পাখি নাকি প্রেমিক?

মেয়েটি মেঘ হতে চাইতেই অামি বৃষ্টি হলাম
তারপর মেয়েটি বৃষ্টির কথা মুখে অানতে না অানতেই অামি চোখের শুভ্রকালো কোটরে অার বুকের ঠিক ভেতরের মাঝখানটাতে গোপনে লুকোনো সজ্জিত অপ্রকাশ্য অশ্রু দিয়ে মেয়েটির বুকে অনন্ত অাকাশ বুনে দিলাম
তখন থেকেই অামি মেয়েটির বুকের অাকাশের পাখি হয়ে গেছি!
কিন্তু অামার ডানা নেই, উড়বার সাধ্য নেই, এখন অার মেয়েটির অাকাশ থেকে ফিরবার কোনো সুযোগও নেই
ইসস, ডানা ছাড়া কি অার পাখি হওয়া যায়?
তবে অামি কেমন পাখি!
নিজেকে তখন অপাখি ভাবতে ভাবতে মেয়েটি এবার যখন তার বুকের এক কোণে অদৃশ্য ম্যাজিক দগদগে ঘা দেখিয়ে দিলো- অতঃপর তখন বুঝলাম তবে অামি পাখি নয়, অামি প্রেমিক হয়ে গেছি!

বৃক্ষমানবী

অামি বৃক্ষের মতো ঠায় দাঁড়িয়ে ছিলাম।
তুমি অাসবে বলে অামি মানুষ থেকে বৃক্ষ হয়েছি; তোমাকে দেখবার সুতীক্ষ্ণ সুতীব্র ব্যথায় অামার চোখ অন্ধ হয়েছে! তবু কী ভীষণ কী দারুণ নিদারুণ অামি তোমাকে দেখি- তোমার ছায়া মাড়িয়ে কোথাও যেতে পারব না বলেই তো অামি বৃক্ষ হয়ে স্থির হয়ে সোজা মাথা তুলে কী সাংঘাতিক দাঁড়িয়ে অাছি!
দেখো অামার ডালপালা হয়েছে; অার অামার প্রেমপূজারী শেকড় দুঃখবতী মৃত্তিকাকে ফুঁড়ে পৌঁছে গেছে ঠিক বেদনার কাছে!
তুমি সেদিন যেন কার হাত ছুঁলে, ছায়া পেতে দাঁড়ালে অামার তলে; কিন্তু তুমি জানলেও না তোমার প্রত্যাখ্যাত প্রেমিক অাজ বৃক্ষ হয়েছে- তোমার স্পর্শ পেতে সে কীরকম চিরমৃন্ময়ী বৃক্ষ হয়ে উঠতে পারে!

তুমিও অাজ মানুষ নও, বৃক্ষ হয়ে গেছো! দেখো, তোমারও ডালপালা গজিয়েছে, তোমার শেকড়ও পৌঁছে গেছে অামার প্রত্যাখ্যাত হৃদপৃষ্ঠের সুগভীর অভ্যন্তরে! সময়ের ব্যবধানে অাজ অামরা উভয়েই বৃক্ষ হয়ে উঠেছি!

সেই থেকেই শতাব্দীব্যাপী তুমি বৃক্ষবতী এক মৃন্ময়ী বৃক্ষমানবী!