাল পরীক্ষা দিতে পারি না।

এছাড়া বাগেরহাট জেলার পল্লী এলাকার মাধ্যমিক স্তরের বিদ্যালয়গুলোকে আরও বেশি বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। সেখানে বিদ্যুতের প্রকট সমস্যার সাথে আছে ইন্টারনেটের ধীর গতিসহ ফটোকপি ও প্রিন্টারের অপ্রতুলতা। এ কারণে কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশ্ন ডাউনলোড করে এবং ফটোকপি করে নিতে প্রায় আড়াই ঘন্টা সময় লাগে। তবে শিক্ষকরা প্রশ্ন ডাউনলোডের সময় এগিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছেন যশোর বোর্ড কর্তৃপক্ষের কাছে।

বাগেরহাট জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, জেলায় ৩‘শ ২০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসবের মধ্যে অনেক প্রতিষ্ঠান আছে যারা প্রত্যন্ত ও দুর্গম অঞ্চলে অবস্থিত তাদের নিজস্ব প্রযুক্তিগত সাপোর্ট প্রয়োজন রয়েছে। সরকারের এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে সকল প্রতিষ্ঠানকে প্রযুক্তগতভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ করা প্রয়োজন।

শনিবার বাগেরহাটের বিভিন্ন বিদ্যালয় পরিদর্শন শেষে যশোর বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাধব চন্দ্র রুদ্র বলেন, প্রশ্নপত্র ফাস রোধে যশোর বোর্ডের অনলাইন প্রশ্ন ব্যাংক থেকে প্রশ্ন সংগ্রহ করে সকল বিদ্যালয়ের সকল পরীক্ষা গ্রহন করতে বলা হয়েছে। সেই অনুযায়ী বোর্ডের অধীনে ২ হাজার ৭‘শ বিদ্যালয়ে যশোর বোর্ডের প্রশ্নে পরীক্ষা চলছে। তবে কিছু কিছু বিদ্যালয়ে সমস্যা থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে সরকারের পাশাপাশি শিক্ষক অভিভাবক ও বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সহায়তায় এ প্রযুক্তিগত সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।

(এসএকে/এসপি/জুলাই ১৫, ২০১৮)